Howrah: চাচী! বাংলায় একের পর এক ভয়ঙ্কর অপরাধের প্ল্যান ছকেছেন, গ্যাংস্টার সুবোধ সিংয়ের সঙ্গী, এতদিন দু’রাজ্যের পুলিশকে ঘোল খাওয়াচ্ছিলেন ডাকাতসর্দার

Howrah: পুলিশ সূত্রে খবর,  ডাকাতির ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত মনীশ মাহাতো চাচীর আত্মীয়। তিনি ডোমজুড়ের আলমপুরে রবীন্দ্র সাহানির সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকত। গত ১১জুন দুপুর বেলায় ডাকাতির সময় মোট ৬ জন ডাকাত 'টোটাল অপারেশন' করেন।

Howrah: চাচী! বাংলায় একের পর এক ভয়ঙ্কর অপরাধের প্ল্যান ছকেছেন, গ্যাংস্টার সুবোধ সিংয়ের সঙ্গী, এতদিন দু'রাজ্যের পুলিশকে ঘোল খাওয়াচ্ছিলেন ডাকাতসর্দার
কে এই চাচী? Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 11, 2024 | 5:33 PM

 হাওড়া: শ্যামলা, দুগলা-পাতলা গরন। পরনে শাড়ি। কপালে সিঁদুর। আদ্যোন্ত একজন গ্রাম্য বধূ। বাংলার বুকে একের পর এক অপরাধের তিনি নাকি চক্রী! তিনিই নাকি গোটা অপারেশনের প্ল্যান ছকে দিতেন! এমনকি বিহারের গ্যাংস্টার সুবোধ সিংয়ের দলের হয়েও কাজ করেছেন তিনি! পোশাকি নাম চাচী! ডোমজুড় সোনার দোকান ডাকাতির ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিহার পুলিশের এসটিএফ এবং হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দাদের হাতে এখনও পর্যন্ত এক মহিলা সহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর এই ডাকাতির কিংপিন রবীন্দ্র সাহানি। তাঁকে সব রকম সাহায্য করে এক গৃহবধূ আশা দেবী ওরফে চাচী। এছাড়াও রয়েছে বিকাশ কুমার ঝা, অলক কুমার পাঠক এবং মনীশ কুমার মাহাতো। তাঁদের মধ্যে অলকের বাড়ি বেগুসারাই। বাকিদের বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কে এই চাচী ? কীভাবে তিনি ডোমজুড়ের সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনায় জড়িয়ে পড়লেন? হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর ‘চাচী’র আসল নাম আশা মাহাতো (৪৯)। বাড়ি বিহারের সমস্তিপুরে। বাড়িতে স্বামী ছাড়াও দুই মেয়ে এবং এক ছেলে রয়েছে। জানা গিয়েছে, ডোমজুড়ের ডাকাতির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রবীন্দ্র সাহানির সঙ্গে অনেকদিন ধরে তিনি কাজ করছিল। আগে বিহারের গ্যাংস্টার সুবোধ সিংয়ের দলের হয়েও কাজ করতেন।

হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী জানিয়েছেন চাচির পরিচয় চাচি ৪২০। ডোমজুড়ের সোনার দোকানে ডাকাতিতে সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্টের ব্যবস্থা করে। ডাকাতদের জন্য সে থাকার বন্দোবস্ত করে দেয়। এছাড়াও পুরনো বাইক কেনার বন্দোবস্ত করে। যে বাইকগুলো ডাকাতির কাজে রেইকি এবং অপারেশনের সময় ব্যবহার করা হয়। এমনকি কিভাবে লুটের পর গয়না নিয়ে পালাতে হবে সেই পরিকল্পনা সঙ্গেও যুক্ত ছিল। সবটাই তিনি করেন বিহারে বসে। এর জন্য তিনি মোটা টাকা পান। সে অপারেশনে যুক্ত মনীশ মাহাতোর আত্মীয়।

পুলিশ সূত্রে খবর,  ডাকাতির ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত মনীশ মাহাতো চাচীর আত্মীয়। তিনি ডোমজুড়ের আলমপুরে রবীন্দ্র সাহানির সঙ্গে ভাড়া বাড়িতে থাকত। গত ১১জুন দুপুর বেলায় ডাকাতির সময় মোট ৬ জন ডাকাত ‘টোটাল অপারেশন’ করেন। সেই দিন ডাকাতরা প্রায় চার কোটি টাকার সোনা ও হীরের গয়না লুঠ করে চম্পট দেয়। দোকানে রিভালবার হাতে ঢুকেছিল মনিশ মাহাতো এবং বিকাশ ঝা। বাইরে আরো দুজন অপেক্ষা করছিল।

ডাকাতির পর জাতীয় সড়ক ধরে তারা ডানকুনির দিকে চম্পট দেয়। রাস্তায় জামা কাপড় বদলে ফেলে। জনাই স্টেশনে কাছে বাইক ফেলে তাদের কয়েকজন ট্রেন ধরে বিহারে পালায়। হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দারা সিসিটিভি ফুটেজের পরীক্ষা এবং হিন্দি ভাষায় কথার সূত্র ধরে ডাকাতিতে বিহারের যোগ খুঁজে পান। সিট গঠন করা হয়। সেই সিটের অফিসাররা বিহার পুলিশের এসটিএফ-এর সঙ্গে কাজ করে এই ঘটনার কিনারা করেন। ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে হাওড়ায় নিয়ে আসা হবে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে ডাকাতরা লুঠের গয়না বিক্রি করে দিয়েছে এবং তা গলিয়ে ফেলার সম্ভাবনা আছে। ‘চাচী’র অবশ্য বক্তব্য “আমি গ্রামে চাষবাস করে খাই। আমি এসবের কিছুই জানি না। আসানসোলে আমার আত্মীয় থাকে, সেখানে গিয়েছিলাম। ডাকাতির ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না।”

এদিকে ডোমজুড়ের ওই সোনার দোকানের মালিক শঙ্কর দাস জানিয়েছেন, গ্রেফতার সম্পর্কে এখনও পুলিশ তাঁদের কিছু জানায়নি। সোনার গয়না উদ্ধার হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে কিছুই তাঁরা জানেন না। তাঁরা চাইছেন পুলিশ খোয়া যাওয়া গয়না ফেরতের ব্যবস্থা করা হয়। ডোমজুড় ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ঘটনার পর ডোমজুড় থানার পক্ষ থেকে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে তাঁরা এখনও আতঙ্কে রয়েছেন।