জলপাইগুড়ি: বিজেপি পঞ্চায়েতের সালিশি সভায় যুবককে বেধড়ক মারধর। অপমান সইতে না পেরে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা। অভিযোগ অস্বীকার বিজেপি পঞ্চায়েতের। কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের হতেই আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করল পুলিশ। জলপাইগুড়ি অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের বানেভাসা পাড়ার বাসিন্দা বছর ৩৪ এর বাপ্পা মোহন্ত। বাপ্পা পেশায় ফেরিওয়ালা। আজ থেকে ১৩ বছর আগে তিনি ময়নাগুড়ি জল্পেশ এলাকার বাসিন্দা শুক্লা মোহন্তকে বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান রয়েছে। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকে স্বামীর মদ্যপান ও সাংসারিক বিভিন্ন কারণে অশান্তি লেগেই থাকতো। মাস দুয়েক আগে অশান্তি চরমে ওঠে। এরপর তার স্ত্রী শুক্লা দেবী বাপের বাড়ি চলে যান বলে জানা যাচ্ছে। পরে তাঁকে বুঝিয়ে নিয়ে ফের বাড়িতে নিয়ে আসেন বাপ্পা। কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
গত ২১ তারিখ ফের অশান্তি হয় বলে জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। এরপর ওইদিন রাতে শুক্লা দেবী ফের বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে যান। অভিযোগ এরপর সালিশি করার নামে বাপ্পাকে তাঁদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায় পঞ্চায়েতের লোকেরা। সেখানে বাপ্পাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর রাতে বাপ্পা বাড়ি ফিরে আসলেও বাড়িতে আসেননি তার স্ত্রী। তিনি পঞ্চায়েতের বাড়িতেই আশ্রয় নেন। পরদিন ফের বাপের বাড়ি চলে যান।
এইদিকে বাপ্পা মোহন্ত ২২ তারিখ সকালে গত রাতে তাকে মারধর এর ঘটনার কথা দাদা বিশ্বনাথ মোহন্তকে খুলে বলেন। এরপর তাঁর দাদা বিষয়টি পাশের বুথের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে জানান। তিনি বিষয়টি থানায় লিখিত আকারে জানাতে বলেন। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, ওইদিন থেকেই বাপ্পা মোহন্তর মানসিক অবসাদ শুরু হয়। তিনি দাদাকে বলতে থাকেন আত্মহত্যা করার কথা। ২৩ তারিখ দুপুরে বাপ্পা মোহিত নগর এলাকায় ট্রেনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এরপর বাপ্পার দাদা স্ত্রী শুক্লা মোহন্ত, বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য দিলীপ মিত্র ৬ জনের নামে থানায় অভিযোগ জানান।
যদিও শুক্লা দেবী তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করছেন। উল্টে তিনি বলছেন তাঁর স্বামী নেশাগ্রস্ত ছিল। প্রতিদিন তাঁকে মারধর করতো। সেদিনও মারধর করেছিল। তাই তিনি প্রাণ বাঁচাতে পঞ্চায়েতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। একই সুর দিলীপ মিত্রের গলায়। বলেন, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। আমি কাউকে ডাকিনি।”