হুগলি: বন্ধ হয়ে গেল হুগলির হিন্দমোটর হাইস্কুল (Hind Motor High School)। আর কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদের সরব স্কুলের প্রাক্তনী থেকে এলাকার বাসিন্দা ও অভিভাবকরা। ১৯৪২সালে শুরু হয় হিন্দমোটর কারখানার পথ চলা। তার দশ বছর বাদে ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হিন্দমোটর হাইস্কুল। একসময় রমরমিয়ে চলা সেই স্কুল কারখানা বন্ধের পর থেকেই ধুঁকছিল। তাই এবার সেই স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ।
হিন্দমোটরে হিন্দুস্থান মোটর কারখানা ক্যাম্পাসের মধ্যেই রয়েছে হিন্দমোটর হাইস্কুল। দীর্ঘদিন ধরে এই স্কুল অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে চলছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের বহু নামী মানুষ এই স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন। এখান থেকেই পড়াশোনা করেছেন বর্তমানে বহু পরিচিত রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বও। সেই স্কুল বন্ধে করে সিদ্ধান্ত নিল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে স্কুলের পড়ুয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে। ২০১৪ সালে অ্যাম্বাসাডার কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কারখানা চত্বরে পুরো শুনশান হয়ে যায়। ক্ষুন্নিবৃত্তির জন্য কারখানার বহু শ্রমিক অন্য পেশায় যোগ দেন। পরিবার নিয়ে তাঁরা হিন্দমোটর ছেড়ে চলে যান। যার ফলে পড়ুয়া সংখ্যা কমতে থাকে।
এক সময় যে স্কুলে ২,৩০০ ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করত এখন সেই সংখ্যা এসে ঠেকেছে সাকুল্যে ৭০০ জন। বিড়লা ম্যানেজমেন্ট হিন্দুস্থান মোটরকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিল বটে। কিন্তু সেই জমি বিক্রি করে দেওয়ার পর গড়ে উঠেছে আবাসন প্রকল্প। আর কারখানার ভবিষ্যৎ ডুবে যায় অন্ধকারে। তবে কারখানা বন্ধ থাকলেও এতদিন স্কুলটা চলছিল। এবার সেই স্কুলও পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আর এই সিন্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন অভিভাবক থেকে স্কুলের প্রাক্তনীরা।
বিজেপি স্থানীয় নেতৃত্ব স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার বিরোধিতা করেছে। বিজেপি নেতা তথা হিন্দমোটর স্কুলের প্রাক্তনী পঙ্কজ রায় বলেন, এত ভালো একটা স্কুলকে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মানব না। এর জন্য যা করার করব। তেমনি যারা এখনও ওই স্কুলের পড়ুয়া তাদের অভিভাবকরা স্কুল বন্ধের সিদ্ধাতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। কর্তৃপক্ষের এই আচমকা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছেন তাঁরাও।
আর উত্তরপাড়া পুরসভার প্রশাসক তথা তৃণমূল নেতা দিলীপ যাদব বলেন, “হিন্দমোটর স্কুলে আমি ও আমার ভাই বোনেরা পড়েছি। এই স্কুল আমাদের কাছে আবেগের। স্কুল বন্ধের নোটিশ দেখেছি। স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলব, প্রয়োজনে সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করব। স্কুলটা যাতে বন্ধ না হয় তার চেষ্টা করব।
এদিকে হিন্দমোটর স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে কারখানা ক্যাম্পাসে তাদের আরও একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। সেই স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। পড়ুয়া কমে যাওয়ায় পরিকাঠামো খাতে খরচ চালানো সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি তাদের।
আরও পড়ুন: Murder: স্ত্রী’র মাথা থেঁতলে শাড়ি জড়িয়ে খাটে শুইয়ে রেখে পালাল স্বামী