হুগলি: হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে অচেনা নম্বরের ভিডিয়ো কল রিসিভ করলেই ফাঁদে পড়তে পারেন যে কেউ। কয়েক সেকেন্ডের নগ্ন ভিডিয়ো দেখানোর পরই শুরু হয় ব্ল্যাকমেল। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইনস্টাগ্রাম অথবা টুইটারের মতো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকার দাবি করে সাইবার অপরাধীরা। সম্প্রতি এমন ঘটনাই ঘটেছে হুগলির চন্দননগরের সিপিএম নেতা গোপাল শুক্লার সঙ্গে। আর এবার সাধারণ মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছে চন্দননগর পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপাল শুক্লা নামে ওই ব্যক্তি রবিবার একটি মিটিং-এ ছিলেন। সেখানে তাঁর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একটি অচেনা নম্বর থেকে কল আসে। ফোন রিসিভ করতেই এক মহিলার নগ্ন ছবি ভেসে ওঠে মোবাইলের স্ক্রিনে। এক কোনে দেখা যাচ্ছিল গোপাল বাবুর ছবি, ভিডিয়ো কলে যেমনটা হয়। আর এটাই আসলে সাইবার অপরাধের ফাঁদ। সেই ফাঁদেই পা দেন গোপালবাবু। নিজের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে গিয়ে বদনাম হতে পারে, এই আতঙ্কেই অনেকে টাকা দিতে রাজি হন। এ ক্ষেত্রে গোপাল শুক্লা ভয় না পেয়ে সোজা পুলিশে অভিযোগ করেন।
প্রথমে চন্দননগর থানায় যান। সেখান থেকে চুঁচুড়ায় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম থানায় সোমবার রাতে অভিযোগ দায়ের করেন। সিপিআইএম-এর যুব নেতা গোপাল জানান, অচেনা নম্বর থেকে ভিডিয়ো কল রিসিভ করতেই বিপত্তি তৈরি হয়। পায়েল রেড্ডি নামে এক জনের ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে কল আসে এবং তাঁকে ব্ল্যাকমেল করা হয়। বিষয়টা তাঁর জানা ছিল, তাই টাকা দেননি। তবে সামাজিক সম্মান বাঁচাতে যে কেউ এই ফাঁদে পা দিতে পারে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তড়িঘড়ি ফেসবুকে পুরো ঘটনা জানিয়ে বন্ধুদের সতর্ক করেন তিনি। সাইবার থানায় অভিযোগ জানান গোপাল।
চন্দননগর পুলিশের পক্ষ থেকে লাগাতার সতর্কতা মূলক প্রচার করা হচ্ছে। সাইবার অপরাধের ফাঁদে যাতে কেউ পা না দেয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হচ্ছে। তাও দেখা যাচ্ছে, অনেকে নিজেদের অজান্তে বা অজ্ঞতার কারণে এই ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। সাইবার অপরাধ দিন দিন বাড়তে থাকায় চন্দননগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম সেলকে থানায় পরিনত করা হয়েছে।
ওসি উৎপল সাহার নেতৃত্বে একটি দল অপরাধ দমনের কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিন এই ধরনের অভিযোগ জমা পড়ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাইবার ক্রাইম থানা থেকে সম্প্রতি “সাইবার লাইটস রিসক্ ভিশন” নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে মোবাইল সিম কার্ড কেনা থেকে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করলে কী কী ভাবে প্রতারণার শিকার হতে পারেন তা, ছোট ছোট ভিডিয়োর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। ব্যাঙ্কে প্রতারণা, এটিএম ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে প্রতারণা, মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে প্রতারণা, পুরষ্কারের লোভ দেখিয়ে প্রতারণা এবং সেক্সটরশনের মত প্রতারণার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।