Corona hits Business: মঙ্গলাহাটে ৩ দিন বন্ধ বিকিকিনি, লাগাম ছাড়া করোনা সংক্রমণে সিদ্ধান্ত হাওড়া জেলা প্রশাসনের

Howrah: রবি, সোম ও মঙ্গলবার মঙ্গলাহাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল জেলা প্রশাসন।

Corona hits Business: মঙ্গলাহাটে ৩ দিন বন্ধ বিকিকিনি, লাগাম ছাড়া করোনা সংক্রমণে সিদ্ধান্ত হাওড়া জেলা প্রশাসনের
করোনার কোপে বাজার। নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 15, 2022 | 5:55 PM

হাওড়া: জেলায় উর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফ। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গতকাল পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪,০২২ জন। করোনা সংক্রমণের দিক থেকে কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনার পরই রয়েছে হাওড়া। করোনার এই বেলাগাম পরিস্থিতিতে হাওড়া ময়দান চত্বরে মঙ্গলাহাটে বেচাকেনা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছিল জেলা প্রশাসনের। আর তাই সংক্রমণ ঠেকাতে আগামী সপ্তাহে রবি, সোম ও মঙ্গলবার মঙ্গলাহাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার মঙ্গলাহাট নিয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করা হয়। সেই বৈঠকেই ঠিক হয় আপাতত তিন দিন বন্ধ রাখতে হবে হাট। এরপর গোটা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে মঙ্গলাহাট আরও কিছুদিন বন্ধ রাখা হবে কি না তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এদিন হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য, পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর ও হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেন। বৈঠকের পর মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী জানান, যে জায়গায় মঙ্গলাহাটটি বসে তার সামনেই রয়েছে হাওড়া জেলা হাসপাতাল। এই হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের পাশাপাশি করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্যও শয্যা রয়েছে। হাটে যেহেতু প্রচুর মানুষের সমাগম হয় তাই সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যায়। এই আশঙ্কা থেকেই মঙ্গলাহাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তবে হাট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই মঙ্গলাহাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মঙ্গলাহাট সমম্বয় ব্যবসায়ী সমিতির সহ সম্পাদক কানাই পোদ্দার। তাঁর কথায়, সব হাট খোলা থাকলেও মঙ্গলাহাটের ব্যাপারে কেন বন্ধ করার তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত হল তা তাঁরা প্রশাসনের কাছে জানতে চান। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে কামাক্ষ্যা সাহা ও পরিমল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এতো একযাত্রায় পৃথকফল! বাকি সব হাট খোলা থাকবে অথচ হাওড়া হাট বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এটা প্রশাসনের ঠিক সিদ্ধান্ত হল না।’’

করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রাজ্যজুড়ে বিধিনিষেধ চালু হলেও হাওড়া ময়দানের মঙ্গলাহাটে বিধি উড়িয়েই গত সোমবার ভিড় দেখা গিয়েছিল। সামাজিক দূরত্ববিধি শিকেয় তুলে ক্রেতা-বিক্রেতারা মাস্ক না পরে কিংবা কেউ কেউ আবার থুতনির নীচে মাস্ক নামিয়ে বেচাকেনায় মেতেছিলেন। হাওড়া জেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়লেও মঙ্গলাহাটে অনেকের মধ্যেই সেই নিয়ে কোনও সচেতনতা দেখা যায়নি। হাওড়া জেলা হাসপাতালের মতো করোনা হাসপাতাল, হাওড়া পুরসভা, হাওড়া থানা, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর, জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনারের দফতরের মতো বিভিন্ন সরকারি দফতরের সামনে কীভাবে কোভিড বিধি না মেনে মঙ্গলাহাটে ভিড় হচ্ছে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন স্থানীয়রা। অবশেষে সংক্রমণ ঠেকাতে মঙ্গলাহাট বন্ধের সিদ্ধান্তই নিল প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে মঙ্গলাহাটে ১১টি বিল্ডিংয়ে হাট বসে। এছাড়াও প্রচুর ব্যবসায়ী ফুটপাতে জামাকাপড় নিয়ে বসেন। বহুবছর ধরেই হাওড়া ময়দান চত্বরে এই বস্ত্র হাট চলে আসছে। হাওড়া তো বটেই হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মেদিনীপুরের মতো দূরবর্তী জেলা এমনকী ভিনরাজ্য থেকেও ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন। এই মঙ্গলাহাটের সঙ্গে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার ব্যবসায়ী যুক্ত। প্রতি সপ্তাহে সোম ও মঙ্গলবার ২ দিন হাট বসে। রবিবার থেকেই বস্ত্র ব্যবসায়ীরা তাঁদের পসরা নিয়ে হাটে চলে আসেন। এই হাটে প্রচুর মানুষের সমাগম ঘটে। ফলে এই এলাকায় করোনা সংক্রমণের প্রবল সম্ভাবনা থেকেই যায়। সচেতনতার অভাবে এই আতঙ্ক আরও বাড়ে। উল্লেখ্য, ২০২০ ও ২০২১ সালে করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউ চলার সময় একাধিকবার দফায় দফায় মঙ্গলাহাট বন্ধ হয়েছে। পরবর্তীতে গতবছর জুলাই মাসে শেষবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে খুলে দেওয়া হয় শতাব্দী প্রাচীন অন্যতম এই বস্ত্র হাটটি।

আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘বউয়ের কোভিড হয়েছে আর বাবুন ঘুরে বেড়াচ্ছে, আমি একদম পছন্দ করি না’