হাওড়া : ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যু রহস্যে (Anis Khan Death) এখনও পর্যন্ত কোনও কিনারা হয়নি। আর এরই মধ্যে আনিসের বিরুদ্ধে পুরানো মামলা নিয়ে মুখ খুলল পুলিশ। হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার সৌম্য রায়ের দাবি, আমতা ও বাগনান থানায় একাধিক মামলা বকেয়া রয়েছে আনিসের বিরুদ্ধে। আনিসের নামে চারটি মামলা রয়েছে বলে দাবি পুলিশের। তার মধ্যে আমতা থানায় রয়েছে তিনটি মামলা এবং বাগনান থানায় রয়েছে একটি মামলা। উল্লেখ্য, ছাত্রনেতা আনিস খানের মৃত্যুর পর আড়াই দিন অতিক্রান্ত। ঘটনার অভিযুক্তরা এখনও অধরা। এরই মধ্যে আনিসের বিরুদ্ধে পুরানো মামলাগুলির কথা তুলে আনল পুলিশ। উল্লেখ্য, আনিসের বিরুদ্ধে কলেজে পড়াকালীন পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ ছিল বলে আগেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু এবার সরাসরি পুলিশের তরফ থেকে আনিসের পুরানো মামলার কথা তুলে ধারা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে পকসো আইনে মামলাও।
উল্লেখ্য, পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৭ সালে বাগনান থানায় পকসো আইনে মামলা করা হয়েছিল মৃত আনিস খানের বিরুদ্ধে। এক স্কুল ছাত্রীকে উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এর পাশাপাশি, ২০১৪ সালে এবং ২০২১ সালেও আমতা থানায় মামলা হয়েছিল আনিসের বিরুদ্ধে। এমনটাই দাবি পুলিশের। তাহলে কি এবার আনিস খানের বিরুদ্ধে পুরানো মামলাগুলিকেই অস্ত্র করা চেষ্টা করছে পুলিশ? এমন প্রশ্ন কিন্তু ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে। পুলিশের বক্তব্য ২০১৭ সালে পকসো আইনের আনিস খানের বিরুদ্ধে যে মামলাটি করা হয়েছিল, তাতে এক কলেজের পাশে এক কিশোরীকে উত্যক্ত করার অভিযোহ উঠেছিল ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে। যদিও আনিসের বন্ধুরা এবং যাঁরা আনিসকে চেনেন তাঁরা বলছেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজনৈতিকভাবে তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করে এই মামলাটি করা হয়েছিল।এর পাশাপাশি আরও তিনটি মামলা রয়েছে আমতা থানায়।
এই বিষয়ে হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার সৌম্য রায় জানিয়েছেন, “বাগনান থানা, আমতা থানা এই সব জায়গাতেই মামলা ছিল। পকসো মামলাটি যেটি রয়েছে, তা বাগনান থানার মামলা। কোর্ট থেকে সমনও পাঠানো হয়েছিল। তাতে পকসোর ১২ নম্বর ধারা রয়েছে।” উল্লেখ্য, রবিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে হাওড়া গ্রামীণের পুলিশ সুপার বলেছিলেন, সব দিক তদন্ত করে দেখা হবে। পুলিশের তরফে কোনও গাফিলতি রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন তিনি। তারপরের দিনই পুলিশের খাতায় আনিসের পুরানো মামলা তুলে ধরার নেপথ্যে পুলিশের উদ্দেশ্য নিয়ে ফের একবার প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এদিকে আনিস খানের মৃত্যুকে ঘিরে বিগত কয়েকদিন ধরে বার বার আবর্তিত হচ্ছে বাংলার রাজনীতি। ছাত্রনেতার সঙ্গে কোন দলের সম্পর্ক বেশি ঘনিষ্ঠ ছিল, তা প্রমাণ করতে উঠে পড়ে লেগেছে রাজনৈতিক দলগুলি। বাগনান কলেজে পড়াকালীন বাম ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও পরবর্তী সময়ে সংখ্যালঘুদের উন্নয়নকল্পে যোগ দিয়েছিলেন আইএসএফে। আবার ছাত্র পরিষদ বলছে, তিনি ছাত্র পরিষদের কর্মী ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও আবার বলে দিলেন, আনিস তাঁর ফেভারিট ছেলে। সব মিলিয়ে আনিস খানের মৃত্যু ঘিরে জোর চর্চা চলছে বাংলার রাজনীতিতে।
আরও পড়ুন : AMTA Student Death: ‘আনিস আমার ফেভারিট ছেলে’, মৃত্যুরহস্য ফাঁসে সিট গঠন করলেন মমতা