Mamata Banerjee: ‘আমাদের ভাষা নিয়ে কেউ খেলবার চেষ্টা করবেন না’, হুঁশিয়ারি মমতার
Mamata Banerjee: মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, "আমাদের ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানলাভের জন্য অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। রামকৃষ্ণদেব, সারদা মা এবং স্বামীজির পাশে ঘুরলেই এটা হয়ে যাবে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকার বাণী আমরা কার কাছ থেকে শিখেছিলাম। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। কথামৃত আমার মুখস্থ।"

কামারপুর: ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্থা ইস্যুতে বেশ কিছুদিন ধরেই সরব তৃণমূল। তার সঙ্গে এবার দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ শব্দবন্ধ উল্লেখের বিরোধিতা করে সরব হয়েছে রাজ্যের শাসকদল। মঙ্গলবার হুগলির কামারপুকুরে রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনের নতুন অতিথি নিবাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের অনুষ্ঠানেও বাংলাভাষা নিয়ে নাম না করে বিজেপিকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “আমাদের ভাষা নিয়ে কেউ খেলবার চেষ্টা করবেন না।” একইসঙ্গে এদিন কামারপুকুর-জয়রামবাটি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠনের ঘোষণাও করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বঙ্গভবনে পাঠানো দিল্লি পুলিশের চিঠিতে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ শব্দবন্ধ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর বাড়ছে। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল। আবার বিজেপি যুক্তি দিচ্ছে, দিল্লি পুলিশ কোনও ভুল করেনি। এই আবহে এদিন কামারপুকুরে এই অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, “আমাদের ভাষা নিয়ে কেউ খেলবার চেষ্টা করবেন না। কেউ অসম্মান করার চেষ্টা করবেন না। একবার যা ব্রেনে নিয়েছি, ওটা ড্রেনে যাবে না। আমরা ছোটবেলা থেকে যা শিখেছি, কেউ মেরে ফেললেও তা ভুলব না।”
এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “আমাদের ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞানলাভের জন্য অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। রামকৃষ্ণদেব, সারদা মা এবং স্বামীজির পাশে ঘুরলেই এটা হয়ে যাবে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকার বাণী আমরা কার কাছ থেকে শিখেছিলাম। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। কথামৃত আমার মুখস্থ। কথামৃত ভাল করে পড়ুন।”
এরপরই মমতা বলেন, “রামকৃষ্ণদেব বলেছেন, জলকে কেউ জল বলে, কেউ পানি বলে, কেউ ওয়াটার বলে। তফাত তো এটুকুই। তিনি আর একটা কথা বলতেন। কেউ মাকে মা বলে, কেউ মাদার বলে, কেউ আম্মা বলে। তফাত এটুকুই। এর থেকে বেশি কিছু নয়। এটাই তো আমাদের শিক্ষা।”
স্বামীজির কথা টেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “তিনি কোন ভাষায় কথা বলতেন। বাংলাভাষায়। এটা মনে রাখবেন। আর বলে দিচ্ছে, বাংলা বলে কোনও ভাষাই নেই।” নাম না নিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, “বাংলা ছাড়া ভারত হয়? নাকি বিশ্ব হয়?” এরপর তিনি বলেন, “জানে ধর্মের মানে কি? মানুষ ধর্মের মধ্যে কী পায়? ধর্মের মধ্যে স্বস্তি পায়। শান্তি পায়। সেই জায়গাটা হারিয়ে গেলে আমরাও তো হারিয়ে যাব। এখন ধর্মকে রক্ষা করার পালা। মানবিকতাকে রক্ষা করার পালা। সৌজন্যতাকে রক্ষা করার পালা।”
এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে কামারপুকুর জয়রামবাটি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠনের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। আর ওই বোর্ডের দায়িত্ব দেন কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী লোকোত্তরানন্দজি মহারাজকে। তিনি এই বোর্ডকে ১০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
এদিন কামারপুকুর যাওয়ার পথে গোঘাটের এক ত্রাণশিবিরে যান মুখ্যমন্ত্রীর। বন্যা বিধ্বস্ত একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা ওই ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেওয়া দুর্গতদের এদিন নিজের হাতে খাবার পরিবেশন করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে কাছে পেয়ে আপ্লুত দুর্গতরা। কেউ কেউ নিজেদের পরিস্থিতির কথা মমতাকে জানান।

