হুগলি: শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা বিদ্যুৎ দফতরের গ্রুপ ডি কর্মী ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর বলাগড়ের সোমড়াবাজার বিদ্যুৎ দফতরে গ্রুপ ডি পদে চাকরি পান শান্তনু। সেই শান্তনু আপাতত নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়ে ইডি হেফাজতে। হুগলির যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাকরি জীবন কেমন ছিল তা জানতে সোমড়াবাজার বিদ্যুৎ দফতরে গিয়েছিল টিভি নাইন বাংলা। এই গ্রুপ ডি কর্মীদের মূলত কাজ, বাড়ি বাড়ি মিটার চেক করা অথবা নতুন কোনও সংযোগ হলে তা জুড়তে যাওয়া। তবে এই দু’টির মধ্যে কোনও কাজই কোনওদিন করতে দেখা যায়নি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাহলে কী কাজ করতেন শান্তনু? কেউ বলতেই পারছেন না।
বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্মী ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে না চাইলেও জানান, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় কোনওদিন ফিল্ডে বেরিয়ে কাজ করেননি। তবে মাসের একদিন এসে লগবুকে সই করে যেতেন। আবার কোনও কোনও সময় তাঁর বাড়িও যেত সেই লগবুক বলে দাবি তাঁর। কীভাবে তা বাইরে যেত, কে নিয়ে যেতেন সেসব জবাব এখনও অধরা। তবে কাজে না এসেও মাসের পর মাস মোটা অঙ্কের মাইনে তুলতেন তিনি।
তাঁর কর্মস্থল সোমড়াবাজার বিদ্যুৎ দফতরের স্টেশন ম্যানেজার আসিফ ইকবালকে সোমবার পাওয়া গেলেও একটি প্রশ্নের জবাব দিতে চাননি। বারবারই বলেছেন, এভাবে কথা বলার এক্তিয়ার তাঁর নেই। আসিফের বক্তব্য, “দেখুন আমি এটা নিয়ে কিছু বলতে পারব না। বারবারই একই অনুরোধ করছি, আমার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার এক্তিয়ার নেই। ওনাকে দেখেছি। তবে কারও ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে তো আমি বলতে পারব না। সকলের সঙ্গে ভাল ব্যবহারই করতেন। এর বেশি কিছু জানতে হলে উপরে গিয়ে কথা বলুন।”
কেন এখনও মুখ খুলতে চাইছেন না শান্তনুর কর্মস্থলের লোকেরা। এর পিছনে কি কোনও ‘প্রভাবশালী’র ‘প্রভাব’ কাজ করছে। এখনও অবধি ৩৫০ কোটি টাকার এই দুর্নীতি বলে মনে করছে ইডি। অঙ্ক আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়ে রেখেছে তারা। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, এত টাকার কেলেঙ্কারির অভিযোগ, প্রভাবশালীর হাত তো থাকবেই। সেই জোরেই কি শান্তনুর এমন রাজপাট, রাজকীয় যাপন, উঠছে প্রশ্ন।