হাওড়া: রবিবার দুপুর তখন। হঠাৎই দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে সোজা গঙ্গায় ঝাঁপ দিলেন এক যুবক। এদিকে সেতু থেকে যুবককে ঝাঁপ মারতে দেখেই তড়িঘড়ি ছুটে যায় গঙ্গায় টহল দেওয়া পুলিশের লঞ্চ। ডুবতে থাকা ওই যুবককে উদ্ধার করে তারা। তারপর হাওড়া সিটি পুলিশের কিরণ অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই যুবককে হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ২৫ বছরের এক যুবক আচমকা দ্বিতীয় হুগলি সেতুর হাওড়ার দিক থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন। সেইসময় শিবপুর থানার অধীনে থাকা হাওড়া সিটি পুলিশের ‘নিউ আবাদ’ নামে একটি লঞ্চ গঙ্গায় টহল দিচ্ছিলে। দূর থেকে লঞ্চে থাকা পুলিশ কর্মীরা দেখেন সেতু থেকে ওই যুবক গঙ্গায় পড়ে হাবুডুবু খাচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা লঞ্চ নিয়ে এগিয়ে যান। উদ্ধার করেন যুবককে। তাঁকে ডাঙায় তুলে আনা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পেরেছে, মানসিক অবসাদ থেকে আত্মহত্যা করতে এমনটা করেন ওই যুবক। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, সালকিয়ার বাসিন্দা ওই যুবক। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে পুলিশ। কী কারণে যুবকের মানসিক অবসাদ তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। আপাতত ওই যুবকের শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল নয় বলে খবর।
প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগেই এই দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে স্টান্টবাজি করে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছিলো দুই যুবক। কলকাতার বাসিন্দা এক যুবক বেঁচে গেলেও অপরজন তলিয়ে যান। পরে গঙ্গা থেকে তাঁর দেহ মিলেছিলে। সেতু থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে স্টান্টবাজির এই পুরো ঘটনা ফেসবুকে লাইভ করেছিলেন ঝাঁপ দেওয়া দুই যুবকের সঙ্গীরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনা দেখে শিউরে উঠেছিলেন সকলে। তখনই দ্বিতীয় হুগলি সেতু ও গঙ্গায় পুলিশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এর পরই সেতু ও গঙ্গায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়। পুলিশের লঞ্চ গঙ্গায় টহল দিতে শুরু করে। পুলিশের সেই নজরদারির জেরেই এদিন উদ্ধার হল গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করা যুবক।
কয়েকদিন আগে নদিয়ার শান্তিপুরের বেলঘড়িয়া পঞ্চদেবতা ঘাটে এক বৃদ্ধা গঙ্গায় ঝাঁপ দেন। সেখানেও জানা যায় মানসিক অশান্তি থেকে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। তাঁর দেহ ভেসে আসতে দেখেন মৎস্যজীবীরা। এরপর সুকুমার সরকার নামে এক মৎস্যজীবী নৌকা নিয়ে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করেন। উদ্ধার করার পর মৎসজীবীরা প্রথমে ভেবেছিলেন, বৃদ্ধা বোধহয় মারা গিয়েছেন। কিন্তু তা নয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। তাঁর পরিচয় জিজ্ঞাসা করতেই বৃদ্ধা জানান, তাঁর নাম লক্ষ্মী প্রামাণিক। তাঁর বাড়ি বর্ধমানের মেমারিতে। তাঁর স্বামী নেই। ৪ মাস আগেই তাঁর ছেলে মারা গিয়েছে। অনেকদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। তাই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছিলেন। বৃদ্ধা জানান, বাড়ি থেকে বেরিয়ে সমুদ্রগড় ঘাটে গিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, ২৫ কিলোমিটার জলে ভেসে থাকার পরও কোনও শারীরিক সমস্যা হয়নি ওই বৃদ্ধার! আরও পড়ুন: ‘ভুল উচ্চারণ, অসম্পূর্ণ কথা বলা চলবে না, ছাত্ররা তো আপনাকে দেখেই শিখবে’, মুখ্যমন্ত্রীকে ‘পরামর্শ’ শুভেন্দুর