Primary Job Cancel: যত কাণ্ড ২০১৪ টেটে! অ্যাপ্টিটিউড-ভাইভায় নম্বরের বন্যা সংসদের চেয়ারম্যানের মেয়ে-জামাইয়ের ঝুলিতে

Primary Job Cancel: যত কাণ্ড ২০১৪ টেটে! অ্যাপ্টিটিউড-ভাইভায় নম্বরের বন্যা সংসদের চেয়ারম্যানের মেয়ে-জামাইয়ের ঝুলিতে

Prasenjit Chowdhury

| Edited By: Soumya Saha

Updated on: May 17, 2023 | 5:37 PM

TET 2014: আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, ২০১৬ সালের এই প্যানেলে এমন কিছু নাম রয়েছে, যাঁদের অ্যাকাডেমিক স্কোর অনেকটাই কম। কিন্তু অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ও ভাইভা মিলিয়ে নম্বর কারও ৯, কারও ৯.৫, কারও আবার একেবারে দশে দশ।

শিলিগুড়ি: ২০১৪ সালের টেটের (2014 TET) নিয়োগ হয়েছিল ২০১৬ সালে। আর ২০১৬ সালের প্রাথমিকের নিয়োগের সেই প্যানেলেই (Primary Recruitment Panel) বিস্তর গরমিলের অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, প্যানেল থেকে প্রায় ৩২ হাজার জনের চাকরি বাতিল হয়েছে। এদিকে আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে, ২০১৬ সালের এই প্যানেলে এমন কিছু নাম রয়েছে, যাঁদের অ্যাকাডেমিক স্কোর অনেকটাই কম। কিন্তু অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ও ভাইভা মিলিয়ে নম্বর কারও ৯, কারও ৯.৫, কারও আবার একেবারে দশে দশ। কারও ক্ষেত্রে এমন হতেই পারে যে অ্যাকাডেমিক স্কোর কম, কিন্তু তিনি অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ও ভাইভা দুর্দান্ত দিয়েছেন। ব্যতিক্রমী এমন ঘটনা ঘটতেই পারে, কিন্তু যদি তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হয়? যদি দেখা যায় অধিকাংশ যাঁদের অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ও ভাইভায় দুর্দান্ত নম্বর অথচ অ্যাকাডেমিক স্কোর অনেকটাই কম? তাহলে কি আর সেটি ব্যতিক্রমী বলা যায়? এমনই ট্রেন্ড দেখা গিয়েছে ২০১৬ সালের প্যানেলে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি এখানে প্রভাবশালী তত্ত্ব? এই ট্রেন্ডের পিছনে কি প্রভাব খাটানোর কোনও ঘটনা রয়েছে? কিংবা কোনও আর্থিক লেনদেনের বিষয় নেই তো এখানেও?

টিভি নাইন বাংলার অন্তর্তদন্তে সেই প্রশ্ন আরও উস্কে দিচ্ছে শিলিগুড়ির এক ঘটনা। যেমন দীপান্বিতা রায়ের নম্বর ডিভিশন বলছে, তিনি অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট আর ভাইভা মিলিয়ে পেয়েছেন দশে দশ। আবার সঞ্জু দাসের অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট আর ভাইভা মিলিয়ে প্রাপ্ত নম্বর ৯.৫। এরা কারা জানেন? এরা হলেন শিলিগুড়ির প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দিলীপ রায়ের মেয়ে ও জামাই। কিন্তু এদের বাকি টেট বা অ্যাকাডেমিক স্কোর কত জানেন? প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের মেয়ে টেট থেকে প্রাপ্ত স্কোর ২.৮৬৬। আর অ্যাকাডেমিক স্কোর মাধ্যমিকে ৩.১৬৮ এবং উচ্চমাধ্যমিকে ৬.৭। আর তাঁর জামাইয়ের টেট স্কোর ২.৭৬৬। অ্যাকাডেমিক স্কোর মাধ্যমিকে ১.৮৫৬ আর উচ্চমাধ্যমিকে ৫.১৪।

তাহলে কি যে প্রভাব খাটানোর তত্ত্ব উঠে আসছে, সেই তত্ত্বই আরও জোরালো হচ্ছে শিলিগুড়ির এই ঘটনায়? কোথায় কি চাকরিতে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার জন্য অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট ও ভাইভায় নম্বর ভরিয়ে দেওয়া হয়েছে? এই বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দিলীপ রায়ের সঙ্গেও। তিনি অবশ্য বলছেন, যখনকার ঘটনা, তখন তিনি এই পদেই ছিলেন না। তিনি তখন কেবল একজন শিক্ষক ছিলেন। বললেন, ‘তারা যোগ্য, তাই পেয়েছে। আদালতে কেস চলছে, দেখা যাবে। মেয়ের ফার্স্ট ডিভিশন ছিল, স্টার মার্কস ছিল। অ্যাপ্টিটিউড টেস্টের কথা যাঁরা ইন্টারভিউ নিয়েছেন তাঁরা বলতে পারবেন। দশে দশ তো পেতেই পারে, এতে কিছু যায় আসে না। বাকিরা হয়ত ভাল পরীক্ষা দেয়নি, তাই পায়নি।’

এদিকে এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উস্কে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। তাঁর বক্তব্য, ‘কেউ যদি দশে দশ পান, তাঁর মানে শুধু প্রভাবশালী নয়, প্রভাবটাও কোনও কিছুর বিনিময়েই সেই প্রভাব খাটানো হয়েছে। যেভাবে চারিদিকে দুর্নীতির আখড়া দেখা যাচ্ছে, তাতে দশে দশ পাওয়া মানে শুধু প্রভাব নয়, রীতিমতো ভ্রষ্টাচার হয়েছে।’

প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও। তাঁরও প্রশ্ন, কীভাবে দশে দশ হল তা নিয়ে। বললেন, ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর খারাপ হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা কী সূত্র ধরে এরকম নম্বর পাচ্ছেন তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে। এরা কি সত্যিই কোনও প্রভাবশালী অংশের মানুষ? আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, এই নিয়ে গভীরে আলোচনা হলে কেঁচো খুড়তে কেউটেও বেরিয়ে আসতে পারে।’