চন্দননগর: ইতিহাসের শহর চন্দননগর (Chandannagar)। গঙ্গাতীরবর্তী এই শহর বরাবরই অন্য শহরের থেকে একটু সাজানো গোছানো। আর শহরেরই ঠিক মাঝেই বিশাল এলাকাজুড়ে রয়েছে বিশালাকার লালদিঘি। এই দিঘির সৌন্দর্যায়নই এবার পৌর ভোটে শাসক দলের বড় হাতিয়ার হতে চলেছে।
শতাব্দী প্রাচীন এই লালদিঘি হসপিটাল মোড়ে জিটি রোড এর ধারে কৃষ্ণভাবিনী নারী শিক্ষা মন্দির স্কুলের পাশে অবস্থিত। লালদিঘি এক সময় বাইরে থেকে চন্দননগরে ঘুরতে আসা এবং স্থানীয় লোকজনের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। কিন্তু বহু বছর ধরে অবহেলার সঙ্গে পড়ে ছিল দিঘি। যথেচ্ছ আবর্জনাও ফেলা হচ্ছিল দিঘির জলে।
সম্প্রতি, রাজ্য হেরিটেজ কমিশন এবং চন্দননগর পুরনিগমের যৌথ উদ্যোগে প্রায় এক কোটি 84 লক্ষ টাকা খরচ করে এই দিঘিটির সংস্কার ও সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে। কাজ প্রায় শেষের দিকে। দিঘিটি সুন্দর করে বাঁধিয়ে দিঘির দু’দিকে পায়ে হাঁটার রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। ঘাটটিকে সুন্দর করে সাজানও হয়েছে। আলো লাগিয়ে সাজানো হয়েছে দিঘির চারপাশ। রয়েছে বেশ কিছু সুন্দর কাঠের চেয়ারও। পাশাপাশি ব্যবস্থা থাকছে একটি ছোট্ট ক্যাফেটেরিয়াও।
প্রাক্তন মেয়র রাম চক্রবর্তী দাবি করেছেন, “লালদিঘি হল চন্দননগরের ঐতিহ্য। দীর্ঘদিন আগেই এই অর্থ অনুমোদন হয়েছে। সদ্য কাজ শুরু হয়েছে। ভোটের আগে মানুষের কাছে ভালো বার্তা গিয়েছে। মোটামুটি এক কোটি টাকার খরচে এই উন্নয়ন হয়েছে।”
এই লালদিঘিই এবার শাসক দলের বড় হাতিয়ার। যদিও বিরোধীরা বলছে পাশের বস্তি উন্নয়ন না করে কাটমানির জন্য দিঘির চার পাশ নিল সাদা রঙ করে উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে। সংযুক্ত নাগরিক কমিটির সদস্য হীরালাল সিংহ বলেন, “আমরা চাই উন্নয়ন হোক। কিন্তু গোটা চন্দননগরের মানুষ দেখছে শুধু হয়েছে নীল-সাদা রঙ আর লাইট। মানব সম্পদের উন্নয়ন কোথায় হয়েছে? আমাদের বামপন্থী বোর্ডের পরিকল্পনা ছিল ওইখানে যে শ্রমিকরা কাজ করেন সেই সমস্ত শ্রমিকদের পুনর্বাসন দেওয়া। অর্থাৎ ওইখানে শ্রমিকদের জন্য আবাসন তৈরি করে পুনর্বাসন দেওয়ার কথা বলা হয়। এখন ওইখানে তিনটে দিক হয়েছে। কিন্তু বস্তিবাসী মানুষগুলো তাঁদের নেই শৌচাগার, না আছে কিছু। এটা কি সামগ্রিক উন্নয়ন? একটা উন্নয়ন মানে সামগ্রিক উন্নয়ন করতে হবে। এই কাজগুলো হয়নি। টাকা তথরূপ হয়েছে। আমদের বোর্ড যদি পরে আসে আমরা উন্নয়নের এই বিষয়ে নজর দেব।”