Hiran Chatterjee: হোর্ডিংয়ে সাংসদ, ব্রাত্য খোদ বিধায়ক! ‘একলা চলো’র সুর ধরেই দূরত্ব বাড়াচ্ছেন হিরণ?
Dilip Ghosh: রেলশহরে সাংসদ-বিধায়ক তরজা নতুন নয়। তার প্রভাব পড়েছে গিয়ে হোর্ডিংয়েও এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। কিছুদিন আগেই, রেলের ওভারব্রিজ তৈরি নিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন দিলীপ ও হিরণ
পশ্চিম মেদিনীপুর: হোর্ডিং পড়েছে জায়গায় জায়গায়। গোটা খড়গপুর জুড়ে দলীয় হোর্ডিংয়ে রয়েছে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) ছবি। হোর্ডিংগুলিতে দেওয়া রয়েছে অন্যান্য বিজেপি নেতারও ছবি। তবে দেখা যায়নি খোদ খড়গপুরের তারকা বিধায়ক হিরণ চট্টোপাধ্য়ায়ের (Hiran Chatterjee) ছবি। সমস্ত হোর্ডিংয়ে বিধায়কের এই ‘বাদযাওয়াটুকু’ নজর এড়ায়নি কারোর। আর এতেই রেলশহরে বিজেপির অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
ঠিক কী হয়েছে? বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর দিলীপ ঘোষকে অভিনন্দন জানিয়ে খড়গপুরের একাধিক জায়গায় হোর্ডিং দেওয়া হয়েছে। কোনও হোর্ডিংয়ে দিলীপের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর ছবি, কোথাও বা অমিত শাহ, শুভেন্দু অধিকারীর মতো বিজেপির প্রথম সারির নেতাদের দেখা গেলেও কোথাওই দেখা যায়নি বিধায়ক হিরণের ছবি। কিন্তু দলের হোর্ডিংয়ে কেন থাকবে না বিধায়কের ছবি? তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
যদিও দিলীপ হোন বা হিরণ, হোর্ডিংয়ের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ দিলীপ ও হিরণ উভয়েই। ঘটনায় দিলীপ ঘোষ বলেন, “কে বা কারা হোর্ডিং তৈরি করেছে তা জানা যায়নি। যারা হোর্ডিং তৈরি করেছে, তারা পছন্দসই নেতার ছবি দিয়েছেন। কেন হিরণের ছবি নেই, সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না।”
অন্যদিকে, হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “হোর্ডিংয়ে কোন ছবি দিল না দিল তাতে কিছু যায় আসে না। আমি সব ছেড়ে এখানে এসে বসে রয়েছি। আমি রবি ঠাকুরের একটা গান মনে করি, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’। আমি জানি আমাকে কাজ করতে হবে। খড়গপুরে রেলের ৩০০ একর জমি রয়েছে। সেগুলির উন্নতি নিয়ে ভাবছি। আদিবাসী বিশ্ববিদ্যালয়, এইমস, মেডিক্যাল কলেজ এবং নার্সিং কলেজ তৈরি করার চেষ্টা করছি। অনেকে সাংসদ তো ছিলেন। তাঁরা খড়গপুরের জন্য কিছুই করেননি। ”
পদ্মের অন্দরের এই কোন্দল নজর এড়ায়নি শাসক শিবিরের। স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রদীপ সরকার বলেন, “এটা হওয়ারই ছিল। কারণ, নির্বাচনের সময় হিরণ চট্টোপাধ্যায় অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে এখনও প্রতিশ্রুতিপূরণ করতে পারেননি। সে কারণে বিজেপি কর্মীরা সাধারণ মানুষের কাছে মুখ দেখাতে পারছেন না। খড়গপুরে উন্নতি কিছুই হচ্ছে না। শুধু গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই হচ্ছে।”
প্রসঙ্গত, রেলশহরে সাংসদ-বিধায়ক তরজা নতুন নয়। তার প্রভাব পড়েছে গিয়ে হোর্ডিংয়েও এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। কিছুদিন আগেই, রেলের ওভারব্রিজ তৈরি নিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন দিলীপ ও হিরণ। খড়্গপুর স্টেশনে তিনটি ওভারব্রিজ তৈরি করছে রেল। দুর্গাপুজোর আগেই সেই ওভারব্রিজগুলোর উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। অন্তত তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সাংসদ দিলীপ ঘোষ। এমনকী, তাঁর মুখে খড়্গপুর শাখার ডিআরএমের কাজের প্রশংসা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু রেলের ইঞ্জিনিয়ার ও ঠিকাদার সংস্থার কাজে যে তিনি মোটেও সন্তুষ্ট হননি তা বেশ স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তারকা বিধায়ক।
তবে বিরোধের এখানেই শেষ নয়, কম্বল বিতরণী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মাত্র কয়েকদিন আগেই দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) এবং হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামীদের সংঘাতের জল থানা পর্যন্ত গড়িয়েছিল। কোনও দলীয় অনুষ্ঠানেই দেখা যায় না তারকা বিধায়ককে। শুধু তাই নয় দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে নিজের বিধানসভা এলাকাতেও দেখা যায় না হিরণকে। তবে বিজেপির সর্বভারতীয়-সহ সভাপতি এলাকা থেকে চলে যাওয়ার পর ফের খড়গপুরে দেখা যায় তাঁকে। নিজে নানা কর্মসূচিও করেন তিনি। কিন্তু সেখানে আবার দিলীপ ঘোষকে অংশ নিতে দেখা যায়নি। কানাঘুষো এও শোনা গিয়েছিল বিজেপি ত্যাগ করতে পারেন তারকা-বিধায়ক। যদিও সেই জল্পনায় নিজেই জল ঢেলে হিরণ জানিয়েছিলেন তিনি বিজেপিতেই রয়েছেন।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ট্রেনে চড়েই জেলা সফর, ফিরেই গোয়ায় নজর মুখ্যমন্ত্রীর