বংশীহারী: থানার শৌচাগারে ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা গৃহবধূর।বিষয়টি নজরে আসতেই ওই গৃহবধূকে চিকিৎসার জন্য তড়িঘড়ি নিয়ে আসা হল গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে৷ সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন সোনিয়া খাতুন(পরিবর্তিত নাম) নামে বছর উনিশের ওই গৃহবধূ। শনিবার সকালে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী থানায়। এদিকে বিষয়টি জানতে পেরেই এদিন বিকেলে থানায় যান জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। বর্তমানে ওই গৃহবধূর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেই পুলিশ সূত্রে খবর। এদিকে এনিয়ে গৃহবধূর পরিবারের তরফ থেকে পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে বলেই জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৯ বছরের ওই গৃহবধূর বাপের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার গঙ্গারামপুর থানার সর্বমঙ্গলা এলাকায়। গত দু’মাস আগে কুশমণ্ডির মহিপাল এলাকায় তাঞ্জুরুল হোসেনের সঙ্গে সোনিয়ার বিয়ে হয়। অভিযোগ, ওই গৃহবধূর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল এক যুবকের সঙ্গে। এ দিকে বিষয়টি জানতে পেরেই বিগত বেশকিছু দিন ধরেই ওই দম্পতির মধ্যে নানা রকমের অশান্তি ঝামেলা চলছিল। গতকাল গভীর রাতেও এনিয়ে অশান্তি শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে প্রেমিকের সাইকেল চেপে পালানোর চেষ্ঠা করে ওই গৃহবধূ। পথে বংশীহারী থানা এলাকায় প্রহরারত সিভিক ভলান্টিয়ার্স তাঁদের ডাকলে সাইকেল ও ওই গৃহবধূকে ফেলেই পালিয়ে যায় প্রেমিক।
এনিয়ে কর্তব্যরত ওই সিভিক কর্মীর সন্দেহ হয়। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে চলে আসে স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পুলিশ গিয়ে গৃহবধূকে বংশীহারী থানায় উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এদিকে থানা থাকাকালীন ওই গৃহবধূর শৌচালয়ে যাবে বলে কর্তব্যরত এক মহিলা পুলিশকে জানায়। এরপর ওই গৃহবধূকে থানার ভেতরের শৌচালয়ে নিয়ে যান। এদিকে শৌচাগারে গিয়ে বেরোতে দেরি হওয়ায় সন্দেহ হয় মহিলা পুলিশের। ডাকাডাকি করলেও কোনও সাড়া না মেলায় বাইরে থেকে জোর করে দরজা খুলতেই দেখা যায় গলায় ওড়না জড়ানো অবস্থায় ঝুলছে ওই গৃহবধূ।
বিষয়টি নজরে আসতেই ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে তাকে চিকিৎসার জন্য গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক রয়েছে বলেই খবর৷ খবর পেয়ে এদিন বিকেলে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বংশীহারী থানায় যান এবং পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখেন।
এবিষয়ে গৃহবধূর শ্বশুর কুরবান আলি জানিয়েছেন, গতকাল ভোর রাতে তার পুত্রবধূ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় প্রেমিকের সঙ্গে। বিষয়টি নজরে আসে বংশীহারী থানা এলাকার কর্তব্যরত এক সিভিকের৷ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতেই সাইকেল ফেলে পালিয়ে যায় পুত্রবধূর প্রেমিক। অরে পুলিশ থানায় নিয়ে যায় পুত্রবধূকে। ভোরের দিকে থানার ভেতরের শৌচালয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে সে। বিষয়টি নজরে আসতে ববংশীহারী থানার পুলিশ যথেষ্ট তৎপরতার সঙ্গে পুলিশ তাকে চিকিৎসার জন্য গঙ্গারামপুর হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ সেখানেই বর্তমানে তার চিকিৎসা চলছে।
অন্যদিকে এবিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে বংশীহারী থানায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘আজ থানায় একটি ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টির খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে সিসিটিভির ফুটেজ সহ অন্যান্য বিষয়।’