Dhokra: ধোকড়ার জিনিস বানিয়ে সংসারও চালান গ্রামের মহিলারা, তবু প্রচার থেকে এখনও বহু দূরে
South Dinajpur: একটি ধোকড়ার ম্যাট তৈরি করতে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা খরচ হয়। বাজারে বিক্রি হয় ৫০০ টাকার বেশি দামে।
দক্ষিণ দিনাজপুর: অনেকে নামটা শুনলেই গুলিয়ে ফেলেন। রীতিমতো তর্ক শুরু হয়ে যায়, ‘ওটা ধোকড়া নয়, ডোকরা’। আসলে দক্ষিণ দিনাজপুরের (South Dinajpur) ধোকড়া শিল্প (Dhokra) এতটাই প্রচার থেকে দূরে, মানুষ সেভাবে এর সঙ্গে পরিচিতই হতে পারেননি। জানেনই না, বাংলার সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে বংশীহারির ধোকড়া শিল্পীদেরও পরিশ্রমগাঁথা। এই ধোকড়া শিল্পের উপর নির্ভর করে সংসার চলে বহু পরিবারের। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারি ব্লকের করখাঁ গ্রাম। সেখানে ঘরকে ঘর চলে ধোকড়ার কাজ। ধোকড়া মূলত হাতে বোনা পাটের চাটাই বা জুট ম্য়াট। তবে সাধারণ পাটের জিনিস যেমন খসখসে হয়, তেমন নয়। এই ধোকড়া দিয়ে এখন শিল্পীরা ব্যাগ বা ছোট ছোট জিনিসও বানান। মূলত বাড়ির মেয়ে-বউরা ধোকড়ার নানাবিধ জিনিস তৈরি করেন। অনেকে এই আয়ে সংসারও চালান। এই ধোকড়া তাঁদের স্বাবলম্বী হওয়ার পাঠও পড়ায়। ধোকড়া শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনও।
ধোকড়ার ইতিহাস বহু প্রাচীন। অবিভক্ত বাংলায় দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারি ব্লকের রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষজন পাটের তন্তু দিয়ে ধোকড়া বুনতেন। নানা প্রাকৃতিক রঙে সেই পাট ছুপিয়ে বুনন। বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বিভিন্ন রংয়ের ব্যবহার করে প্রাচীন পদ্ধতিতে পাটের সুতোর ব্যবহারে বিশেষ উপায়ে তৈরি করা হয় এই ধোকড়া।
একটি ধোকড়ার ম্যাট তৈরি করতে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা খরচ হয়। বাজারে বিক্রি হয় ৫০০ টাকার বেশি দামে। এখন কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় হস্তশিল্প মেলা হয়। বিভিন্ন জেলার শিল্পীরা আসেন। দক্ষিণ দিনাজপুরের শিল্পীরাও আসেন। কারও কারও কাছে ধোকড়ার পসরা থাকে। শুধু কলকাতা নয়, জেলাতেও যান তাঁরা। ধোকড়া শিল্পী জবা সরকার বলেন “বিয়ে হয়ে এখানে আসি। তারপর থেকেই বানাচ্ছি। জেলার বিভিন্ন হাটে বিক্রি হয় এই ধোকড়া। সঙ্গে আবার বইমেলা, কৃষিমেলা, হস্তশিল্প মেলায় যাই। ব্লক থেকে ডাকে।” শুধু এ রাজ্যই নয়। সীমানা পার করে অন্য রাজ্যেও যায় দিনাজপুরের ধোকড়া।