Binay Tamang on BJP: ‘গোর্খাদের মৃত্যুতেও শোকপ্রকাশ করেনি, কেবল পাহাড়ে এসে ভোট নিয়েছে বিজেপি’
TMC: বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ বিনয় তামাংয়ের। চলতি মাসেই তৃণমূল শিবিরে যোগ দেন বিনয়। একই সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিলেন রোহিত শর্মাও। তিনি কার্শিয়াংয়ের প্রাক্তন বিধায়ক।
দার্জিলিঙ: পাকদণ্ডী রাজনীতিতে ক্রমেই বদলাচ্ছে সমীকরণ। সদ্যই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন পাহাড়-নেতা বিনয় তামাং। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে পৃথক পৃথক দল গড়েছিলেন বিনয়, অনীলরা। মোর্চার দায়ভার নিয়েছিলেন একা বিমল গুরুঙ্গ। সেই সমীকরণ পুরোপুরি ঘুরে গেল যখন বিনয় তামাং যোগ দিলেন তৃণমূলে। আর ঘাসফুলে যোগদানের পরেই বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন বিনয় (Binay Tamang)।
পাহাড়-নেতা বিনয় তৃণমূলে যোগদানের পরেই গেরুয়া শিবিরের (BJP) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, “গোর্খাদের কোনও মৃত্যুসংবাদে কোনও শোকপ্রকাশ পর্যন্ত করেনি। পাহাড়ের কোনও উন্নয়ন হয়নি। পাহাড়ে এসে কেবল ভোট নিয়েছে বিজেপি। নানারকম প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, কিন্তু কোনও কাজ করেনি।”
পাহাড়ে রাজনীতির সমীকরণ বিভিন্নসময়ে বদলায়। বদলিয়েছে। সেই পরিবর্তন দেখা গিয়েছে বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই। নির্বাচনের ফলপ্রকাশের অনতিপরেই মোর্চার ভার বিমল গুরুঙ্গের হাতে তুলে দিয়ে শিবির ত্যাগ করেন বিনয়। কিছুদিন পরে তাঁদের একত্রে বৈঠক করতেও ফের দেখা যায়। এরপরেই পৃথক দল গড়ার সিদ্ধান্ত নেন বিনয়ের সঙ্গী অনীত থাপা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে অনীতের নতুন দল আত্মপ্রকাশও করে। বিনয়ও একটি নতুন দল গড়ার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন।
এখানেই শেষ নয়, এরপর মুখ্য়মন্ত্রীর কার্শিয়াঙের প্রশাসনিক বৈঠকে দেখা যায় উপস্থিত রয়েছেন অনীত থাপা। কিন্তু বিনয় বা বিমলকে দেখা যায়নি। খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো ঘোষণা করেন পাহাড়ে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরোধিতায় যাবে না শাসক শিবির। বরং, পাহাড়বন্ধুদের নিয়েই কাজ করতে আগ্রহী ঘাসফুল।
এরপরেই চলতি মাসেই তৃণমূল শিবিরে যোগ দেন বিনয়। একই সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিলেন রোহিত শর্মাও। তিনি কার্শিয়াংয়ের প্রাক্তন বিধায়ক। জিটিএ নির্বাচনের আগেই বিনয় তামাংয়ের তৃণমূলে যোগদান নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।
শাসকদলে যোগ দিয়েই বিনয় মন্তব্য করেন, “গত ১৫ জুলাই আমি আমার দল থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম। পদও ছেড়েছিলাম। এরপর আজ ১৬৪ দিন হয়ে গেল। এই সময়ের মধ্যে আমি কিন্তু অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হইনি। যোগাযোগও করিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ ছিলই। উনি একজন ডায়ানামিক লিডার। এক সময় স্থানীয় পার্টি করতাম। এখন জাতীয় দল করে মানুষের সেবা করতে চাই। আমরা চাই ২০২৪ সালে জাতীয় রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখতে। সর্বভারতীয় তৃণমূলে থেকেই আমরা পাহাড়বাসী, গোটা উত্তরবঙ্গের মানুষের সেবা করতে চাই।”
গোর্খাল্যান্ড একটি সাংবিধানিক ইস্যু বলে উল্লেখ করেন বিনয়। তাঁর দাবি, “ভারতীয় জনতা পার্টি এই ইস্যুকে ললিপপ করে তিনবার সাংসদ জিতিয়ে নিয়ে গেল। এই ইস্যুকে নিয়ে আমাদের ইমোশনালি ব্ল্যাকমেল করে গিয়েছে। এটা রাজ্যের বিষয় না। আলাদা রাজ্যের বিষয় নয়। আমরা চাই সকলে মিলেমিশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে পাহাড়ের উন্নয়ন করতে। শিক্ষা হোক বা স্বাস্থ্য বা পর্যটন। যেখানেই আমরা কাজ করতে পারি, সেখানে কাজ করব। এই জন্য সর্বভারতীয় দল তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।”
কিন্তু বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয় তামাংয়ের সম্পর্কের সমীকরণ কী হবে এ বার? এ প্রশ্নের জবাবে হাসি মুখে বিনয় তামাং বলেন, “বিমল গুরুং আগে কলকাতায় এসেছিলেন। কথাবার্তাও হয়েছে। আমরাও এরপর সাক্ষাৎ করেছি। আমরা মিলেমিশেই কাজ করব। কলকাতা থেকে যা নির্দেশ দেওয়া হবে সে কাজই আমরা করব।”
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘প্রহসনের’ লোকায়ুক্ত বৈঠক ‘বয়কট’ শুভেন্দুর, উপস্থিত থাকবেন মমতা