Salt Lake TET Agitation: অর্ণবের টিউশনের টাকায় সংসার চলে, চোখে জল নিয়ে মাসি বললেন, ‘পড়াশোনা করানোই ভুল হয়েছে’
Salt Lake TET Agitation: ২০১৪-তে টেট পাশ করেছেন অর্ণব। রাতে সল্টলেক থেকে তাঁকেও আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। সকাল থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিল না পরিবার।
হুগলি: রাস্তায় বসে যাঁরা অনশন করলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা, যাঁদের রাতের অন্ধকারে প্রিজন ভ্যানে তুলল পুলিশ, তাঁদের পরিচয় শুধু আন্দোলনকারী বা চাকরি প্রার্থী নয়। তাঁরা কারও মা, কারও সন্তান। তাঁদের পথ চেয়ে বসে রয়েছে তাঁদের পরিবার। তাঁদের বাড়ির ছেলেটা কী খেল, কোথায় গেল, জানতে না পেরে গভীর উৎকণ্ঠায় প্রহর কাটছে তাঁদের। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশি অভিযানের পর থেকে খোঁজ ছিল না হুগলির অর্ণবের। পরে তাঁর ফোন পেলেও উদ্বেগ কাটছে না। স্বজনদের চোখের জল ছাড়া আর কোনও ভাষা নেই।
রাতে আন্দোলনকারী ২০১৪-র টেট প্রার্থীদের তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। আন্দোলন তোলার পর থেকে বেশ কয়েকজনের কোনও খোঁজ ছিল না। তাঁদের মধ্যেই একজন অর্ণব ঘোষ। হুগলির বৈঁচিগ্রামে মাসির বাড়িতে মানুষ হওয়া অর্ণবের পরিবারের ঘুম ভাঙে সেই খবরে। সকাল থেকেই খোঁজ খবর শুরু করেন তাঁরা। অর্ণবের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ না করতে পেরে আরও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। পরে অবশ্য অর্ণব নিজেই ফোন করে জানান তিনি ঠিক আছেন।
হাওড়ায় জন্ম হলেও ছোট থেকে মাসির বাড়িতেই থেকেছেন অর্ণব। সেখানে থেকেই পড়াশোনা করেছেন। দক্ষিণপাড়া এলাকার ওই বাড়িতে থেকেই এমএ, বিএড পাশ করেছেন। তবে সেই ছেলেকে আজ যে পরিস্থিতিতে দেখতে হচ্ছে, তাতে বুক ফেটে যাচ্ছে মাসির। অর্ণবের মাসির সরস্বতী চট্টোপাধ্যায় আক্ষেপ করে বলেন, ‘পড়াশোনা না করালেই ভাল হত। দুটো গরু, ছাগল কিনে দিলে কাজে লাগত।’ তিনি জানান, বরাবরই ভাল ফল করচতেন অর্ণব। কিন্তু এভাবে চাকরির আশায় দিন কাটাতে হবে, তা ভাবেননি তাঁরা। সরস্বতী দেবীর স্বামী নেই। অর্ণব টিউশন পড়িয়ে সংসার চালান। হাওড়ার বাড়িতে রয়েছেন অর্ণবের অসুস্থ বাবা, হৃদরোগে আক্রান্ত। তাই চাকরিটা হয়ে গেলে অনেকটাই সুরাহা হয়।
অর্ণবের জামাইবাবু শ্যামসুন্দর বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গত সোমবার বাড়ি থেকে বের হয়ে কলকাতায় যান অর্ণব। বৃহস্পতিবার সকালের পর থেকে কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না তাঁর সঙ্গে। রাতে সংবাদমাধ্যমে ওই দৃশ্য দেখে পরিবারের সদস্যরাই যোগাযোগ করেন তাঁদের সঙ্গে। অর্ণবের লড়াইয়ের কথা বলতে বলতে চোখে জল এসে যায় জামাইবাবু শ্যামসুন্দরের। গলা কেঁপে আসে তাঁর। বলেন, ‘ও তো তবু একজন অবিবাহিত ছেলে। কত মা তাঁদের ছোট ছোট সন্তানকে নিয়ে আন্দোলন করছেন। ওদের বিচার পাওয়া উচিত।’