হুগলি: আমতার আনিস খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আনিশ খানের বাবা সালেম খান-সহ, পরিবারের মোট চার জনকে গোপন জবানবন্দি দিতে নিয়ে আসা হয়েছে উলুবেড়িয়া আদালতে। বেলা আড়াইটে নাগাদ তাঁদের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়। সকাল ১০টার মধ্যে সিটের তদন্তকারীদের আনিশের বাড়িতে পৌঁছানোর কথা থাকলেও, তাঁরা বেশ কিছুক্ষণ দেরিতে পৌঁছন। আনিস খানের বাবা বলেন, রমজান মাস শুরু হওয়ার কারণে, তাঁরা সকলেই রোজা রেখেছেন, তাই বেলা তিনটের মধ্যে তাঁদেরকে ছেড়ে দিতে হবে। সেই কারণে যদি তাঁদের চার জনের জবানবন্দি না নেওয়া সম্ভব হয়, সেক্ষেত্রে তাঁর একারই জবানবন্দি নেওয়ার বিষয়ে তোড়জোড় শুরু হয়।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায়ের সিটের তরফে কয়েক জন আধিকারিক আনিসের বাড়িতে যান। মূলত পরিবারের মোট ৭ জনের জবানবন্দি জন্য আবেদন করে আনিসের বাবার কাছে। প্রথমে আনিসের পরিবার রাজি হয়নি। কারণ সাদা কাগজে কোনওরকম সিলমোহর ছাড়াই জবানবন্দি দেওয়ার কথা বলছিলেন সিটের আধইকারিকরা। আনিসের পরিবারের আইনজীবী জানান, সাদা কাগজে সিলমোহর ছাড়া লিখিত নোটিস দেওয়া হয়েছে। সিলমোহর ছাড়া নোটিসে যাবেন না আনিসের পরিবারের সদস্যরা। তারপরই সিট আরও একটি নোটিস দেয়।
মার্চের শেষেই একজন ফটোগ্রাফার সহ জন অফিসার যান আনিস খানের বাড়িতে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন জায়গায় মাপজোক করেছিলেন তাঁরা। কীভাবে আনিস খানের দেহ সেখান থেকে পড়েছিল, সেই সব বিষয়গুলির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছেন সিটের অফিসাররা। আনিসের বাবা সালেম খানের সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারী অফিসাররা। জানা গিয়েছে, সিটের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আনিসের বাবা। আনিসের বাবার বক্তব্য, “কয়লা কেলেঙ্কারিতে ইডি ডেকে পাঠিয়েছে, সেই জ্ঞানবন্ত সিং সিটের তদন্তে আছেন। সেই জ্ঞানবন্ত সিংকে আমি কীভাবে ভরসা করব? এই জন্য আমার সিটের উপর ভরসা নেই। আমার সিবিআই তদন্তই দরকার।”
উল্লেখ্য, ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুতেও মুখ পুড়েছিল রাজ্যের পুলিশি ব্যবস্থার। অভিযোগ উঠেছে, যারা সেদিন আনিসকে ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলেছিল, তাদের পরনে ছিল পুলিশের পোশাক। যদিও ওই দিন পুলিশের পোশাক পরে কারা এসেছিল, তা নিয়ে এখনও ধন্দে রয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা। এদিকে আনিস খানের ময়না তদন্তের দ্বিতীয় রিপোর্ট ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, আনিসের মাথায় গভীর ক্ষত রয়েছে। শরীরে বেশ কিছু হাড় ভাঙা ছিল। মাথার খুলির পিছন দিক থেকে ডান কানের উপর পর্যন্ত গভীর ক্ষত রয়েছে। ডান দিকের কপালে ক্ষত রয়েছে। শুধু তাই নয়, খুলির বাঁ দিকের হাড় ভেঙে গিয়ে ঘিলু বেরিয়ে এসেছিল। এমনই আরও বেশ কিছু জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।