জলপাইগুড়ি : কোভিড পরিস্থিতি পেরিয়ে এ বছর দুর্গা পুজো ঘিরে আয়োজন আর উৎসাহ ছিল অনেকটাই বেশি। বৃষ্টি উপেক্ষা করে একদিকে যেমন ঠাকুর দেখার উৎসাহে ঘাটতি পড়েনি, অন্যদিকে, প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতেও সেভাবেই বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন। ব্যতিক্রম হয়নি মাল বাজারেও। কিন্তু সেই বিসর্জন দেখতে গিয়েই যে এমন ভয়াবহ পরিণতি হবে, তা কল্পনা করেননি অনেকেই। কার্যত চোখের সামনে আত্মীয় পরিজনকে ভেসে যেতে দেখলেন মালবাজারের মানুষ। পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও বাঁচানোর সুযোগটুকুও পেলেন না তাঁরা। বিসর্জন দেখতে গিয়ে তলিয়ে গেলেন জ্যোঠু-ভাইপো।
গত বুধবার মালবাজারে মাল নদীতে আচমকাই আসে হড়পা বান। সেখানে বিসর্জন দেখতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে একই পরিবারের দুই সদস্যের। এই ঘটনায় শোকের ছায়া মালবাজারের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অধিকারী পরিবারে। শোকস্তব্ধ গোটা পাড়া। বাড়ির সামনে মানুষের ভিড়।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তপন অধিকারী মাল নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেখতে গিয়েছিলেন। আচমকাই মরা নদী জলে ভরে যায়। এলোপাথাড়ি স্রোতে ভেসে যান সকলেই। সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাইপো শোভনদ্বীপ অধিকারী। পরিবারের বাকি তিনজন কোনও ক্রমে নদী পারে উঠে এলেও দুজন জলের স্রোতে ভেয়ে যান। কেউ বাঁচানোর জন্য এগিয়ে আসেননি বলে অভিযোগ। প্রাণ হারান অধিকারী দুই সদস্য তপন অধিকারী (৭২) এবং ভাইপো শোভনদ্বীপ অধিকারী (২০)। দুজনেই মাল বাজারে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
জানা গিয়েছে, তপন অধিকারী এবং শোভনদ্বীপ অধিকারী নদীর মাঝামাঝি জায়গায় দাঁড়িয়ে বিসর্জন দেখছিলেন। আচমকাই জলস্তর বাড়তে শুরু করে। তখনই জলের স্রোতে ভেসে যান দুজনেই। পরে দুজনের দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের পরিবারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই দেখা করেছেন কোচবিহারে তৃণমূল নেতা তথা উত্তরবঙ্গ পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান পার্থ প্রতিম রায়।
গত বুধবার হড়পা বানে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বেশ কয়েকজন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উভয়েই মৃতদের ও আহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।