হাওড়া: বর্ষায় জল জমা এ শহরের নতুন গল্প নয়। অভিযোগ, দাবি, বিক্ষোভ দীর্ঘদিনের ঘটনা। প্রতিবার ভোটের সময় কোথাও না কোথাও প্রার্থীদের কাছে এলাকাবাসীর দাবি থাকে যেন নিকাশি সংস্কারের কাজ হয়। তাই সেই উদ্যোগ নিল হাওড়া পুরসভা। অন্যান্যবারের মতো এবারও বর্ষার সময় হাওড়া শহর যেন জলের তলায় চলে না যায় তার জন্য চলতি বছরের মার্চ মাস থেকেই শহরে নিকাশি সংস্কারের কাজ শুরু করে দিতে চাইছে পুরসভা।
জল জমা রুখতে শহরের ড্রেন পরিষ্কার বা নিকাশি সংস্কারের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করলো পুর কর্তৃপক্ষ। একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে এই নিকাশি সংস্কারের কাজটি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। শহরে যে সমস্ত এলাকায় বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জন্য জল জমে, এমন ১৪টি ওয়ার্ডকে চিহ্নিত করেছেন নিকাশি বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা। সেই ওয়ার্ডগুলির নালা বা বড় ড্রেন,নর্দমা ও জলাশয় পরিষ্কারের মাধ্যমে এই সংস্কার করা হবে।
যে সংস্থাকে নিয়োগ করা হবে সেই সংস্থা আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির সাহায্যে হাইড্রেনগুলি পরিষ্কারের কাজ করবে। একই সঙ্গে ওই ড্রেনগুলি এক বছর রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বও নেবে বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার পুরসভায় নিকাশি নিয়ে একটি বৈঠকের পরই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে নিকাশি বিভাগের ইঞ্জিনিয়ার ও পুরসভার পদস্থ আধিকারিকরা এই বৈঠক করেন। বৈঠকের পর সুজয় চক্রবর্তী জানান, “জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই দু’ মাস পুরোপুরি পরিকল্পনা করার পর মার্চ মাস থেকেই রাস্তায় নেমে নালা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়ে যাবে যাতে বর্ষায় ফের শহরের বাসিন্দাদের জমা জলের ভোগান্তিতে পড়তে না হয়।”
তাঁর কথায়, নিকাশি নালার সংস্কারের মধ্যে বেলগাছিয়া এলাকার কাশিপুরের একটি বড় ড্রেন রয়েছে। ওই ড্রেনটির আমূল সংস্কার করা হবে। একই সঙ্গে রামরাজাতলারও কিছু এলাকায় নিকাশি নালাগুলির সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। হাওড়া শহরের যে ১৪টি ওয়ার্ডের নিকাশির সংস্কার করা হবে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলি হল ৭, ৮, ৯, ২০, ২১, ২২, ৪৭, ৪৮, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের মতো ওয়ার্ড। এছাড়া ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে বাকি ৩৬টি ওয়ার্ডে প্রতি ওয়ার্ডে একটি করে সংস্থাই নিকাশি সংস্কারের কাজ করবে বলে এদিন বৈঠকে স্থির হয়েছে। এতদিন একটি সংস্থা একাধিক ওয়ার্ডে এই সংস্কারের কাজ করতো।
এছাড়া, এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়, সাধারণত আবর্জনায় নালা বুঝে যাওয়াতে বৃষ্টির জমা জল শহর থেকে বেরোতে পারে না। তাই নিকাশি সংস্কারের পাশাপাশি সাফাইয়ের উপরও জোর দেওয়া হয়। এদিন বৈঠকে ঠিক হয় যত্রতত্র জঞ্জাল যাতে কেউ না ফেলেন সেজন্য বিভিন্ন এলাকায় বিশেষত বাজারগুলিতে পুরসভার ময়লা ফেলার গাড়ি রাখা থাকবে। বাসিন্দাদের ওই গাড়িতেই ময়লা ফেলতে হবে। পরে সাফাই কর্মীরা ওই গাড়িগুলি নিয়ে চলে যাবেন। আপাতত ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে কালিবাবুর বাজারে ২ টো গাড়ি রাখা থাকবে। পরবর্তীতে অন্যান্য বাজারগুলিতেও এ ধরনের আবর্জনার গাড়ি রাখার পরিকল্পনা রয়েছে পুরসভার।
পুরসভার আধিকারিকদের অনুমান, রাস্তার ধারের নর্দমায় প্যাকেটে করে জঞ্জাল ফেলার বদ অভ্যাস কমানো গেলে শহরের নিকাশি ব্যবস্থা অনেকটাই ঠিক হয়ে যাবে। বৃষ্টির জমা জল সহজেই নালার মাধ্যমে বেরোতে পারবে।
আরও পড়ুন: Narendra Modi: বুধে তামিলনাড়ুতে ১১ টি মেডিকেল কলেজের উদ্বোধনে নমো