চন্দননগর: পুজো বলতে ওখানকার মানুষের কাছে তো জগদ্ধাত্রী পুজো। হাতে আর মাত্র ক’টা দিন। তারপরেই আলোর রোশনাইয়ে মাতোয়ারা হতে চলেছে চন্দননগর, কৃষ্ণনগর। জগদ্ধাত্রীর আরাধনায় মেতে উঠবে বাংলা। প্রতিবছরই দূর-দূরান্ত থেকে আগত দর্শনার্থীদের ঢল নাম চন্দননগরে। দুর্গাপুজো নয়, প্রতিবছর এই জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্যই মুখিয়ে থাকেন চন্দননগরবাসী। কিন্তু, কীভাবে পুজোর গোড়াপত্তন হয়েছিল জানেন?
শোনা যায়, নবাব আলিবর্দির রাজত্বকালে মহাবদজঙ্গ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের কাছে বারো লক্ষ টাকা নজরানা দাবি করেন। কিন্তু, অত টাকা দিতে পারেননি রাজা। বন্দি হন। এদিকে বন্দি থাকার কারণে সে বছর দুর্গাপুজো করতে পারেননি রাজা। কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বিজয়া দশমীর দিন ফিরছিলেন নৌকায়। সেই সময় সিংহবাহনা এক দেবীর স্বপ্নাদেশ পান তিনি। এরপরই গঙ্গাপাড়ের নিচুপট্টি, চাউলপট্টি এলাকায় নৌকা থামিয়ে এই পুজোর আয়োজন করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। তৎকালীন ফরাসিদের দেওয়ান ছিলেন ইন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী। তিনি ছিলেন আবার নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু। গোটা পুজো পরিকল্পনায় রাজাকেই তিনিই সবথেকে বেশি সাহায্য করেছিলেন বলে কথিত আছে।
এদিকে প্রথম পুজো থেকেই ওই পুজো সংকল্প হয়ে আসে ইন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর পরিবারের সদস্যদের নামে। সূত্রের খবর, চন্দননগরের সরিষাপাড়ায় এখনও রয়েছে ইন্দ্র নারায়ণ চৌধুরীর বাড়ি। কিছু সময় আগেও তাঁর পরিবারের উত্তরসূরিরা পুজোয় যোগ দিলেও এখন আর সেইভাবে কাউকে দেখা যায় না। চন্দননগরের গঙ্গা পাড়ের প্রথম পুজো চাউলপট্টির জগদ্ধাত্রী পুজো বা আদি মায়ের পুজো। ১৭৬২ সালে আনুমানিক শুরু হয় এই পুজোর। এদিকে স্বপ্নাদেশ মেনেই পরের মাসের শুক্লা পক্ষের নবমীর তিথির সময় নিজের রাজবাড়িতে জগদ্ধাত্রী দেবীর পুজোর আয়োজন করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। তা এখনও জাঁকজমকের সঙ্গে হয়ে আসছে কৃষ্ণনগরে।