কাঁথি: ২০১২ সাল থেকে টানা ১১ বছর ধরে পূর্ব মেদিনীপুর (East Medinipur) পাশের হারে রাজ্যে প্রথম হচ্ছে। বছর বছর বাড়ছে পাশের হারও। রাজ্যে যেখানে এবার পাশের হার প্রায় ৮৭ শতাংশ, সেখানে পূর্ব মেদিনীপুরে মাধ্যমিকে (Madhyamik Exam) পাশের হার ৯৭.৬৩ শতাংশ। শুধু তাই নয়, মেধা তালিকাতেও রয়েছে জেলার ১৬ জন কৃতী। এবার জেলায় মোট মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল ৬৪ হাজার ৮১১ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৩১ হাজার ১৬ জন ও ছাত্রী সংখ্যা ৩৩ হাজার ৭৯৫ জন। মেধার সাফল্যকে ছাপিয়ে আলোচনার কেন্দ্রে পাশের হারে জেলার লাগাতার সাফল্য।
পাশের হারে শীর্ষে ও মেধায় জেলার ছেলেমেয়েদের এগিয়ে থাকা প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শুভাশিস মিত্র বলেন, “পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় পড়াশোনার একটা সংস্কৃতি আছে। এটাই এই ধারাবাহিকতার একটা বড় দিক। অভিভাবক-অভিভাবকরা ভীষণভাবে সচেতন। তাঁরা শিক্ষার মূল্য বোঝেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও আন্তরিকতা রয়েছে। সব মিলিয়ে গণশিক্ষার একটা ভাল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। জেলার নামকরা স্কুল যে এখানে বরাবর এগিয়ে থাকে তা নয়। গ্রামগঞ্জের স্কুলও ভাল ফল করছে। তার থেকেই বোঝা যায় শিক্ষা কেবল একটি অংশের মধ্যে সীমাবব্ধ নেই। পুরো জেলা জুড়েই ছড়িয়ে আছে। যে কারণে এত ভাল ফলাফল হচ্ছে”।
মাধ্যমিকের জেলা কনভেনর সুব্রত বেরার কথায়, “ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকের সমন্বয়ই এ জেলার শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করেছে। তাছাড়া এ জেলার ছেলেমেয়েদের মধ্যে হার না মানার একটা মানসিকতা রয়েছে। যা তাদের সাফল্যের পথে এগিয়ে নিয়ে চলেছে”। জেলার এগরা থানার চোরপালিয়া শ্রী শ্রী বাসন্তী বিদ্যাপীঠের ছাত্রী দেবশিখা প্রধান রাজ্যে তৃতীয় হয়েছে। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯১। হলদিয়ার দক্ষিণচক হাইস্কুলের ছাত্রী পৌলোমী বেরা হয়েছে পঞ্চম। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৯। ৬৮৮ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে কাঁথি হিন্দু গার্লসের ছাত্রী সমতা কুইলা ও ভগবানপুরের মানিকজোড় কামিনী কুমারী হাইস্কুলের ছাত্র প্রতীক মাইতি। ৬৮৭ পেয়ে মেধা তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে কাঁথির কিশোরনগর শচীন্দ্র শিক্ষাসদনের ছাত্র সায়ন্তন মাইতি। ৬৮৬ পেয়ে অষ্টম স্থানে রয়েছে জেলার ৩ জন।
তালিকায় রয়েছে কোলাঘাট থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট হাইস্কুলের ঈশিতা সামন্ত, চণ্ডিপুরের হাঁসচড়া মৃত্যঞ্জয় ধনঞ্জয় হাইস্কুলের সরস্বতী গায়েন ও হলদিয়ার বিবেকানন্দ মিশন আশ্রম শিক্ষায়তনের অনিশ ঘোড়াই। ৬৮৪ নম্বর পেয়ে দশম হয়েছেন ৮ জন। তালিকায় রয়েছেন কাঁথি হিন্দু গার্লস হাইস্কুলের প্ৰত্যুষা মিশ্র, অনুষ্কা পাহাড়ি, কাঁথির কিশোরনগর শচীন্দ্র শিক্ষাসদনের অর্ঘ্যদীপ মাইতি, এগরার জ্ঞানদীপ বিদ্যাপীঠের সৌম্যদীপ প্রামাণিক, তমলুক হ্যামিল্টন হাইস্কুলের শৌনক প্রামাণিক, আলেখ্য বর, তমলুকের রাজকুমারী সান্তানাময়ী গার্লস হাইস্কুলের তন্নিষ্ঠা দাস ও চণ্ডীপুরের কান্ডপশরা দেশপ্রাণ হাইস্কুলের সৌম্যদীপ শেঠ। জেলার এমন ধারাবাহিক সাফল্যে খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে অভিভাবকমহলের প্রত্যেকেই।