বালুরঘাট: ভোট পরবর্তী হিংসার কারণে ঘরছাড়া বিজেপি কর্মী সমর্থকরা ছাড়ছেন বালুরঘাটের বিজেপির জেলা কার্যালয়৷ ধীরে ধীরে ঘরে ফেরা শুরু করেছেন তাঁরা। ভোটের পর একটা সময় বালুরঘাটে বিজেপির জেলার কার্যালয়ে একশোর বেশি কর্মী সমর্থক আশ্রয় নিয়েছিলেন৷ বর্তমানে হাতে গোনা কয়েকজন রয়েছেন। ভোট পরবর্তী পর্যায়েও বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী জেলা দফতরে মাথা গুঁজেছিলেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতে ভোট পরবর্তী হিংসার কারণে প্রাণ বাঁচাতে বিজেপি জেলা কার্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছিল বিজেপি নেতা কর্মীরা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় শতাধিক বিজেপি কর্মী সমর্থক ও নেতৃত্ব বালুরঘাটে জেলা বিজেপি কার্যালয়ে ছিলেন। জেলা কার্যালয়ে তাদের থাকা ও খাওয়ার সব রকম ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। আর কত দিন! পেটে কিছু দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে তো! আমন ধান চাষের সময় এখন। জেলার বেশিরভাগই কৃষিজীবী। এই সময়টা তাঁদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাঁদের কথায় বুকে ভয় চেপে রেখেই বাড়ি ফিরছেন তাঁরা।
সোমবার বিকাল পর্যন্ত প্রায় ২০-২৫ জন কর্মী ছিলেন জেলা কার্যালয়ে। এর মধ্যে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ২০ জনের বেশি চলে গিয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা গেল ৩ জন রয়েছেন জেলা কার্যালয়ে।
যে সমস্ত মানুষরা এলাকা ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাঁরা মূলত কৃষিকাজ ও দিনমজুরি করে সংসার চালান। কতদিন আর এইভাবে দলীয় কার্যালয়ে আশ্রয়ী থাকবেন। বাড়িতে গবাদি পশু রয়েছে, কারওবা রয়েছে জমি। আমন ধান রোপণের সময়। পাড়া-প্রতিবেশীর ওপর ভরসা করেই সেগুলো ছেড়ে এসেছিলেন। কিন্তু আর কতদিন এইভাবে বাইরে থাকবেন।
মনে সাহস নিয়েই মনে সাহস নিয়ে নিরুপায় হয়ে বাড়ি ফিরছেন ঘরছাড়া বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা। জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, “ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় ভয়-ভীতি এখনও কমেনি। জেলা বিজেপি কার্যালয়ে অনেকেই ছিলেন এবং তাঁদের থাকা খাওয়া সম্পূর্ণ ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু যারা এত দিন ধরে বাইরে রয়েছেন, তাঁরা মূলত কৃষি কাজ করেন। তাঁদের সংসারও এসবের ওপরেই নির্ভর করে। তাই মনে সাহস ও বিশ্বাস নিয়ে ফিরছেন বাড়িতে।” তবে কর্মীদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে দল।
অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে জেলা তৃণমূলের-সহ সভাপতি সুভাষ চাকি বলেন, “বিজেপির কেউ ঘর ছাড়া ছিল না। বিজেপি সম্পূর্ণ নাটক করছে। কিছু কর্মী এসেছিলেন দলীয় বিষয়ে কথা বলার জন্য। আমরা তৃণমূল পক্ষ থেকে সকলকে জানাতে চাই কেউ যদি কোন বিভ্রান্ত বা সমস্যার মুখে পড়েন তাহলে আমাদের সাহায্য চাইলে বা যোগাযোগ করলে আমরা তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াব। বাড়িতেই শান্তিপূর্ণভাবে থাকার ব্যবস্থা করব।”