দার্জিলিং: জিটিএ নির্বাচনের বিরোধীতায় অনশনে বসেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রধান বিমল গুরুং। তবে সঙ্গ দেয়নি শরীর। পাঁচদিনের টানা অনশনের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন মোর্চা প্রধান। পরে শারীরিক দুর্বলতা বাড়তে শুরু করায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর সোমবার বিমল গুরুংকে হাসপাতালে দেখতে যান দার্জিলিং-এর বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দার্জিলিং-এর বিধায়ক নিরজ জিম্বা, কার্সিয়াং-এর বিধায়ক বিপি বাজগাই, আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা।
এ দিন, হাসপাতালে গিয়ে বিমল গুরুংকে আশ্বস্ত করেন রাজু। জানান, জিটিয়ে নির্বাচনের বিরোধিতায় তাঁর লড়াই এমনি-এমনি ব্যর্থ হবে না। হাসপাতাল থেকে বেরোনোর পর একসঙ্গে মিলে এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।
বস্তুত, জিটিএ নির্বাচনের বিরোধীতায় আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন বিমল গুরুং। পাহাড় সমস্যায় রাজনৈতিক সমাধান না করেই জিটিয়ে ভোট করানো হচ্ছে। সেই নিয়েই সরব হন বিমল। কয়েকদিন আগে পাহাড়ে গিয়ে ভোট করানোর কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মমতাকে চিঠি দিয়ে নির্বাচন নিয়ে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন গুরুং। সেই সময় যে-যে চুক্তির কথা পাহাড় চুক্তির সময় দেওয়া হয়েছিল তা মানলেই রাজনৈতিক সমাধান সম্ভব। কিন্তু সেই সব না মেনে জিটিএ ভোট করানো হলে দার্জিলিং মোড়ে আমরণ অনশনে বসার কথাও জানিয়েছিলেন গুরুং। সেই মতোই অনশন শুরু করেন তিনি।
তবে, ১০৩ ঘণ্টার লাগাতার অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েন মোর্চা প্রধান। তাঁকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। শনিবারই রাজ্যের তরফে বুলুচিক বরাই বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বিমল গুরুংকে অনুরোধ জানান, অনশন প্রত্যাহারের জন্য। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। রবিবারও অনশনমঞ্চেই দেখা যায় গুরুংকে। এদিকে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের চিকিৎসকরাও জানিয়েছিলেন, এই টানা অনশনের ধকলে তিনি দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
গোটা ঘটনার পর বিমল গুরুংয়ের অনশনে ইতি টানা হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠছে, পাহাড়ে কি তবে এবার নতুন কোনও সমীকরণের হাওয়া বইতে দেখা যাবে? রাজু বিস্তা, জন বার্লার সাক্ষাৎ সে প্রশ্নই উস্কে দিচ্ছে।