সিঙ্গুর : সিঙ্গুর। বঙ্গ রাজনীতিতে যতবার আন্দোলনের কথা উঠে এসেছে, ততবার ঘুরে ফিরে এসেছে সিঙ্গুরের নাম। একসময় এই সিঙ্গুরের জমি আঁকড়ে পড়ে ছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ডাক দিয়েছিলেন কৃষি জমি রক্ষার। টলিয়ে দিয়েছিলেন বাম দূর্গের ভিত। ন্যানো সিঙ্গুর (Singur) থেকে চলে যাওয়ার পর থেকে সেভাবে বড় কোনও শিল্প রাজ্যে আসেনি। এক শিল্পবিমুখ ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল রাজ্যের। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন, এবার তাঁর লক্ষ্য রাজ্যে শিল্প টানা। এবার সেই শিল্পকে টানতে আবার সেই সিঙ্গুর থেকেই জোর সওয়াল তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। কৃষির পাশাপাশি শিল্পায়নের ওপরেও জোর দিলেন তিনি।
বিরোধীরা মাঝে মধ্যেই অভিযোগ করে থাকেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরের মাটি থেকে শিল্প সম্ভবনাকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন। এবার সেই সিঙ্গুরের মাটি থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিলেন নয়া শিল্পায়নের। সিঙ্গুরবাসীকে আরও একবার শিল্প সম্ভবনার স্বপ্ন দেখালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, “বিষ্ণুপুর-আরামবাগ-তারকেশ্বর এই লাইনটি করেছিলাম কারণ, এই দিকে কোনও রেল যোগাযোগ ছিল না। রাজ্য সরকারের তরফে জয়রামবাটি – কামারপুকুর থেকে সমান্তরালভাবে দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার রাস্তা করে দিচ্ছি। মেদিনীপুরের দাসপুর থেকে আসবে রাস্তা। এর জন্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করছি। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “এখানে অ্যাগ্রো-ইন্ডাস্ট্রি হচ্ছে, সিঙ্গুরে কোচ ফ্যাক্টরি হচ্ছে… অনেক বড় ইন্ডাস্ট্রি হচ্ছে। ফ্রেট করিডরের বাজেটে প্রস্তাব আমি তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলাম। ইন্ডাস্ট্রিও চলবে। ডেডিকেটেট রেল লাইনও হবে এবং এখানে কোটি কোটি টাকার ইন্ডাস্ট্রিও হবে। আপনাদের ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল থাকবে।”
সেই সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “আজকের দিকে হুগলি বাসীর জন্য সুসংবাদ। আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এখানকার কিষান মান্ডি, তারকেশ্বর-আরামবাগ-বিষ্ণুপুর রেললাইন – এগুলি আমি সব টাকা অনুমোদন দিয়ে এসেছিলাম। এই ফ্লাইওভারটিও তার মধ্যে ধরা ছিল। ৫৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও আমরা ৩৪ কোটি টাকা এবং জমি দিয়েছি। এই ফ্লাইওভার হয়ে যাওয়ার ফলে বৈদ্যবাটি, চাঁপদানি, চাঁপাডাঙা এবং আরামবাগ লক্ষ লক্ষ মানুষ উপকৃত হবেন, তাঁদের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে।”