Sikkim Railway: ট্রেনে চড়ে সোজা সিকিম এখনই নয়? ভিলেন জাতীয় সড়ক? রাজ্যকে আর দায়িত্ব দিতে ‘নারাজ’ কেন্দ্র
Sikkim Railway: ফের পিছিয়ে গেল সেভক-রংপো রেলপথের প্রকল্প শেষের সময়। পাহাড়বাসীর কাছে স্বপ্নের রেল প্রকল্পে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কে জানেন? ভিলেন হল সিকিমের লাইফ লাইন দশ নম্বর জাতীয় সড়ক। কিন্তু আসল জটিলতা কোথায়?
আবহাওয়া দফতর বলছে গুটি গুটি পায়ে শীত ঢুকছে বঙ্গে। দ্রুত বদলাচ্ছে হাওয়া। আর শীতকাল মানেই তো কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে বাঙালি চলল পাহাড় ঘুরতে। পড়শি রাজ্য সিকিম বরাবরই আম বাঙালির পছন্দের ডেস্টিনেশন। সেই ভ্রমণপিপাসুদের জন্য খুশির খবর দিয়েছিল ভারতীয় রেল। সেবক-রংপো প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের রেল মানচিত্রে জুড়তে চলেছে সিকিম। কিন্তু সেই প্রকল্প ঘিরে আশঙ্কার মেঘ। তা হলে কবে ট্রেনে চড়ে সিকিম যাওয়ার সুযোগ হবে আমার, আপনার ? ইতিমধ্যে প্রকল্প ঘিরে তৈরি হয়েছে সিঁদুরে মেঘ
কী ভাবে শেষ হবে প্রকল্পের কাজ?
ফের পিছিয়ে গেল সেভক-রংপো রেলপথের প্রকল্প শেষের সময়। পাহাড়বাসীর কাছে স্বপ্নের রেল প্রকল্পে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে কে জানেন? ভিলেন হল সিকিমের লাইফ লাইন দশ নম্বর জাতীয় সড়ক। চলতি বছর বর্ষায় দশ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ধস নামে। এখন বর্ষা তো বিদায় নিয়েছে। কিন্তু এখন কী অবস্থা জাতীয় সড়কের? দশ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে রেল প্রকল্পের সমস্ত রসদ নিয়ে যেতে হচ্ছে। সেখানে রাস্তা যদি ঠিক না থাকে, তা হলে কী ভাবে শেষ হবে প্রকল্পের কাজ?
সেবক-রংপো রেলপথ চালুর প্রথম টার্গেট ছিল ২০২৩ সাল। পাহাড়ের গুহাপথে কাজ করতে গিয়ে নানা সমস্যার তৈরি হচ্ছিল। যদিও সেই সব সমস্যা কাটিয়ে এগোতে থাকে প্রকল্পের কাজ। ঠিক ছিল ২০২৫ সালের ১৫ অগাস্ট প্রকল্প উদ্বোধন হবে। সেই সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিয়েছে ১০ নং জাতীয় সড়কের ধস বিপর্যয়। এরই মধ্যে এসে গিয়েছে বড় খবর। বারবার ধসের জেরে প্রকল্প এলাকায় রসদ পৌছাতে সমস্যার জেরে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করা যাবে না বলে জানিয়ে দেল ইরকন।
সেবক-রংপো রেলপথ চালু হয়ে গেলে তখন আর পর্যটকদের এনজেপি থেকে গাড়ি চেপে সিকিম যেতে হবে না। ট্রেনেই সরাসরি রংপো হয়ে সিকিম যেতে পারবেন আপনি। এই পথে ট্রেন চালু হলে চিন সীমান্তে সেনাকর্মীদের জন্য দ্রুত রসদ পৌঁছে দেওয়াও সম্ভব হবে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হলে দ্বিতীয় পর্যায়ে রংপো থেকে নাথুলা পর্যন্ত রেলপথ তৈরির কাজে হাত দেবে ভারতীয় রেল। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে জাতীয় সড়ক।
সমস্যা কোথায়?
উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুহাপথ খুঁড়ে কাজ এগোচ্ছিল ঠিকই। কিন্তু মাস ছয়েক ধরে কাজ সে ভাবে না এগনোর জন্য জাতীয় সড়কের পরিস্থিতিকেই দুষছেন ইরকনের কর্তারা। ইরকণের প্রজেক্ট ডিরেক্টর মহেন্দ্র সিং জানান, রাস্তা খুললেও এখনও ভারী যান চলাচলে সমস্যা রয়েছে। যাত্রাপথে বহু এলাকায় এখনও ধসের জেরে রাস্তা খুব ছোট। সেখানে সিমেন্ট, লোহার সামগ্রী, রেলের লাইন বোঝাই বড় গাড়ি ওই পথে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। এই সব সামগ্রী ঘুরপথে লাভা হয়ে নিয়ে যেতে প্রায় একশো কিলোমিটার বেশি ঘুরতে হচ্ছে। বাড়ছে আর্থিক বোঝা। নষ্ট হচ্ছে সময়।
ইরকনের কর্তাও স্বীকার করে নেন বাধ্য হয়েই দশ নম্বর জাতীয় সড়কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহণ মন্ত্রকের হাতে তুলে দিয়েছে কেন্দ্র। বলছেন, আমরা চাইছি সিকিমের লাইফ লাইন যথাযথ সংস্কার করে খোলা রাখা হোক। বর্ষার সময়ে রাস্তায় ধস নামার আগে বাকি মরসুমে রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকভাবে হোক। বড় গাড়ি চলাচলে বাধা বিপত্তি এড়াতে বিশেষ ভাবে এই রাস্তায় নজর দেওয়া হোক। তা সম্ভব না হলে প্রকল্পের কাজ পিছিয়ে যেতে বাধ্য। রেলের লাইন ইত্যাদি নিয়ে যেতে গিয়ে সমস্যা হচ্ছে। প্রতিদিন কাজ করতে দু’হাজার বস্তা সিমেন্ট দরকার। বড় ট্রাক চলাচলে সমস্যা হলে রসদ নিয়ে যেতে খরচ ও সময় দুটোই বাড়ছে।
কী বলছে বিজেপি?
রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর। তবে দ্রুত কাজ নিয়ে আশাবাদী বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বলছেন, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এটা। জাতীয় সড়ক এই মরসুমে টানা বন্ধ ছিল। নানা সমস্যা হয়েছে। এতদিন এর রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব রাজ্যের হাতে ছিল। সম্প্রতি কেন্দ্র এই দায়িত্বভার কেন্দ্রীয় পূর্ত ও সড়ক উন্নয়ন মন্ত্রকের হাতে তুলে দিয়েছে। এর জেরে এবার দ্রুত সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ হবে। রসদ পৌছতে সমস্যা হবে না। আশা করছি এই প্রকল্পের কাজ এগোতে নতুন করে সমস্যা হবে না।
হতাশ হতে না করছে ইরকনও। রাস্তার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ হলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৯০ শতাংশ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে যাবে এবং কিছুটা পথে রেল চলাচল শুরু করা যাবে। ২০২৬-এর মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। ফলে এখনও বছর দুয়েক অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই ভ্রমণপিপাসু বাঙালির।
আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)