Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘জল্পনা কল্পনায় কান দেওয়ার সময় নেই, কর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত’, ‘ফুলবদল’ মুকুলের, মন্তব্য দিলীপের

শুক্রবার, বনগাঁয় দলের সাংগঠনিক বৈঠকে এসে মুকুল রায়ের 'ঘরওয়াপসি' নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। পাশাপাশি সিএএ এনআরসি ইস্যু নিয়েও কথা বললেন দিলীপ।

'জল্পনা কল্পনায় কান দেওয়ার সময় নেই, কর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত', 'ফুলবদল' মুকুলের, মন্তব্য দিলীপের
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 12, 2021 | 3:39 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: বিধানসভা নির্বাচনে লক্ষ্য পূরণ না হওয়ার পর থেকেই তৃণমূলে যোগদানের হিড়িক পড়েছে বিজেপির অন্দরে। এ বার, জল্পনা, খোদ সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায় সপুত্র তৃণমূলে যোগ দিতে চলেছেন। সপ্তাহান্তের বারবেলায় তৃণমূল ভবনে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দিয়েছেন মুকুল। ২০১৭-তে দলত্যাগের পর ফের ‘ঘরে ফিরছেন’ মুকুল যা রীতিমতো শোরগোল ফেলেছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে। কিন্তু সেই সমস্ত জল্পনাকে খানিকটা অবজ্ঞা করেই দিলীপ ঘোষ এদিন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এখন জল্পনা কল্পনা, গান গাওয়ার সময় নেই। আমাদের অনেক কর্মী সন্ত্রাসের শিকার। অনেকে ঘরে ফিরতে পারেননি। তাঁদের সুরক্ষা নিয়ে আপাতত চিন্তিত।”

শুক্রবার, বনগাঁয় দলের সাংগঠনিক বৈঠকে এসে মুকুল রায়ের ‘ঘরওয়াপসি’ নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। যদিও, মুকুলকে নিয়ে এর বেশি একটিও কথা খরচ করেননি দিলীপ। সম্প্রতি, বিজেপির অন্দরে দিলীপ-মুকুল-শুভেন্দুর সমন্বয়ের অভাব নজরে পড়েছিল। হেস্টিংসের দলীয় বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন মুকুল। জানিয়েছিলেন, তিনি বৈঠকের খবর জানেন না। ‘নিজের যন্ত্রণায়’ আছেন।  অন্যদিকে, দিলীপবাবু জানান, সকলকেই জানানো হয়েছিল বৈঠকের কথা। কার্যত, বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পরাজয়ের পেছনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রবল হস্তক্ষেপ এবং মুকুলের মতো আদি নেতাকে কার্যত ‘অন্ধকারে’ রেখে দলীয় কর্মসূচি পালন ও প্রচারকাজ চালানো কাল হয়েছিল বলে মনে করেছিলেন বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের একাংশ।

এদিনের বৈঠকে সিএএ এনআরসি ইস্যু নিয়েও কথা বললেন দিলীপ। এদিন, বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা বলেন, “রাজ্যের যে হিংসা সন্ত্রাস ছড়িয়েছে তার খতিয়ান নেওয়া হবে। টিকাকরণের পর থেকেই সিএএ চালু হওয়ার কথা। বিল পাশ হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার সমর্থন করছে না। রাজ্য সরকারের সহযোগিতা না হলে সিএএ চালু করা সম্ভব নয়।” পাশাপাশি, রাজ্যে টিকাকরণ সমস্যা নিয়েও মুখ খোলেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, “রাজ্য়ে টিকা এসেছে। কিন্তু সেই টিকার সমবন্টন হচ্ছে না। বিভিন্ন পৌরসভায় যে টিকাপ্রদান কর্মসূচি চলছে, তাতে, সেখানে নিজেদের লোককে টিকা দেওয়া হচ্ছে। বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।”

শুক্রবার, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর-সহ তিন বিজেপি বিধায়ক। গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস ও বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়াকে এদিন বৈঠকে দেখা যায়নি। সিএএ ইস্যু নিয়ে এর আগেও একাধিকবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপর উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন শান্তনু। বনগাঁতে বিজেপি ভাল ফল করলেও মতুয়া ভোটে বেশ খানিকটা ভাগ বসিয়েছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে বৈঠকে শান্তনু রায়ের অনুপস্থিতি নজর কেড়েছে। যদিও, সাফাইয়ের সুরে দিলীপবাবু জানিয়েছেন, বিধায়করা অনেকেই সেবা কাজ থেকে শুরু করে দলের কর্মীদের খবরাখবর নিতে ব্যস্ত। তাই তাঁরা বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি। পরবর্তীতে বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকে বৈঠকে অনুপস্থিতির কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, মেডিক্যাল চেক-আপের জন্য তিনি কলকাতায় ছিলেন। তাই তিনি বৈঠকে থাকতে পারেননি। ‘মুকুল ঘনিষ্ঠ’ বিশ্বজিৎ আরও জানিয়েছেন তিনি ভবিষ্যতে কী সিদ্ধান্ত নেবেন তা জানাবেন। কার্যত, নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন বিশ্বজিৎ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক এমনটাই দাবি করেছেন বাগদার বিধায়ক। মুকুল রায়ের দলত্যাগের পরেই তাই বিজেপির দলীয় বৈঠকে গরহাজির থাকাকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অন্যদিকে, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তিনি বৈঠকে থাকতে পারেননি। পাশাপাশি, মুকুল রায়ের দলবদল প্রসঙ্গে বলেন, “স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিজেপিতে এসেছিল। পূরণ হয়নি। তাই আগের দলে ফিরে গিয়েছে।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সম্প্রতি, বিজেপির সর্বভারতীয়-সহ সভাপতি মুকুল রায়কেও দেখা যায়নি দলীয় বৈঠকে। বিজেপির সঙ্গে ‘সম্মানজনক দূরত্ব’ রেখেই চলেছিলেন মুকুল। শুক্রবার সরাসরি, তৃণমূল ভবনে বৈঠকে যোগ দেন মুকুল। এ বার, বৈঠকে অনুপস্থিত শান্তনু ঠাকুর। সিএএ না চালু হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন শান্তনু। মতুয়া ভোটের পুরোটাই সিএএ ইস্যুকে তুরুপের তাস করে হাসিল করেছিল বিজেপি। কিন্তু, নির্বাচনে পদ্ম শিবিরের ব্যাপক ভরাডুবির পর সিএএ চালু করা সম্ভব হয়নি। খুব স্বাভাবিক ভাবেই সুর বদলাতে পারেন শান্তনু ঠাকুরও এমনই অনুমান রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের।

আরও পড়ুন: ‘জিন্দাবাদ অনুব্রত, বিজেপি করে ভুল করেছি’, ঘাসফুলে ‘ঘরওয়াপসি’ ২০০ বিজেপি কর্মীর