TMC MLA: ঘণ্টার পর ঘণ্টা জমা জলে বসে থেকেই প্রতিবাদ তৃণমূল বিধায়কের, অস্বস্তিতে দল

Waterlogging: দিনের পর দিন অভিযোগ জানাচ্ছিলেন বাসিন্দারা। জল জমে কালো হয়ে গিয়েছে। জল বের করতেই রাস্তায় বসলেন বিধায়ক।

TMC MLA: ঘণ্টার পর ঘণ্টা জমা জলে বসে থেকেই প্রতিবাদ তৃণমূল বিধায়কের, অস্বস্তিতে দল
জমা জলে চেয়ার পেতে বসে পড়লেন বিধায়ক (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 01, 2021 | 6:50 PM

হাওড়া: প্রায় তিন মাস ধরে এলাকায় জমে রয়েছে জল। বার বার পুরসভার (Corporation) প্রশাসকমন্ডলীকে বলেও কোনও কাজ হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দারা নিত্যদিন নাজেহাল হচ্ছেন। এই অভিযোগ তুলে এবার নিজের বিধানসভা এলাকাতেই চেয়ার নিয়ে ধর্নায় বসে পড়লেন উত্তর হাওড়ার তৃণমূল বিধায়ক (TMC MLA) গৌতম চৌধুরী (Goutam Chowdhury)। খোদ নবান্ন থেকে তৈরি করা পুরসভার প্রশাসকমন্ডলীর বিরুদ্ধেই তাঁর এই প্রতিবাদ। পরে অবশ্য পুরসভা থেকে জমা জল সরানোর কাজ শুরু হলে ধর্না তুলে নেন বিধায়ক।

ধর্না তুলে নেওয়ার পর তিনি জানান, এলাকা থেকে জমা জল বের করতে পুর ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে এলাকা পরিদর্শন করছিলেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে উত্তর হাওড়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বামনগাছির বাবুরবাগান এলাকায় রাস্তায় জমা জলের উপর একটি চেয়ার নিয়ে বসে পড়েন বিধায়ক। তাঁর দাবি, দীর্ঘদিন এই সমস্যার সমাধান না হওয়ায় বাধ্য হয়েই এই কাজ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, দীর্ঘদিন এলাকা থেকে জমা জল না নামায় তাঁকে বারবার অভিযোগ জানাচ্ছিলেন এলাকার বাসিন্দারা।

বিধায়ক জানান, পুর প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এদিন তিনি ধর্নায় বসেন। প্রায় ৪ ঘন্টা এলাকার বিধায়ক ধর্নায় বসার পর পুরসভার তরফে দু’টি পাম্প ও একটি সাকসান যন্ত্র এলাকায় পাঠানো হয়। সেগুলি দিয়ে জমা জল বের করার কাজ শুরু করা হয়। এর পর ধর্না তুলে নিয়ে এলাকায় সেই কাজ তদারকি করে দেখেন বিধায়ক।

রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন ওঠে তৃণমূলেরই বিধায়ক, তৃণমূলেরই প্রশাসকমন্ডলীর বিরুদ্ধে কেন এভাবে রাস্তায় নামলেন? হাওড়া পুরসভায় তৃণমূল পরিচালিত প্রশাসকমন্ডলীর মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী এ দিন এই প্রসঙ্গে জানালেন, দীর্ঘদিন জল জমে থাকার খবর পেয়েই এলাকায় নিকাশি বিভাগের ইঞ্জিনিয়াররা ছুটে গিয়েছেন। জমা জল বের করে দেওয়ার জন্য কেএমডিএ-র তরফে দু’টি পাম্প নিয়ে এসে বামনগাছিতে বসানো হয়েছে। সেই পাম্প দিয়ে জল বের করা হয়েছে। খুব দ্রুতই ওখানে জমা জলের সমস্যা মিটে যাবে। এদিকে এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান উতোরও শুরু হয়ে গিয়েছে।

বিজেপির হাওড়া জেলা সদর সভাপতি সুরজিৎ সাহা কটাক্ষ করে বলেন, ‘ঘটনাটা অনেকটা বিড়ালকে মাছ পাহারা দিতে দেওয়ার মতো। তৃণমূলের বিধায়ক, কাউন্সিলর, নেতারা যাঁরা রাস্তা ও নিকাশি সংস্কারের উন্নয়নের টাকা নিয়ে দুর্নীতি করছেন, তাঁরাই আবার মানুষের সমস্যা নিয়ে ধর্নায় বসছেন। আসলে সাধারণ মানুষের উন্নয়নে কিছুই করছে না তৃণমূল। শুধু দুর্নীতি করছে। আর পুরসভা ভোট হতে পারে এই ভেবে মানুষের প্রতি দরদ দেখাতে এখন রাস্তায় বসে এই ধরনের নাটক করছেন।’

এই প্রসঙ্গে তৃণমূলের হাওড়া জেলা সদর সভাপতি কল্যান ঘোষ বলেন, ‘আমাদের বিধায়ক ধর্না দেননি। এলাকায় জল জমে কালো হয়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। ওই অভিযোগ যাতে বিক্ষোভে পরিণত না হয় তা দেখতেই রাস্তায় নামেন বিধায়ক। স্থানীয় মানুষের সমর্থনে থেকেই পাম্পের সাহায্যে জল বার করার চেষ্টা করেন তিনি। এর মধ্যে আর অন্য কিছু নেই।’

প্রসঙ্গত, গত ১৭ আগস্ট হাওড়া পুরসভায় সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়ের নেতৃত্বে থাকা পুরেনো প্রশাসকমন্ডলী ভেঙে দিয়ে চিকিৎসক সুজয় চক্রবর্তীর নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রাক্তন কাউন্সিলরদের নিয়ে ১০ সদস্যের প্রশাসকমন্ডলী গঠন করা হয়। মন্ত্রী অরূপ রায়ের নেতৃত্বে বিধায়কদের নিয়ে পুরেনো ৭ সদস্যের প্রশাসকমন্ডলীতে উত্তর হাওড়ার বিধায়ক গৌতম চৌধুরী থাকলেও নতুন প্রশাসকমন্ডলীতে তিনি নেই।

আরও পড়ুন: WB Flood Situation Live Update: বিপদ বাড়াচ্ছে অতিবৃষ্টি-ব্যারাজ, দুর্গত এলাকায় পৌঁছল কেন্দ্রীয় বাহিনী, এনডিআরএফ টিম