Howrah Municipal Corporation: এক ফোনেই জমা জল থেকে অব্যাহতি, ‘জওয়াদ’ মোকাবিলায় বিশেষ প্রস্তুতি হাওড়া পুরসভার

Cyclone Jawad: যে সমস্ত ওয়ার্ডগুলি জলমগ্ন হবার আশঙ্কা সেখানে অতিরিক্ত পাম্প প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় ১২টি পাম্পিং স্টেশনের প্রায় ৪০টি পাম্প প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

Howrah Municipal Corporation: এক ফোনেই জমা জল থেকে অব্যাহতি, 'জওয়াদ'  মোকাবিলায় বিশেষ প্রস্তুতি হাওড়া পুরসভার
হাওড়া পুরসভা
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 05, 2021 | 9:46 PM

হাওড়া: বঙ্গে বিপদ ‘জাওয়াদ’। সরাসরি রাজ্যে নিম্নচাপের প্রভাব না পড়লেও শীতেও পিছু ছাড়ছে না দুর্যোগ। শনিবার থেকেই শুরু হয়েছে বৃষ্টি। রবিবারও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। আর এদিন বিশেষ প্রস্তুতি নিতে দেখা গেল  হাওড়া পুরপ্রশাসনকে। একটা ফোনেই পাম্প চালিয়ে সরানো হল জল।

এদিন ২৪ ঘণ্টাই খোলা ছিল হাওড়া ময়দানের পুরসভার সদর দফতরের ৪টি কন্ট্রোল রুম। ই কন্ট্রোল রুমে বসে এদিন নজরদারি চালান হাওড়া পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ড. সুজয় চক্রবর্তী। বড় কিছু বিপর্যয় না হলেও এদিন ভারি বৃষ্টির জেরে উত্তর হাওড়ার সালকিয়া, বেলগাছিয়া,টিকিয়া পাড়া সংলগ্ন ইস্ট ওয়েস্ট রোডের কিছু এলাকায় জল জমে। জল জমার খবর পেতেই এই সমস্ত এলাকা থেকে পাম্প চালিয়ে জল বের করে দেয় পুর কর্তৃপক্ষ।

পুরসভার মুখ্য প্রশাসক সুজয়বাবু জানান, বড় রকমের কোনও অঘটন না ঘটলেও বৃষ্টির মধ্য বিপদে পড়া বেশ কিছু বাসিন্দাকে ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। যেকোনওরকম বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত পুরপ্রশাসন। এছাড়াও যে সমস্ত ওয়ার্ডগুলি জলমগ্ন হবার আশঙ্কা সেখানে অতিরিক্ত পাম্প প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় ১২টি পাম্পিং স্টেশনের প্রায় ৪০টি পাম্প প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে জল জমতে পারে এমন ওয়ার্ডগুলিকে চিহ্নিত করে নজর রাখা হচ্ছে। এই ওয়ার্ডগুলি হল ৭, ৮, ৯, ১৯, ২০, ২১ ও ৫০।

বাসিন্দাদের জন্য ত্রাণ শিবিরেরও প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়েছে। এই সমস্ত ওয়ার্ডে ৮টি স্কুল বাড়িকে ফাঁকা রাখা হয়েছে। ওই স্কুলগুলির কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চাবি নিয়ে রেখেছে হাওড়া পুরসভা। প্রয়োজনে এই স্কুলগুলি খুলে এখানে বাসিন্দাদের আশ্রয় দেওয়া হবে বলে পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে।

অন্যদিকে রবিবার হাওড়ার গঙ্গার ফেরি ঘাটগুলি পরিদর্শনে যান রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী তথা মধ্য হাওড়ার বিধায়ক অরূপ রায়। এদিন সকালেই রামকৃষ্ণপুর ঘাটে যান মন্ত্রী। গঙ্গার জল কীভাবে বেড়েছে  ও সেক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন কীভাবে প্রস্তুত সেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন মন্ত্রী। পরিদর্শনের পর তিনি জানান, সবরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ভারি বৃষ্টির জেরে প্রয়োজনে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্কুল ও গোডাউনে আশ্রয় দেওয়া হবে। খাবার ও জলের পাউচেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, নিম্নচাপের জেরে গঙ্গার জল বাড়তে থাকায় এদিন হাওড়া ও শিবপুর ঘাটের মতো গঙ্গার জেটি ঘাট জলের তলায় চলে যায়। ফলে সকাল থেকেই বন্ধ ছিল হাওড়া, গোলাবাড়ি ফেরি ঘাট। তবে এদিন বিপর্যয়ের মধ্যেও চাঁদপাল, রামকৃষ্ণপুর, নাজিরগঞ্জ, বাউড়িয়ার ফেরি পরিষেবা চালু ছিল।

প্রসঙ্গত, জাওয়াদের শক্তি সমুদ্রেই ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। এমনটাই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে নিম্নচাপের প্রভাবে সোমবার পর্যন্ত দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে। রবিবারও রাজ্যের নয় জেলায় অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। রবিবার কলকাতাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সোমবারও কমবে না বৃষ্টির দাপট। সোমবার ৪ জেলায় ভারী বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। জাওয়াদের শক্তিক্ষয়ে কিছুটা কম ঝড়ের দাপট।

বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সেচ, বিদ্যুৎ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফরের কর্মীদের ছুটি বাতিল করেছে নবান্ন।  কন্ট্রোলরুম সংক্রান্ত খোঁজখবর নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। মূলত পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ওপরে বিশেষ নজর রয়েছে নবান্নের।

পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হওয়া বইবে। সেই কারণে একাধিক সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মৎস্যজীবীদের ৬ ডিসেম্বর, সোমবার পর্যন্ত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকাগুলিতে আজ রাত থেকে আগামিকাল সকাল পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হবে। আগামিকাল ধীরে ধীরে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে হওয়ার গতি কিছুটা কমবে। ১১ ডিসেম্বর থেকে তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।

আরও পড়ুন: Hiran Chatterjee: হোর্ডিংয়ে সাংসদ, ব্রাত্য খোদ বিধায়ক! ‘একলা চলো’র সুর ধরেই দূরত্ব বাড়াচ্ছেন হিরণ?