হুগলি: দোলের দিন বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়েছিল। এরপর হঠাৎই বাড়ির সামনে যুবকের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন বাড়ির লোকজন। শুক্রবার দুপুরে তারকেশ্বর থানার চাঁদুর এলাকায় এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। পরিবারের দাবি, এটা কোনও স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তাঁদের ছেলেকে খুন করে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন বাড়ির লোকজন। পুলিশ গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে।
তারকেশ্বর থানার চাঁদুর এলাকা। সেখানকার বাসিন্দা ছিলেন শঙ্খ দাস (২২)। শঙ্খর বাড়ির লোকজনের কথায়, শুক্রবার সকালে মাঠে গিয়েছিলেন তিনি। কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁর পরিবার। বাবাকে মুড়ি দিতে মাঠে গিয়েছিলেন এদিন। সেখান থেকে ফিরে সকাল ১০টা নাগাদ বন্ধুদের সঙ্গে বেরিয়ে যান তিনি। দোলের দিন, তাই ছেলের খোঁজ নিতে বারবার বাড়ি থেকে ফোন করা হচ্ছিল। এরইমধ্যে বেলা ৩টে নাগাদ তাঁকে বাইকে করে দু’জন এসে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় বলে অভিযোগ।
অভিযোগ, ওই দুই যুবক শঙ্খর বন্ধু। এদিকে ছেলের দেহ বাড়ির সামনে পড়ে থাকতে দেখে হইচই শুরু করে দেন বাড়ির লোকজন। ছুটে আসে পাড়া প্রতিবেশী। তড়িঘড়ি তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই যুবককে। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবারের দাবি, শঙ্খের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। তারকেশ্বর থানার পুলিশ ঘটনা খতিয়ে দেখছে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই শঙ্খের বেশ কয়েকজন বন্ধুকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন পরিবারের সদস্যরা। একইসঙ্গে শঙ্খদের বাড়ির কাছে একটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো রয়েছে। তার ফুটেজও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
শঙ্খ দাসের দিদি শ্রাবন্তী মিদ্যা বলেন, “বাবাকে মুড়ি দিতে মাঠে গিয়েছিল ভাই সকালে। সেখান থেকে আসার পর বন্ধুরা ওকে ডেকে নিয়ে যায়। তিনটে নাগাদ বাড়ির পাশে ওকে পড়ে থাকতে দেখে লোকজন। কেউ মেরে দিয়েছে আমার ভাইকে। জানি ওর বন্ধুরাই মেরেছে। যারা মেরেছে তাদের আমরা শাস্তি চাই।”
নিহতের কাকা পরিমল দাসের কথায়, “মাঠ থেকে সকালে ফিরে বলল বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে যাচ্ছি। দুপুরে ভাই ফোন করে বলছে, ‘তাড়াতাড়ি আয়। বাড়ির সামনে ছেলেটাকে কারা মেরে ফেলে রেখে গিয়েছে’। আমি তো শুনেই হতবাক। ছুটতে ছুটতে যাই। ততক্ষণে হাসপাতালে নিয়ে বেরিয়ে গেছে। মৃতদেহটা ওর বন্ধুরা বাড়ির সামনে ফেলে রেখে গিয়েছে। মাঝখানে ওর বাবা ফোনও করেছিল। তখন বলেছে, বাড়ি ফিরছে।”
কেন এই ঘটনা ঘটল তা বুঝে উঠতে পারছে না পরিবার। বন্ধুদের মধ্যে কোনওরকম সমস্যা ছিল কি না তাও বলতে পারছে না তারা। ইতিমধ্যেই এলাকার বিধায়কের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছে পরিবার। দোষীদের শাস্তি দাবি করেছে তারা। হাসপাতালের সামনে পড়ে কপাল চাপড়াচ্ছেন বাবা। অনবরত চিৎকার করে বলে চলেছেন, “এভাবে চলে গেলি, আমরা এবার কী নিয়ে থাকব।”
আরও পড়ুন: Dubrajpur Case: পরণে শুধু প্যান্টটুকুই, দু’টো শরীরে তখনও লেগে রং! উৎসবের দিনে এও ছিল কপালে?
আরও পড়ুন: Swasthasathi Card: স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে ‘না’! স্বাস্থ্যভবনে চিঠি দিল ২০টি বেসরকারি হাসপাতাল