Kalyan Banerjee: ‘কেউ কথা রাখেনি!…আমায় মেনে নিতে হবে’, রাজীবের প্রত্যাবর্তনে ‘অভিমানী’ কল্যাণ

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Oct 31, 2021 | 4:08 PM

Rajib Banerjee: কল্যাণের এই আত্মশ্লাঘা নজর এড়ায়নি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। নিজেকে বারবার ‘কর্মী’ এবং ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যান্য উচ্চ নেতৃত্ব’ এই সম্বোধনের মধ্য়ে দিয়ে কার্যত দলের প্রতি কিছুটা ক্ষোভই প্রকাশ করেন কল্যাণ এমনটাই মনে করেছিলেন  রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা

Kalyan Banerjee: ‘কেউ কথা রাখেনি!...আমায় মেনে নিতে হবে’, রাজীবের প্রত্যাবর্তনে ‘অভিমানী’ কল্যাণ
রাজীবের যোগদানে 'অভিমানী' কল্যাণ, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

হুগলি: অবশেষে আরও এক নেতার ঘরওয়াপসি তৃণমূলে। দিল্লিতে গিয়ে দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ডোমজুড়ের প্রাক্তন বিধায়ক দলে ফিরলেন ত্রিপুরায় গিয়ে! অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা থেকে বিজেপিকে নিশানা করার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ক্ষমা চাইলেন রাজীব। তাঁর প্রত্যাবর্তনে অভিমানের সুর সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) গলায়। ‘দুর্দিনে’ সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতাই স্মরণ করলেন তৃণমূল সাংসদ।

বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার কথায়, “দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আমায় মেনে নিতে হবে। একদা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, দলের কোনও সাধারণ কর্মীকে দুঃখ দিয়ে কোনও বিশ্বাসঘাতককে দলে ফেরানো হবে না। সেখানে, আজ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ‘টপ টু বটম’ করাপ্ট নেতাকে দলে যোগদান করানো হল। নির্বাচনের সময় ডোমজুরে সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন রাজীবের কলকাতায় তিনটে বাড়ি আছে। ওর টাকা দুবাই এ খাটানো হয়। তারপরেও কেন এমন নেতাকে দলে ফেরানো হল, জানা নেই। আজ আমার সুনীল গাঙ্গুলির কবিতা ছিল ‘কেউ কথা রাখেনি’ সেটা মনে পড়ছে। আমি তো দলের সাধারণ কর্মী। যা সিদ্ধান্ত দল নিয়েছে তা মেনে নিতে হবে। ”

প্রসঙ্গত, বিধানসভা নির্বাচনে লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার পর থেকেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের পথে পা বাড়িয়েছিলেন রাজীব। কুণাল ঘোষের সঙ্গে সেরেছিলেন একান্ত সাক্ষাত্‍। পাল্টা তোপ দেগে তখন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “রাজীব-কুণাল বলছে সৌজন্য সাক্ষাৎ। ওরা কি মনে করে ওরাই বুদ্ধিমান আর আমরা সব গরু ছাগল! গত পাঁচ ছয়মাসে কোনও সৌজন্যের সাক্ষাৎ দেখা গেল না, এখন মুকুলবাবু কাল এলেন, তারপর থেকেই সৌজন্য সাক্ষাতের বন্যা বইছে।”

তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, “রাজীব যদি দলে ফেরেন তবে আমাদের তো কিছু বলার নেই। কারণ, শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যান্য উচ্চ নেতৃত্ব। আমাদের কী! আমাদের যা বলা হবে আমরা তাই করব। তবে এই কথাটা ঠিক অনেক কষ্ট করে আমরা ভোটে জিতেছি। রাজীবের ভ্য়ালু যে জিরো, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ইজ় আ জিরো তা আমরা প্রমাণ করে দেখিয়েছি। ওকে আমরা ডোমজুড়ে ৪৩ হাজার ভোটে হারিয়েছি। আমরা সাধারণ কর্মী। শুধু লড়াইটাই করতে জানি। দিদি বলেছিলেন দলে কোনও গদ্দারদের নেবেন না। এখন সেই গদ্দারের প্যারামিটার কতটা আমার জানা নেই। কারণ, কুণাল না জানলেও রাজীব যে দিদির সম্পর্কে কী কী কথা বলেছে তার দশ বারোটা ভিডিয়ো আমার কাছে আছে।”

কল্যাণের এই আত্মশ্লাঘা নজর এড়ায়নি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। নিজেকে বারবার ‘কর্মী’ এবং ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অন্যান্য উচ্চ নেতৃত্ব’ এই সম্বোধনের মধ্য়ে দিয়ে কার্যত দলের প্রতি কিছুটা ক্ষোভই প্রকাশ করেন কল্যাণ এমনটাই মনে করেছিলেন  রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। রবিবার অবশেষে ‘কর্মীর’ ইচ্ছা কার্যত ধোপে টিকল না। যা নিয়ে বেশ খানিকটা ক্ষোভের সুরই যেন এদিন শোনা গেল তৃণমূল সাংসদের গলায়।

বিধানসভা নির্বাচনের পর এভাবে দলবদলুদের ফিরে আসা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ী রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর জোড়াফুলের পক্ষে থাকলেও, দলবদলু নেতাদের এভাবে ঘরে ফেরানোতে দলের আভ্যন্তরীণ সংঘাত কতটা ঠেকানো যাবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বিশেষজ্ঞরা। যদিও, দলবদলকে কেন্দ্র করে সবক্ষেত্রেই ধীরে সুস্থে পদক্ষেপ করছে তৃণমূল। জনগণের বিশ্বাস অর্জনের পাশাপাশি ভিনরাজ্যে নিজেদের জমি পোক্ত করতেই মরিয়া ঘাসফুল এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

আরও পড়ুন: ‘জল্পনা কল্পনায় কান দেওয়ার সময় নেই, কর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত’, ‘ফুলবদল’ মুকুলের, মন্তব্য দিলীপের

Next Article