শিলিগুড়ি: শিলিগুড়িতে আবারও অবস্থান বিক্ষোভে বাম নেতাকর্মীরা। পৌরভোটের আগে বস্তিবাসীদের নিয়ে আন্দোলনে সামিল হন তাঁরা। এই বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন অশোক ভট্টাচার্য। তবে পৌরসভায় ঢোকার আগেই সেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। রাস্তায় বসেই অবস্থান-বিক্ষোভ করতে থাকেন বামনেতারা।
কী কারণে বিক্ষোভ?
পৌরসভা ভোটের আগে বস্তির বাসিন্দাদের পাট্টার দাবি তুলছে বাম নেতৃত্ব। এখানেই শেষ নয়, বারংবার বস্তিবাসীদের উচ্ছেদ করার প্রতিবাদেও আজকের মিছিলের ডাক দেওয়া হয়।
দুপুর বারোটা নাগাদ মিছিল ধীরে-ধীরে পৌরনিগমের দিকে এগোতে শুরু করে। কিন্তু কাছে আসতেই ব্যারিকেড করে আন্দোলনকারীদের আটকে দেয় পুলিশ। এগোতে না পেরে ক্ষুব্ধ হয়ে সিপিআই(এম) নেতা অশোক ভট্টাচার্য রাস্তায় বসে পড়েন। পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে রাস্তায় বসে স্লোগান দিতে শুরু করেন মিছিলে উপস্থিত বাম কর্মী সমর্থকরা।
অশোক ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, পাট্টা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু এখনো বহু মানুষ পাট্টা পাননি। বেআইনি বস্তি উচ্ছেদের নামে জমি ফাঁকা করে তা প্রোমোটারদের হাতে তুলে দেওয়ার চক্রান্ত করা হচ্ছে। শিলিগুড়ি শহরে একশোরও বেশী বস্তি রয়েছে। সেখানে বাস করেন শহরের এক তৃতীয়াংশ মানুষ। কিন্তু সেই বস্তির বাসিন্দাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে এগোনো মাত্রই এই মিছিল পুলিশ আটকে দিয়েছে পুলিশ। তাই এর প্রতিবাদে ধরনা অবস্থান চলছে। অবিলম্বে বস্তিবাসীদের পাট্টা না দেওয়া হলে আন্দোলন আরো তীব্র করে গড়ে তোলা হবে।
প্রশাসক বোর্ডের সদস্য রঞ্জন সরকার জানিয়েছেন যে তাঁরা ইতিমধ্যেই তাঁদের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে। বিষয়টা উচ্ছেদ নয়, নদী বাঁচাতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।
প্রসঙ্গত, সিপিএমের দার্জিলিং জেলা কমিটি থেকে সরলেন অশোক ভট্টাচার্য। এবার থেকে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্যপদে থাকছেন তিনি। বাম আমলে রাজ্যের মন্ত্রী এবং শিলিগুড়ির প্রাক্তন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য আগেই জানিয়েছিলেন এবার আর কোনও কমিটিতে থাকতে চান না তিনি। দলের সাধারণ সদস্য হিসাবেই থেকে যেতে চান। তবে দল তাঁকে আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে রেখেছে।
তা হলে কি বর্ষীয়ান বাম নেতার ইচ্ছাকেই মান্যতা দিয়ে দলের এই সিদ্ধান্ত? রাজনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন, ইচ্ছাকে মান্যতা দিতে এই সিদ্ধান্ত বললে পুরোপুরি ঠিক হবে না। কারণ, সিপিআইএম ইতিমধ্যেই স্থির করেছে, জেলা কমিটিতে ৭০ বছর বয়সের বেশি কাউকে রাখবে না। বয়সের একটা সীমা এ ক্ষেত্রে তারা বেঁধে দিয়েছে। এরিয়া কমিটির ক্ষেত্রে ৬৫, জেলা কমিটির ক্ষেত্রে ৭০ বছর এবং রাজ্য কমিটির ক্ষেত্রে ৭২ বছর। সেই অনুযায়ী এবার বাদ পড়ার কথা অশোক ভট্টাচার্যের নাম। তবে তাঁকে বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য হিসাবে রাখা হয়েছে জেলা কমিটিতে।