হাওড়া: জেলের কুঠুরিতে বসেই অপরাধের ছক কষছিল এক বন্দি। তবে সেই ছক বানচাল হল গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতায়। ফের তোলা হল আদালতে। জানা গিয়েছে, প্রেসিডেন্সি জেল থেকেই সে অপরাধের ছক কষছিল ডাকাতির। চলছিল প্রমোটারকে খুনের চক্রান্তও। ব্লু প্রিন্টও তৈরি। তবে পুলিশি সক্রিয়তায় ভেস্তে গেল সেই ফন্দি। হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দাদের সক্রিয়তায় গ্রেফতার তিন দুষ্কৃতী।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রেসিডেন্সি জেল থেকে ডাকাতির ছক কষেছিল বিচারাধীন বন্দি কানহাইয়া কাহার। দীর্ঘদিন ধরে জেলবন্দি হাওড়ার এই অপরাধী।সেই জেল থেকে ফোন করে তার তিন সঙ্গীকে দিয়ে ডাকাতির ছক কষেছিল। সেই অনুযায়ী তৈরিও হয়ে গিয়েছিল ব্লুপ্রিন্ট। তবে ওঁত পেতেছিল পুলিশও। কিছুই না জানার ভান করে ট্র্যাক করে যাচ্ছিল তারা। আর তারপর শিবপুর ফেরিঘাটের কাছে ডাকাতির উদ্দেশে জড়ো হওয়ার সময় কানহাইয়ার তিন সঙ্গীকে হাতেনাতে পাকড়াও করেন গোয়েন্দারা। ধৃতদের নাম শেখ আকবর, মহম্মদ সাজিদ ও মিঠু যাদব।
ধৃতদের এদিনই হাওড়া আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। অপরাধের কথা কবুলও করে নিয়েছে অভিযুক্তরা। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুধু ডাকাতি নয়, এক প্রমোটরকে খুনের ছক-ও কষেছিল কানহাইয়া। ধৃতদের দিয়ে খুনের রেইকি করা হয়েছিল বলেও জানা গিয়েছে। কানহাইয়াকে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করছে হাওড়া সিটি পুলিশের ডিটেকটিভ ডিপার্টমেন্টের তদন্তকারীরা।
এর আগেও প্রেসিডেন্সি জেলে থেকে বসে তোলাবাজি ও প্রমোটারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে জানতে পারে পুলিশ। হাওড়ার কুখ্যাত অপরাধী রোমি জানা ওরফে ভাগ্না বেশকিছুদিন ধরে এই কাজ করেছিল বলে পুলিশ সূত্রে খবর। একাধিক প্রমোটারকে জেল থেকে বসেই ফোন করে তোলাবাজি করছিল ভাগ্না। তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল গোয়েন্দারা। কিন্ত কোনোভাবেই জেল থেকে বসে ফোনের মাধ্যমে অপরাধ দমানো যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, জেলের কুঠুরি-তে বসে অপরাধের ঘটনার অভিযোগ আগেও উঠেছে। বেশ কয়েক বছর আগে একই ধরনের ঘটনা ঘটে বসিরহাটে। আবার এই হাওড়ার বাকসাড়ায় নিমাই দে নামে এক ব্যক্তিকে গুলি করার ঘটনায় হাওড়ার দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতী অর্ঘ্য কর্মকার ওরফে ফেলু ও সেখ আশিক ওরফে পাপ্পু প্রেসিডেন্সি জেলের মধ্যে থেকেই ছক কষেছিল বলে উঠে আসে তদন্তে।
সেই মতো সদ্য জেল থেকে ছাড়া পাওয়া দুই দুষ্কৃতী সেখ আজাদ ও বিশ্বজিৎ দাস ওরফে বাবুকে ৫০ হাজার টাকা সুপারি দেয়। সেই বছরের ১৪ জুলাই নিমাই বাজার করে বাড়ি ফেরার সময় বাকসাড়া গ্রিন পার্ক এলাকায় ওই দুই দুষ্কৃতী বাইকে করে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাঁকে প্রথমে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ও সেখান থেকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আরও পড়ুন: ‘পরীক্ষা না দিয়েও শিক্ষক, বহাল তবিয়তে মাসোহারা নিচ্ছেন!’ শিক্ষক দিবসে সরকারকে নিশানা শুভেন্দুর