জিরাট: সর্বক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকতে হত। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে প্রতি মুহূর্তে আতঙ্কে থাকতেন অভিভাবকরা। জিরাটের চর খয়রামারি প্রাথমিক স্কুলের ভবন ভয়ঙ্কর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যে কোনও সময় তলিয়ে যেতে পারে নদীগর্ভে। বিষয়টি নজরে আসতেই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিপজ্জনক ওই ভবন থেকে স্কুল আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবারের মধ্যে অন্যত্র অস্থায়ীভাবে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আদালতের এই নির্দেশে স্বাভাবিকভাবেই খুশি স্থানীয় বাসিন্দা থেকে স্কুল পড়ুয়াদের অভিভাবক-অভিভাবিকারা। তাঁদের আশা, আদালত যখন নির্দেশ দিয়েছে, এবার অন্তত কিছু একটা ব্যবস্থা হবে।
নদীর একেবারে ধারেই স্কুল। নদীর পাড় ভাঙতে ভাঙতে স্কুলের বিল্ডিংটি এখন বিপজ্জনক অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যে কোনও মুহূর্তে স্কুলের ভবনটিকে চলে যেতে পারে নদীবক্ষে। এমন অবস্থায় হাইকোর্টের থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যতদিন পর্যন্ত না স্থায়ী ভবন তৈরি হচ্ছে, ততদিন প্রয়োজন হলে চারচালা তৈরি করে অন্যত্র কোথাও স্কুল ভবন চালানো যেতে পারে। হাইকোর্টের এই নির্দেশের পর কিছুটা স্বস্তিতে এলাকাবাসীরা।
উল্লেখ্য স্কুলের ভবন তৈরির জন্য ইতিমধ্যেই একজন জমি দিয়েছেন সুরেশ মণ্ডল নামের এক ব্যক্তি। ওই পরিবারের অন্যতম সদস্য সুবল মণ্ডল অবশ্য জানিয়েছেন, “এই সরকার এতদিন পর্যন্ত বিষয়টিতে নজর দেয়নি। আগে যদি বিষয়টিতে নজর দেওয়া হত, তাহলে হয়ত স্কুলটা বেঁচে যেত।” অতীতে এই স্কুল প্রাঙ্গনের ঐতিহ্য স্মরণ করিয়ে তিনি জানান, আগে এই স্কুলের মাঠে রথের উৎসব, দুর্গাপুজো সব হত। কিন্তু এখন সেই ঐতিহ্য হারিয়ে যেতে বসেছে।
বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পায়েল পালের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “স্কুলটিকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই জমি দেখা হয়েছে। সেই জমি রেজিস্ট্রিও হয়ে গিয়েছে। গঙ্গার পাড় বাঁধানোর কাজও চলছে এবং সেই সঙ্গে স্কুলটিকেও সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হবে।” হুগলি জেলাশাসক পি দীপাপ প্রিয়ার সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি জানান, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।