মালবাজার: দেশজুড়েই বিদেশি নাগরিকদের ভুয়ো আধার কার্ড-সহ নানা ভুয়ো নথির মাধ্যমে এদেশে নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়ে একযোগে তদন্ত চালাচ্ছে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থা। এ রাজ্যে বিরোধীদের অভিযোগ, বাংলাদেশ, আফগানিস্থান-সহ আশেপাশের দেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের ভুয়া নথির মাধ্যমে এ রাজ্যে নাগরিকত্ব দিতে সক্রিয় রাজ্যের শাসকদল। যদিও তা বারেবারেই অস্বীকার করেছে তৃণমূল। কিন্তু সেই আবহেই ভুয়ো নাগরিকত্ব নিয়ে সিবিআই নজরে তৃণমূল পরিচালিত মাল পৌরসভা।
ঠিক কি অভিযোগ?
দিল্লি বিমানবন্দর থেকে সন্দেহভাজন ৬ জনকে আটক করেছিল সিবিআই। সিবিআইয়ের সন্দেহ এরা আফগান নাগরিক। ভুয়ো নথির মাধ্যমে এরা ভারতীয় নাগরিকত্ব এবং পাসপোর্ট তৈরি করিয়েছেন। কিন্তু ধৃতরা প্রত্যকেই মালবাজার পৌরসভা এলাকায় তাঁদের জন্মের সরকারি নথি জমা দেন। এরপরেই নড়েচড়ে বসে সিবিআই। ওই নথি ব্যবহার করেই এরা পাসপোর্ট তৈরি করিয়েছিল বলে অভিযোগ। এরপরেই গত নভেম্বর মাসে মালবাজার পৌরসভাকে প্রথম নোটিস দেয় সিবিআই। উত্তর মেলেনি। ফলে গত ৫ ডিসেম্বর ফের মাল পৌরসভাকে নোটিস দিয়েছে সিবিআই।
ঠিক কিসের ভিত্তিতে এদের জন্ম ও পরিবারের অন্য সদস্যদের মৃত্যুর সার্টিফিকেট দেওয়া হল সেসব নিয়ে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে সিবিআই। সব মিলিয়ে মোট ১৫ জনের জন্ম-মৃত্যুর সার্টিফিকেট সংক্রান্ত নথি চেয়েছে সিবিআই। তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত মাল পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বলেন, “আমরা প্রথম চিঠি পাইনি। তবে গতকাল দ্বিতীয় চিঠি পেয়েছি। যাবতীয় তথ্য সিবিআইকে দেব। ভোটের রাজনীতি আমরা করি না। যে নথি জমা পড়ে তার ভিত্তিতেই জন্ম মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হয়। বাকিটা সংস্থা খতিয়ে দেখুক।”
তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে মালবাজার পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান উৎপল ভাদুড়ী বলেন, “আমরা সিবিআইকে যাবতীয় নথি দ্রুত পাঠাব। কিন্তু, কারা কীভাবে এসব পেল তা আমরা কীভাবে বলব। পৌরসভায় যারা এই কাজ করেন তাঁদের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি। দেখা যাক। বাকিটা তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখুন।” সুর চড়িয়েছে বিজেপি। প্রসঙ্গ বিরুদ্ধে আক্রমণের ধার বাড়িয়ে বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, “আফগান, পাকিস্থান আর বাংলাদেশ মিলেমিশে একাকার। ভয়ঙ্কর ঘটনা। আফগান নাগরিক মালবাজার পৌরসভার নাগরিকত্ব সংক্রান্ত জন্ম মৃত্যুর নথি কিভাবে পান? পাসপোর্ট বানাতে এসব নথি দিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত মাল পৌরসভা।” তাঁর প্রশ্ন, “যে ৬ জন ধরা পড়লেন তাঁদের নিয়ে তদন্ত হবে। কিন্তু যারা ধরা পড়েননি? মৌলবাদীদের এভাবেই ভারতে এবং বিশেষ করে এ রাজ্যে আশ্রয় দিচ্ছে কারা?”