ধুপগুড়ি: একে করোনা, দুইয়ে ভাইরাল ফিভারের পর এবার ডেঙ্গির থাবা। চিন্তার ভাঁজ যেন কমছে না কিছুতেই। বরং বাড়ছে রোগের সংখ্যা এবং তাতে আক্রান্তের তালিকা। কারণ সম্প্রতি ধূপগুড়ি পৌরসভা এলাকার এক যুবতী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর মিলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে। আর এই মশাবাহিত রোগের উৎপাত মাথাচাড়া দেওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ওই যুবতীর নাম পারভীনা বেগম(১৯)। বেশ কিছুদিন থেকেই জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। কিন্তু তা না কমায় পরিজনরা তাকে ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে জ্বরের কারণ অনুমান করা না গেলেও পরে ডেঙ্গি পরীক্ষার নির্দেশ দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাতেই দেখা যায় ওই যুবতী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত । এরপরই বুধবার রাতে তাঁকে ধুপগুড়ি হাসপাতাল থেকে জলপাইগুড়িতে স্থানান্তরিত করা হয়।
প্রসঙ্গত, জেলায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরু থেকেই আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। এরপরই বর্ষার মাঝে জলপাইগুড়ি জেলায় ভাইরাল ফিভারে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। ফলে করোনার পাশাপাশি এই ফিভারও মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় স্বাস্থ্য দপ্তর এবং প্রশাসনের কাছে। যার রেশ এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। কিন্তু এরই মাঝে নতুন করে ধূপগুড়ি পৌরসভা এলাকায় ডেঙ্গির থাবা। যাকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসনের মত চিন্তার ভাঁজ ধুপগুড়ি পৌর কর্তৃপক্ষের কপালেও।
পৌরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে পুর এলাকার ওয়ার্ডগুলিতে জীবানুনাশক স্প্রে করার কাজ শুরু করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাণ সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। কিন্তু ডেঙ্গির থাবার প্রশ্নে পৌরসভার সাফাই, আক্রান্ত পড়শি রাজ্য অসম থেকে এসেছেন দু’মাস আগে। তাই অনুমান সেখান থেকেই তিনি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ফিরেছেন। যদিও যুবতীর পরিবারের পৌরসভার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে ধূপগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজিৎ ঘোষ বলেন, বরাবরই ডেঙ্গু স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে চিন্তার কারণ। ধূপগুড়িতে ডেঙ্গি ধরা পড়ায় চিন্তা আরও বেড়ে গেল। তবে ইতিমধ্যে আক্রান্ত যুবতীকে ধূপগুড়ি হাসপাতাল থেকে জলপাইগুড়ি স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ডেঙ্গি আক্রান্ত যুবতীর বাইরে থেকে এসেছেন বলে খবর। তবে ডেঙ্গি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ডেঙ্গি নিয়ে জেলার স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গেও একটি বৈঠক করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় সার্ভে করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনমতো সেই সমস্ত এলাকায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
অন্যদিকে, ধূপগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিং বলেন, একজন ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর পেয়েছি আমরা। সেই যুবতী ধূপগুড়ি ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের এক আত্মীয়ের বাড়িতে দুমাস আগে বেড়াতে এসেছিলেন। তার শরীরে ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। পৌরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় সার্ভে করেছেন অন্য আরও কারও শরীরে ডেঙ্গির কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে পৌরসভার তরফে এলাকায় মশা মারার ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে ।
আরও পড়ুন: TMC MLA: ঘণ্টার পর ঘণ্টা জমা জলে বসে থেকেই প্রতিবাদ তৃণমূল বিধায়কের, অস্বস্তিতে দল