Pandua: দু’পায়েই জীবনযুদ্ধের মানে বোঝায় চাষির ছেলে ছোট্ট সায়ন

Ashique Insan | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Dec 03, 2023 | 1:11 PM

Pandua: এরপর শুরু হয় প্রতিমার লড়াই। সায়নকে নিয়ে নিরন্তর লড়াই। কীভাবে পা দিয়েই চামচ ধরে ভাতের থালা থেকে অন্ন মুখে তুলতে হয়। কীভাবে লেখাপড়া করতে হয়। হ্যাঁ, স্নান অবশ্য এখনও ছোট্ট সায়নকে করিয়েই দিতে হয় মাঝেমধ্যে। 

Pandua: দুপায়েই জীবনযুদ্ধের মানে বোঝায় চাষির ছেলে ছোট্ট সায়ন
জীবনযুদ্ধে সায়ন
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

হুগলি: পা দিয়ে লেখা, পা দিয়েই খাওয়া। জন্ম থেকে দুই হাত নেই সায়ন মুর্মুর।ছেলেকে নিয়ে মায়ের লড়াই চলছে। জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই সায়ন বুঝে গিয়েছিল, আর পাঁচ জনের মতো সে নয়। তার যে দুটো হাতই নেই। ভরসা কেবল দুই পা। তাই হাতের সমস্ত কাজই তাকে করতে হয় পা দিয়েই। সে খাওয়াই হোক, কিংবা চিরুনি দিয়ে চুল আচড়ানো কিংবা লেখাপড়া। ছোট্ট সায়নের এই লড়াইয়ের সঙ্গী তার মা। পড়াশোনা শেখানো তো বটেই, জীবন নির্বাহের প্রাত্যহিক কাজকর্ম কীভাবে কেবল দুটো পায়েই করতে পারে সায়ন, তারও প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছেন নিরন্তর।  সায়নের মায়ের ইচ্ছা, তার ছেলে বড় হয়ে শিক্ষক হোক। সায়ন অবশ্য এসব ভাবার জন্য এখনও নিতান্তই ছোট। আজ, বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসে হুগলির পাণ্ডুয়ার সায়ন মুর্মুকে TV9 বাংলার তরফে কুর্নিশ।

পাণ্ডুয়ার পোটবা গ্রামের দীপঙ্কর ও প্রতিমা মূর্মুর ছেলে সায়ন মুর্মু। রানাগড় হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে সে। দাদার সঙ্গে স্কুলে যায়, আবার কোন সময় মা সঙ্গে করে নিয়ে যান। সায়ন জন্মানোর পরই প্রথমবার তাকে দেখে মায়ের বুকটা ছ্যাৎ করে উঠেছিল। কীভাবে এই সন্তানকে বড় করবেন তিনি! সময় লেগেছিল ধাতস্থ হতে। সবার আগে প্রতিমা নিজের মনের জোর বাড়ান। নিজেকে শক্ত করেন। দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হোন, আর পাঁচটা বাচ্চার মতো বড় করবেন তাঁর ছোট ছেলেকেও।

এরপর শুরু হয় প্রতিমার লড়াই। সায়নকে নিয়ে নিরন্তর লড়াই। কীভাবে পা দিয়েই চামচ ধরে ভাতের থালা থেকে অন্ন মুখে তুলতে হয়। কীভাবে লেখাপড়া করতে হয়। হ্যাঁ, স্নান অবশ্য এখনও ছোট্ট সায়নকে করিয়েই দিতে হয় মাঝেমধ্যে।

সায়নের বাবা চাষবাস করেন। পরিবারের আয় বলতে সেটাই। আগে স্বামীকেও কাজে  সাহায্য করতেন প্রতিমা। এখন তাঁর বেশিরভাগ সময়টাই চলে যায় ছেলের পিছনেই। তাই স্বামীকে আর বিশেষ সাহায্য করতে পারেন না তিনি।

প্রতিমার মনে চিন্তা সবসময়েই। ছোটো ছেলেটার তো হাত নেই। তাহলে তাঁরা যখন থাকবেন না, তখন ওকে কে দেখবে! প্রতিমা দু’চোখ ভরা চিন্তা নজর এড়ায় না সায়নেরও। সায়ন আরও পড়ায় মন দেয়। চেষ্টা করে স্বনির্ভর হতে। মা বোঝান সায়নকে। ‘বাবা বড় হয়ে একাই একারটা করবি। শিক্ষক হবি। ভাল করে পড়াশোনাটা কর।’

রোনাল্ডোর ভক্ত সায়ন ভালোবাসে ফুটবল খেলতে-দেখতে। খেলা দেখার পাশাপাশি পড়াশোনায় তার খুব ঝোঁক। বাংলা পড়তে ভালোবাসে। মায়ের ইচ্ছা ছেলে বড় হয়ে শিক্ষকতা করুক। সব সময় হাসিখুশি থাকা সায়ন বলে, “আগে পড়া শেষ করি। তারপর তো সব…”

Next Article