Uttarakhand: ‘আমফানের চেয়েও বিপদজ্জনক’, পাহাড়চূড়োয় মৃত্যুর অশনিসংকেত, আতঙ্কে চুঁচুড়ার রায় পরিবার

TV9 Bangla Digital | Edited By: tista roychowdhury

Oct 19, 2021 | 2:59 PM

Flood Updates: শুধু, চুঁচুড়ার রায় পরিবারই নয়, বেড়াতে গিয়ে আটকে গিয়েছেন হাওড়ার ১৪ জন পর্যটকের একটি দল। সেখানে ৬ জনের খোঁজ মিললেও বাকি ৮ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

Uttarakhand: আমফানের চেয়েও বিপদজ্জনক, পাহাড়চূড়োয় মৃত্যুর অশনিসংকেত, আতঙ্কে চুঁচুড়ার রায় পরিবার
চুঁচুড়ার রায় পরিবার, নিজস্ব চিত্র

Follow Us

হুগলি: পুজোর পরেই উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) পথে পা বাড়িয়েছিলেন চুঁচুড়ার রায় পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, সেখানে বিপদ যে এভাবে আসবে তা কী করে জানতেন তাঁরা! প্রবল বর্ষণে জায়গায় জায়গায় নেমেছে ধস। ভেসে গিয়েছে একাধিক এলাকা। ভারী বর্ষণে উত্তরাখণ্ডে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৫জনের। সেখানে বেড়াতে গিয়ে রীতিমতো জীবন-মরণ সঙ্কটে ওই বাঙালি পরিবার। তাঁদের অভিযোগ, পরিস্থিতি এত ভয়াবহ হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ কোনও সহযোগিতা করছে না।

গত ১৫ অক্টোবর পূর্বা এক্সপ্রেসে রওনা হয়ে ১৭ তারিখ কেদারে পৌঁছন বিশ্বজিত্‍ রায় ও তাঁর পরিবার। সদস্য বলতে বিশ্বজিত্‍বাবুর স্ত্রী চুমকি ও মেয়ে অন্বেষা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন অরিজিত্‍ শীল ও সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়। এদিকে গোটা উত্তরাখণ্ড জুড়ে শুরু হয়েছে  ভারী বর্ষণ (Heavy Rain Fall)। নেমেছে ধসও। ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে চলছে ঝড়। বাধাপ্রাপ্ত উদ্ধারকার্য। কেদারনাথে যে হেলিকপ্টার সার্ভিস ছিল তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে, পাহাড়েই আটকে থাকতে বাধ্য হয়েছে রায় পরিবার। এদিকে তাঁদের সঙ্গী অরিজিত্‍ ও সত্যব্রত ঝুঁকি নিয়ে গৌরীকুণ্ডে পৌঁছতে পারলেও বিশ্বজিত্‍বাবুর পরিবার তা পারেননি। কেদার থেকে বদ্রীনাথ, গুপ্তকাশী, লক্ষ্ণৌ হয়ে  আগামী ২৪ তারিখ ফেরার কথা ছিল বিশ্বজিতবাবুদের। কিন্তু, বাদ সেধেছে আবহাওয়া।

চুমকিদেবীর কথায়, “আমাদের এতক্ষণে এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, বৃষ্টির জন্য আর পেরে উঠিনি। বাংলায় যেরকম আমফানের ভয়াবহতা দেখেছি এখানেও তেমন ভয়ঙ্কর ঝড়। আমফানের চেয়েও বিপদজ্জনক!  আমাদের হোটেল ছাড়তে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোথায় থাকব সেটাই বুঝতে পারছি না। নীচে না নামা পর্যন্ত সুরক্ষিত রয়েছি এমনটা বলতে পারব না। যে হারে ঝড় হচ্ছে কখন কী হবে তা জানা নেই। আমার স্বামী কোনওরকমে ঝুঁকি নিয়ে ঘর খুঁজতে বেরিয়েছেন। রেল সার্ভিসও বন্ধ। যদি পাওয়া যায় তবে ট্রেনেই ফিরব যেভাবেই হোক না কেন। পুলিশ কোনও সহযোগিতা করছে না। এত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি, আমরা বাইরে থেকে এসেছি, সব কিছু জানি না। অথচ,প্রশাসনকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। কোনওরকম সহযোগিতা পাইনি।”

এদিকে, বিশ্বজিত্‍বাবুদের আটকে যাওয়ার ঘটনায় কার্যত উদ্বিগ্ন চুঁচুড়ায় রায় পরিবার। বিশ্বজিত্‍বাবুর দাদা কেদার রায় বলেন, “প্রথমে তো ছবিটবি দিচ্ছিল। কিন্তু আচমকা আটকে পড়েছে। আমরা বুঝতে পারছি না কী করব। ওদের যেভাবে হোক ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। জানি না ফিরতে পারবে  কিনা। ওখানে তো ইলেকট্রিসিটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মোবাইলেও যোগাযোগ করব যে সম্ভব হচ্ছে না। দেখা যাক কী হয়! আমরা এখানে থানাকে জানিয়েছি। রেলেও যোগাযোগ করছি।”

শুধু, চুঁচুড়ার রায় পরিবারই নয়, বেড়াতে গিয়ে আটকে গিয়েছেন হাওড়ার ১৪ জন পর্যটকের একটি দল। সেখানে ৬ জনের খোঁজ মিললেও বাকি ৮ জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাঁদের খোঁজ করা হচ্ছে। প্রবল বৃষ্টিতে নদীর জল স্তর এতটাই ফুলে-ফেঁপে উঠতে শুরু করেছে যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিপর্যয়ের ছবি সামনে আসছে। চার ধামের জন্য বিখ্যাত এই রাজ্যে আটকে রয়েছেন প্রায় দেড়হাজার পর্যটক।

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সামনে আসো ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, জলের তোড়ে নিমেষের মধ্যে নদীর গ্রাসে চলে যাচ্ছে আস্ত সেতু। নৈনিতাল হ্রদের জল বেড়ে প্রবল গতিতে ঢুকে পড়ছে আশেপাশের এলাকায়। ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামিকে ফোন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এখনও পর্যন্ত উত্তরাখণ্ডে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে ছিলেন নেপালের তিন শ্রমিক। চম্পাওয়াত জেলায় ধসের জেরে বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হয়েছে আরও দুজনের। পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে চার ধাম যাত্রা। যে সকল তীর্থযাত্রী ইতিমধ্যেই হরিদ্বার বা হৃষিকেশে পৌঁছেছেন, তাঁদের আপাতত পাহাড়ের দিকে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখতে দেরাদুনে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সেই কন্ট্রোল রুম ইতিমধ্যেই পরিদর্শন করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি।

কেদারনাথ থেকে ফেরার সময় আটকে পড়েছিলেন ২২ জন তীর্থযাত্রী। আজ সকালে তাঁদের উদ্ধার করেছে রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। যদিও আপাতত চারধাম যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ৪৮ ঘন্টা ধরে টানা বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বদ্রীনাথ ন্যাশনাল হাইওয়ে। চামোলি জেলার অন্তত সাতটি জায়গায় ধস নেমেছে। আবহাওয়া ঠিক না হওয়া পর্যন্ত তীর্থযাত্রীদের পাহাড়ের দিকে যেতে নিষেধ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: Child Death: ‘ছেলেটার মুখও দেখতে পারলাম না…’ ২৪ ঘণ্টা না পেরতেই হাসপাতালেই মৃত্যু সদ্যোজাতর!

 

Next Article