হুগলি: সম্প্রতির নজির গড়লেন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী। ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে যে মানবতা সবার উর্ধ্বে, তা আরও একবার বুঝিয়ে দিলেন শাকির আলি (Sakir Ali)। একদিকে সম্প্রীতির দুর্গাপুজো করে যেমন অনন্য নজির গড়লেন তিনি, ঠিক অন্যদিকে সম্প্রীতির মেল বন্ধনের পুজো করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন অপর এক ভিন ধর্মীর মানুষ সেখ হায়দর আলি। এই দুই ভিন ধর্মীর মানুষের দুর্গা পুজো রীতিমত শুধু আরামবাগ মহকুমাতেই নয় গোটা রাজ্যেই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকল।
শাকির আলি নিজেই পুজো পাঠ করেছেন। পাশাপাশি মন্ত্র উচ্চারণ করে দুর্গাপুজো করেছেন আরামবাগের (Arambag) নিজের বাড়িতে। নবমীতে জাঁক জমক ভাবে নিয়ম মেনে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও নির্ঘণ্ট মেনে বাড়িতেই করেছেন কুমারী পুজো। এই পুজোয় হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ যাবতীয় ভেদাভেদ ভুলে হাতে হাত রেখে মেতেছিলেন শাকিরের বাড়িতে। শুধু তাই নয় কোভিড বিধি মেনে আগত সকল দর্শমার্থীদের মাস্ক দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে স্যানিটাইজ়ারও দিয়েছেন প্রত্যেককে।
শাকির আলি বলেন, “ধর্ম হয়ত আলাদা। কিন্তু উৎসব আমাদের সকলের এক। সেই নীতি মেনে আমি দুর্গাপুজো করছি। নিষ্ঠাভরে তা পালন করছি। ” পাশাপাশি , অপরূপা পোদ্দার বলেন,”বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ থাকলেও সব থেকে বড় উৎসব হলো দুর্গাপুজো। শুধু বাংলা নয়, প্রবাসী বাঙালিরাও এই পুজো করে থাকেন। লন্ডন, নেদারল্যান্ড প্রায় প্রতিটি জায়গায় এই পুজো হয়। আমাদের শান্তি-সম্প্রিতীর বাঙলায় ফিরহাদ হাকিম পুজো করেন। আমার স্বামী শাকির আলি পুজো করেন। এই বাঙলায় প্রতিটি মানুষ এই পুজোকে উৎসব আকারে রূপ দিয়ে পালন করেন। ”
অন্যদিকে, খানাকুলের হায়দার আলিও করেছেন দুর্গাপুজো। এই বছর খানাকুলের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। বানভাসি সেখানকার মানুষ। পুজোর আগে নতুন জামা দূর সমস্ত কিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। খানাকুলের যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই শুধু জল আর জল। পুজো যদিও বা হয় কীভাবে হবে মণ্ডব?এই সব প্রশ্ন যখন বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল সেই সময় বানভাসি এলাকায় হায়দার আলি নিজেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন দুর্গাপুজোর আয়োজন করার। বানভাসি মানুষগুলোর মুখে এক চিলতে আনন্দ দান করার। এবারে তাঁর পুজোর থিম ছিল লক্ষ্মীর ভান্ডার। আলোর রোশনাই ও পুজোর আয়োজন বন্যার সমস্ত গ্লানি ভুলিয়ে দিয়েছিল দুর্গত মানুষদের।
এই বিষয়ে হায়দার আলি বলেছেন, “আমরা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে খানাকুলের ঘোষপুরে একটি দুর্গাপুজো করি। সেই পুজো কমিটির সম্পাদক ছিলাম আমি নিজেই। এইবছর আমাদের পুজোর থিম ছিল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। পুজোর শেষ দিনেও অর্থাৎ দশমীর দিনেও আমরা ছোটো করে একটি উৎসব করি। সেখানেও অনেক মানুষ এসেছিলেন অংশ নিতে। সকলে মিলে আমরা নির্বিঘ্নে এই পুজো করেছি। ”
আরও পড়ুন: Birbhum Accident: রাস্তা থেকে খেতের মাঝে ছিটকে যায় আস্ত গাড়ি! জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় মৃত ২