হাওড়া: নাজিরগঞ্জের শতাব্দী প্রাচীন রং প্রস্তুতকারক সংস্থায় স্থানীয় এক তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতার বিরুদ্ধে তোলবাজির অভিযোগ আগেই উঠেছিল। কর্তৃপক্ষের তরফে থানাতেও দায়ের হয়েছিল অভিযোগ। ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ রায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে যা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানালেও তার ঠিক দুদিন পর অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার পাশে দাঁড়ালেন জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ। কল্যাণ ঘোষের স্পষ্ট দাবি, ওই সংস্থার বহু পুরানো কর্মচারী বর্তমানে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। বকেয়া টাকা পাচ্ছেন না শ্রমিকরা। এরই প্রতিবাদ করায় সাজ্জাদ আলীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। একদিকে মন্ত্রী এক কথা বলছেন, আর অন্য কথা বলছেন এলাকার বিধায়ক। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তা নিয়ে চাপানউতর বাড়ছে জেলার রাজনৈতিক মহলে। তবে কী মাথাচাড়া দিচ্ছে গোষ্ঠী কোন্দল? উঠছে সেই প্রশ্নও।
এদিকে সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “দল এ ধরনের কার্যকলাপকে কোনওভাবেই সমর্থন করে না। দলের নাম করে কেউ তোলাবাজি, গুন্ডামির কাজ করলে পুলিশ এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে। আমার কাছে যদি অভিযোগকারীরা আসেন বা বলেন তাঁরা পুলিশে সাহায্য পাচ্ছেন না তাহলে আমি নিশ্চয় অবিলম্বে পুলিশ কমিশনারকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলব।” তোলাবাজির ঘটনায় শাসক দলের নেতার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় জেলার রাজনৈতিক মহলে চলছে শোরগোল। কিন্তু, তাতে কী দলের বদনাম হচ্ছে? বাড়ছে অস্বস্তি? উত্তরে অরূপ রায়ের স্পষ্ট উত্তর, “তবে দল আসলে সমুদ্রের মতো। পাড়ার কোনও তোলাবাজের জন্য দলের বদনাম হয় না।” যদিও অভিযুক্ত সাজ্জাদের পাশে দাঁড়িয়ে জেলা সভাপতি তথা ডোমজুড় বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষের দাবি, “সাজ্জাদ খুবই ভাল ছেলে। আমি যা জানতে পেরেছি ওই কোম্পানি তাঁদের শ্রমিকদের খুবই কষ্টের মধ্যে রেখেছে। প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গিয়েছিল সাজ্জাদ। তাই ওর নামে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।” যে অভিযোগ উঠছে তা পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন এলাকার তৃণমূল নেতা সাজ্জাদও।
পাল্টা কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় তুলে তিনি বলেন, “একশো বছরের বেশি বয়স করাখানাটার। কিন্তু, প্রোডাকশনে সমস্যা আছে। মালই তৈরি হয় না। সেখানে তোলা তোলার কোনও প্রশ্নই হয় না। আমাদের এখানে যে সকল কর্মীরা কাজ করত তাঁরা দীর্ঘদিন সমস্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাঁদের বকেয়া টাকা পায়নি। আমাদের শ্রমিক সংগঠনও এ নিয়ে আওয়াজ তুলেছিল এ নিয়ে। লেবার কমিশনেও অভিযোগ করা হয়েছিল। এরইমধ্যে কিছু শ্রমিক আমার কাছে আসে। তাঁদের সমস্যার কথা বলে। এরপরই আমরা কারখানায় যাই। কিন্তু, আমাদের কারখানায় ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। সিসিটিভি ক্যামেরা আছে। আমার কথা যাচাইও করে নেওয়া সম্ভব। আর ফোনে যদি কাউকে ধমকালে বা তোলা চাইলে সে প্রমাণও ওদের কাছে থাকবে। তা থাকলে, আমার দোষ প্রমাণ হলে আমার যা শাস্তি হবে তা আমি মাথা পেতে নেব।”