হুগলি : রাজ্যে পরপর ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজ্যনীতি। বিরোধীদের নিশানায় শাসকদল। গত এক সপ্তাহে হাঁসখালি, পিংলা, বোলপুর, রায়গঞ্জের একাধিক ধর্ষণের ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। নদিয়ার হাঁসখালির গণ-ধর্ষণের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে স্থানীয় দাপুটে তৃণমূল নেতার। ফলে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক শিবির। এই আবহে হাঁসখালি গণধর্ষণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিরোধী দলের রাজনীতিবিদ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন মন্তব্য়ের সমালোচনা করতে ছাড়েননি নেটিজ়েনরা। এই আবহে হাঁসখালি কাণ্ড নিয়ে মমতার মন্তব্যের সমালোচনা করলেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন যে, মা-মাটি-মানুষের দলের থেকে ‘মা’ কথাটা মুছে ফেলা উচিত।
এদিন হুগলির ইমামবাড়া হাসপাতালে শিশু বিভাগে ফল বিতরণ করতে এসেছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেছেন, “রাজ্য সরকার একের পর এক কন্যাশ্রীর টাকাও দিচ্ছে। আবার এই বাংলাতেই পরপর মেয়েদের ধর্ষণ হচ্ছে। এবং প্রমাণ লোপাটের জন্য তাঁদের দাহও করে দেওয়া হচ্ছি তড়িঘড়ি।” তাঁর আরও সংযোজন, “মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে তিনি ধর্ষণের ব্যাখ্যা যেরকম অবিবেচকভাবে দিচ্ছেন তাতে একজন বাংলার মেয়ে তথা নাগরিক হিসেবে আমার লজ্জা লাগছে। যাঁকে এত ভোট দিয়ে মানুষ নিয়ে এসেছে তাঁর মুখে এইসব ভাষা লজ্জাজনক।”
তিনি বলেছেন, “মেয়েটির লাভ অ্যাফেয়ার থাকলে বা প্রেগন্যান্ট হলে ধর্ষণটা ধর্ষণ নয়? মা-মাটি-মানুষ তাঁর দলের নাম। সেই মায়ের মুখ থেকে যদি এরকম কথা বের হয় তাহলে মা কথাটা তো মনে হয় কেউ বলতে পারবে না। মা কথাটা মা-মাটি-মানুষ থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া উচিত।” উল্লেখ্য সোমবার বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গনের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাঁসখালি ধর্ষণ কাণ্ড নিয়ে প্রথম মন্তব্য করেন। সেখানে তিনি বলেন, “পুলিশ এখনও বিষয়টাই জানতে পারেনি। এই যে বারবার দেখাচ্ছে, একটা বাচ্চা মেয়ে নাকি মারা গিয়েছে রেপড হয়ে। আপনি রেপড বলবেন? নাকি প্রেগন্যান্ট বলবেন? না লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন? এটা ইনকোয়ারি করেছেন কি? আমি পুলিশকে বলেছি এটা।” মমতার এই প্রতিক্রিয়া ঘিরেই সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এদিন হুগলির সাংসদ আরও অভিযোগ করেছেন, “যে ধরনের উস্কানি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে বোঝা যায় তিনি ধর্ষকদের সঙ্গে রয়েছেন অথচ নির্যাতিতার পরিবারের পাশে নেই। সিবিআই তদন্তের মাধ্যমে আসল সত্যটা বেরিয়ে আসবে,দোষীরা শাস্তি পাবে।” এদিকে বেহালায় তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ ও নবদ্বীপে প্রাতঃভ্রমণে মহিলা গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে হুগলির সাংসদ বলেন,”ক্ষমতার লড়াই চলছে তৃণমূলে। সিন্ডিকেট থেকে তোলাবাজি করে ওদের পকেটে এত টাকা এসে গেছে সেই টাকা কার কাছে যাবে এবং সেই ক্ষমতা কাকে দেওয়া হবে তা নিয়েই লড়াই। হিমালয়ের চূড়াটা শুধুমাত্র দেখা যাচ্ছে। নেতা ও মন্ত্রীরা একের পর এক যেভাবে অভিযুক্ত হচ্ছে খুব শীঘ্রই দেখা যাবে যে সরকারটাই না পড়ে যায় কারণ।”
আরও পড়ুন : Hooghly Chaos: কোটি টাকার তছরূপের অভিযোগ, দুর্নীতিতে নাম জড়ালো ফুরফুরা পঞ্চায়েত প্রধানের