আরামবাগ : দিন দশেক আগেও আরামবাগে পাথর বিক্রি হত ১৭৫০-১৮৫০ টাকা প্রতি টন দরে। কিন্তু হঠাৎ করেই এক লাফে অনেকটা দাম কমল পাথরের। বুধবারের হিসেব অনুযায়ী আরামবাগ এলাকায় পাথরের দাম কমেছে টন পিছু প্রায় ২৫০ টাকা। ট্রাক ওভারলোডিং করে পাথর আনার যে অভিযোগ উঠত মাঝেমাঝে, তাও এখন কমেছে বলেই জানাচ্ছেন স্থানীয় পাথর ব্যবসায়ীরা। সাম্প্রতিক অতীতে একধাক্কায় পাথরের দাম এতটা কমতে দেখেননি স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। যদিও হঠাৎ করে এভাবে পাথরের দাম কেন কমে গেল? বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ী বা ট্রাকচালকরা কেউই সেভাবে মুখ খুলতে চাইছেন না। তবে আরামবাগ এলাকায় যে পরিমাণ পাথর ঢোকে, তার একটি বড় অংশ আসে বীরভূমের রামপুরহাট, পাঁচামি এলাকা থেকে। আর সম্প্রতি বীরভূমে বেআইনি টোল ভাঙা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। তাহলে কি তারই প্রভাব পড়ল আরামবাগে পাথরের দামে? এমন প্রশ্ন কিন্তু ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, পেট্রোল ডিজেলের দাম যেভাবে বৃদ্ধি হয়েছে, তার সরাসরি প্রভাব পড়েছিল পরিবহন শিল্পের উপর। প্রভাব পড়েছিল পাথর ব্যবসার উপরেও। আরও চড়া হয়েছিল পাথরের দাম। তার উপর সম্প্রতি বীরভূমের বেশ কিছু জায়গায় বেআইনি টোল কিয়স্ক চালানোরও অভিযোগ উঠেছে। সেই পথে পাথরের ট্রাক এলে, স্বাভাবিকভাবেই পাথরের দামও কিছুটা বাড়ত বলে ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু এখন বীরভূমে এমন বেআইনি টোল কিয়স্কগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। ভেঙে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেআইনি টোল কিয়স্ক। আর এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিন দশেক আগে যে দাম ছিল, তার থেকে একধাক্কায় অনেকটা কমেছে পাথরের দাম। বিষয়টি নিয়ে শুধুই কাকতালীয়? নাকি বেআইনি টোলের বিরুদ্ধে বীরভূম জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আরামবাগে আসা পাথরের দামের উপর?
বীরভূমের রামপুরহাট, পাঁচামি থেকে এখন এক একটি ১২ চাকার ট্রাকে ২২-২৩ টন করে পাথর আসছে বলে জানিয়েছে সুবীর কুমার রায় নামে স্থানীয় এক পাথর ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, “পাথরের দাম আগের থেকে অনেকটাই কমেছে। পাথরের দাম আগে প্রতি টন ১৭৫০-১৮৫০ টাকার মধ্যে ছিল। এখন তা ৩০০-৪০০ টাকা কমেছে। এখন আমরা ১৪০০ টাকা প্রতি টন দরে পাথর কিনতে পারছি। কিন্তু এই দাম কতদিন থাকবে বলতে পারছি না। শুনছি আবার একটা চেকিং হবে, তারপর আবার বেড়ে যেতে পারে।” যদিও যে চড়া দামে পাথর কিনতে হচ্ছিল, সেখানে হঠাৎ করেই পাথরের দাম প্রতি টনে ২৫০ টাকা কমে যাওয়ায় খুশি ব্যবসায়ী থেকে নির্মাণকারীরা। যদিও কেন হঠাৎ করে দাম কমল, সেই বিষয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না ট্রাক চালক থেকে ব্যবসায়ীরা।