Mamata Banerjee: সিঙ্গুর থেকেই পঞ্চায়েতের ‘রাস্তা’ খুঁজছেন মমতা, এলাকাবাসীদের চাপা অসন্তোষে প্রলেপ কি লাগবে?

Sanath Majhi | Edited By: Soumya Saha

Mar 27, 2023 | 5:12 PM

Mamata Banerjee in Singur: সিঙ্গুরের মাটি থেকে রাজ্যের ৩৩৪২টি গ্ৰাম পঞ্চায়েতে 'পথশ্রী' প্রকল্পের ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তার শিল্যান্যাস করবেন তিনি। সেই মতো সিঙ্গুরের রতনপুরে সবরকম প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়ে গিয়েছে।

Mamata Banerjee: সিঙ্গুর থেকেই পঞ্চায়েতের রাস্তা খুঁজছেন মমতা, এলাকাবাসীদের চাপা অসন্তোষে প্রলেপ কি লাগবে?

Follow Us

সিঙ্গুর: সিঙ্গুর আন্দোলনের (Singur Movement) পর এক যুগেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আজও রাজ্য রাজনীতিতে একইভাবে প্রাসঙ্গিক সিঙ্গুর। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) রাজনৈতিক উত্থানের কথা যতবার আলোচিত হয়, ততবার ঘুরে ফিরে আসে সিঙ্গুর আন্দোলনের কথা। সেই সিঙ্গুরে আবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামিকাল, মঙ্গলবার সিঙ্গুরে আসছেন মমতা। প্রায় এক বছর পর সিঙ্গুরে মা রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী। সিঙ্গুরের মাটি থেকে রাজ্যের ৩৩৪২টি গ্ৰাম পঞ্চায়েতে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের ১২ হাজার কিলোমিটার রাস্তার শিল্যান্যাস করবেন তিনি। সেই মতো সিঙ্গুরের রতনপুরে সবরকম প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়ে গিয়েছে।

পঞ্চায়েতের মুখে সিঙ্গুরে মমতা

রাজ্যে সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি, কিন্তু রাজনীতির পারদ চড়তে শুরু করে দিয়েছে। চলছে আক্রমণ, প্রতি আক্রমণের পালা। ভোটের মুখে তপ্ত রাজনৈতিক বাতাবরণের মধ্যেই সিঙ্গুরে মমতা। শিলান্যাস করবেন ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, এই ‘রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের হাত ধরে সিঙ্গুরের মাটি থেকেই পঞ্চায়েতের ‘রাস্তায়’ নামতে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কারণ, রাজ্য তথা দেশের মানচিত্রে আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক সিঙ্গুর আন্দোলন।

রাজ্য তথা দেশের মান চিত্রে আজও প্রাসঙ্গিক সিঙ্গুর আন্দোলন। ২০০৬ সালে ঘনীভূত হওয়া সেদিনের সেই আন্দোলন ভীত নাড়িয়ে দিয়েছিল তৎকালীন শাসক দলের। আন্দোলন যত জোরালো হয়েছিল, আস্তে আস্তে ক্ষমতাচ্যুত হতে শুরু শুরু করেছিল বাম শিবির। অবশেষে ২০১১ সালে বাম জমানার পতন ঘটে এবং বাংলার ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। ৩৪ বছরের বাম শাসনের ইতি টানতে, সেদিন অনুঘটকের মতো কাজ করেছিল সিঙ্গুর আন্দোলন, অন্তত এমনই মত রাজনীতির কারবারিদের। এবার সেই সিঙ্গুরে আবার পা রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী।

শুরু রাজনৈতিক তর্জা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত জানাতে সিঙ্গুর যখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চালাচ্ছে, তখন সিঙ্গুরে রাজনৈতিক তর্জাও চলছে জোরকদমে। মুখ্যমন্ত্রী যে সময়ে সিঙ্গুরে আসছেন, সেই সময়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত যত এগোচ্ছে, তত নাম জড়াচ্ছে হুগলির। কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়… দুই যুব নেতাকে নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। সেই দুই যুব নেতাকে ইতিমধ্যেই দল থেকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল। নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছে শাহিদ ইমাম নামে এক প্রাথমিক শিক্ষকও। তারও উল্কাগতির উত্থান নজর কেড়েছে সকলের। ঠিক এমন এক অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঙ্গুরে আসছেন। বিরোধীরা বলছে, হুগলির এমন পরিস্থিতির মধ্যে ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্যই সিঙ্গুরে আসছেন মমতা। যদিও বিরোধীদের সেই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছে শাসক শিবির।

‘না হল শিল্প, না মিলল জমি’

সিঙ্গুর আন্দোলনের পর এক যুগেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই সময় আন্দোলনরত কৃষক হোক, বা শিল্পের পক্ষে জমি দিতে ইচ্ছুক কৃষক পরিবার হোক, উভয় পক্ষের মনেই একটি চাপা অসন্তোষ রয়েছে। যেমন মায়ারানী কোলে ছিলেন জমি দিতে অনিচ্ছুক কৃষকদের মধ্যে একজন। আবার সুভাষ পাঁজা শিল্পের জন্য দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও তাঁরা চাষযোগ্য জমি ফিরে পাননি বলে দাবি। তাঁরা বলছেন, ‘জমিও গেল, চাষও করতে পারছি না, আর ভবিষ্যতটাও অন্ধকার হয়ে গেল।’ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁদের আবেদন, হয় শিল্প হোক, নাহলে চাষযোগ্য করে পুরো জমি ফেরত দেওয়া হোক। অর্থাৎ, গ্রামবাসীদের মধ্যে একটি আক্ষেপের সুর কিন্তু থেকেই গিয়েছে।

Next Article