বেলুড়: গুরু পূর্ণিমা উপলক্ষে বুধবার দিনভর ভক্তদের ঢল নামতে দেখা যায় বেলুড় মঠে (Belur Math)। দীক্ষাগুরুদের আশীর্বাদ নিতে এদিন সকাল থেকেই অগণিত ভক্তদের বেলুড় মঠে গিয়ে ভিড় জমাতে দেখা যায়। করোনার (Coronavirus) দাপটে গত ২ বছর ধরে গুরু পূর্ণিমার (Guru Purnima 2022) অনুষ্ঠান হয়নি বেলুড় মঠে। প্রসঙ্গত, প্রাচীন বৈদিক যুগ থেকে যে গুরু-শিষ্য সম্পর্কের কথা আমরা শুনে থাকি, সেই পরম্পরা শ্রদ্ধা জানাতেই নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তবে এ নিয়ে অবশ্য রয়েছে নানা মত।
অনেকে বলেন এই তিথিতেই পরাশর মুনি এবং মৎসগন্ধা সত্যবতীর কোল আলো করে আসেন মহাভারতের রচয়িতা মহর্ষি বেদব্যাস। এই মতেও অনেকে আজকের এ দিনটিকে পালন করে থাকেন। আবার অনেকে দিক্ষাগুরুর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যেই এ দিনটিকে পালন করে থাকেন। কোনও একটি মন্ত্রে যাঁরা দিক্ষা নিয়েছেন এদিন তিনি গুরুর কাছে গিয়ে শ্রদ্ধা অর্পন করে থাকেন। গুরুর পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন। সাদা ফুল দিয়ে চলে গুরু প্রণাম। যে রীতিই এদিন দেখতে পাওয়া যায় বেলুড় মঠে।
তবে গুরু পূর্ণিমা নিয়ে বৌদ্ধ মতেও রয়েছে একাধিক মত। অনেকে বলেন, ভগবান বুদ্ধদেবের বৌদ্ধিক জ্ঞান প্রাপ্ত হওয়ার পর ভক্তদের উদ্দেশ্যে প্রথম উপদেশও দিয়েছিলেন সেই তিথিও ছিল আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা। সেকারণেও পালন করা হয়ে থাকে গুরু পূর্ণিমা। সহজ কথায়, হিন্দু-বৌদ্ধ মতে নানা ভাবে এদিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। তবে দু-ক্ষেত্রেই রয়েছে গুরু-শিষ্য পরম্পরার ঐতিহ্য। প্রসঙ্গত, এদিন শ্রীরামকৃষ্ণ, সারদাদেবী, বিবেকানন্দকে জানাতে পদ্ম হাতে বেলুড়ে আসতে দেখা যায় অগণিত ভক্তকে।ঠাকুরের মন্দিরে, মায়ের মন্দিরে ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। দিনভর নানা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সন্ধ্যাতেও চলে সন্ধ্যারতি। প্রসঙ্গত, সাধারণত আষাঢ় মাসেই পড়ে গুরুপূর্ণিমা। তবে, এবার পূর্ণিমা তিথিটি নিয়ে ছিল ধোঁয়াশা। কোথাও দিনটি পালন হল বুধবার। আবার কেউ আগামীকাল বৃহস্পতিবার ১৪ জুলাই পালন করছেন। তবে ২ বছর পর ফের এ বেলুড়ে পা রাখতে পেরে খুশি ভক্তের দল।