হাওড়া: অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। ওপার বাংলা থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসে পৌঁছল রুপোলি শস্যের ঝাঁক (Hilsa)। বুধবার রাতেই বাংলাদেশ (Bangladesh) থেকে পেট্রাপোল বেনাপোল সীমান্ত হয়ে ইলিশ বোঝাই লরি এ রাজ্যে ঢোকে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হাওড়া পাইকারি মাছ বাজারের শুরু হয়েছে ইলিশের বেচাকেনা।
সম্প্রতি বাংলাদেশের সচিবালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, ১১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী। আর তার আগেই ২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ পৌঁছবে পশ্চিমবঙ্গে। বাংলাদেশ বাণিজ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছিল, আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে ধাপে ধাপে ইলিশ যাবে ওপার বাংলা থেকে।
প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ মেট্রিক টন ইলিশ আমদানি করা হবে এ ভারতে। বুধবার থেকেই শুরু হয় সেই পর্ব। বৃহস্পতিবার হাওড়ার বাজারগুলিতে পদ্মার ইলিশ চাখার জন্য উৎসুক খাদ্যরসিক বাঙালির লম্বা লাইন দেখা গিয়েছে। কেজি প্রতি ৭০০ থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে রয়েছে এই ইলিশ।
গত সোমবার বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক কলকাতায় ২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ পাঠানোর অনুমতি দেয়। সিদ্ধান্ত হয়, ৫২ টি বাণিজ্যিক সংস্থা ৪০ মেট্রিক টন করে ইলিশ মাছ এপার বাংলায় পাঠাবে। সেই অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাতেই এই মরসুমের প্রথম পদ্মার ইলিশ ঢুকল।
আগামী ১০ই অক্টোবরের মধ্যেই ২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ এখানে পৌঁছে যাবে। বেশিরভাগ মাছের ওজনই হবে এক কিলো বা তার বেশি। নিলামে মাছের দাম ঠিক হবে। ব্যবসায়ীরা জানান, দাম পদ্মার ইলিশের দাম কেজি প্রতি ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা পর্যন্ত উঠতে পারে। পরে এই মাছ ছড়িয়ে পড়বে কলকাতার সবকটি বড় বাজারে।
এ বছর দীঘা, শঙ্করপুর, কাকদ্বীপ এবং ডায়মন্ডহারবার থেকে সেভাবে ইলিশ আসেনি। যতটুকু ইলিশ ধরা পড়েছিল তা খোকা ইলিশ। বাংলাদেশের ইলিশ ঢোকায় এবার বড় ইলিশের ঘাটতি মিটবে। বাঙালির পাতে দেখা যেতে পারে পদ্মার রুপোলী শস্য।
২০১২ সাল থেকে ভারতে ইলিশ রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বাংলাদেশ সরকার। তবে উৎসবের মরসুমে, বিশেষ করে দুর্গাপুজোর সময় মাঝে মধ্যেই পদ্মার ইলিশের উপর রফতানিতে ছাড় দিয়েছেন শেখ হাসিনা। গত বছরও প্রায় ৫০০ টন ইলিশ এসেছিল বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের মরসুমে।
বুধবার রাতেই তিনটি ট্রাকে ১৬ টন ইলিশ এসে পৌঁছয় ভারতে। চলতি সপ্তাহে শেখ হাসিনার সরকার এই ইলিশ-আগমনের ঘোষণা করার পর থেকেই মুখিয়ে রয়েছে রসনাপ্রিয় বাঙালি। ভাজা হোক কিংবা সর্ষের মাখা বা বেগুন-কালোজিরে দিয়ে পাতলা ঝোল। যে রূপেই সে পাতে পড়ুক না কেন, পাত ফাঁকা হতে মোটে সময় লাগে না। এ বার বাজারে ইলিশ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বলা হয়েছে, খোকা ইলিশকে এক গাদা দাম হাঁকিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। পদ্মার ইলিশ আসায় এবার সে খেদ খানিক কমবে বলেই মনে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Road Accident: ভয়ঙ্কর পথদুর্ঘটনা! কাদার পাঁক থেকে তুলে আনা হচ্ছে একের পর এক মৃত পরিযায়ী শ্রমিক