হুগলি: নবমীর রাতে মত্তদের হাতে আক্রান্ত মা ও মেয়ে। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে মাথা ফেটে যায় মায়ের। হুগলির উত্তরপাড়ার ঘটনায় আটক তিন জন।
উত্তরপাড়ার পাতকুয়াতলা এলাকায় নবমীর রাত দুটো নাগাদ এই ঘটনা ঘটে। এলাকারই বাসিন্দা ওই মহিলা তাঁর মেয়েকে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে প্রতিমা দেখে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির অদূরেই রাস্তায় সে সময় তিন যুবতী ও তাঁদের সঙ্গে থাকা তিন যুবক মত্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। অভব্য আচরণ করছিলেন, সঙ্গে গালিগালাজও করছিলেন বলে অভিযোগ। কেন বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তাঁরা অসভ্যতা করছেন, প্রশ্ন করেন তরুণী। অভিযোগ, তখনই তাঁকে মত্ত অবস্থায় ওই যুবকরা মারধর শুরু করেন।
ওই তরুণীর গায়ে হাত-পায়ে খিমচে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন মাও। মায়ের মাথায় জলের বোতল দিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ। মাথা ফেটে যায় তাঁর। চিৎকার চেঁচামেচিতে এলাকার বাসিন্দারা জড়ো হয়ে যান। তাঁরাও প্রতিবাদ করেন। ততক্ষণে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশও।
অভিযোগ, পুলিশকেও গালিগালাজ করতে থাকেন অভিযুক্তরা। উত্তরপাড়া থানার পুলিশ তিন যুবতীর সঙ্গীদের আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে। আক্রান্ত মহিলার বক্তব্য, “ঠাকুর দেখে বাড়ি ফিরছি। তখন দেখি ওরা মাতলামি করছে। আমার স্বামী ওদের বারণ করতে গেল।মেয়ে জিজ্ঞাসা করল কেন এসব করছ! হঠাৎ মেয়ের উপর চড়াও হয়ে তার মঙ্গল সূত্র ছিঁড়ে দেয় ওরা। আঁচড়ে খিমচে মারধোর করা হয়। আমাকেও বোতল দিয়ে মাথায় মারে। ওদের গায়ে কেউ হাত দিয়েছিল বলে নাকি চিৎকার করে গালি দিচ্ছিল। প্রত্যেকেই মত্ত অবস্থায় ছিল। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে।”
আক্রান্ত তরুণী বলেন, “ওদের তো কোনও হুঁশই ছিল না। পুরো মদে বুঁদ হয়ে ছিল। আমি বললাম, বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে কেন এত গালিগালাজ করছ? কীসের অসুবিধা? এখান থেকে চলে যাও। ব্যস! এই শুনেই পুরো ক্ষেপে গেল ওরা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ওপর চড়াও হল। মারধর শুরু করল। কামড়ে, খিমচে হাত পায়ের যা অবস্থা করল! মাকেও ছাড়ল না। ওদের সঙ্গে মুখ লাগানোই ভুল হয়েছে। কিন্তু পাড়ার মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে, ভাবতেও পারিনি।”
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তিন জনকে আপাতত আটক করা হয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদেরও বয়ান নেওয়া হবে। তবে অভিযুক্তরা যে মত্ত ছিল, তা বোঝা গিয়েছে। দুপক্ষের বয়ান খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিবেশীদের সঙ্গেও কথা বলা হবে।