ধূপগুড়ি: হাসপাতাল চত্বরে শব্দদূষণ (Noise Pollution) যাতে না হয়, তা নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে। কিন্তু বড়দিনের আনন্দে সেসব বেমালুম ভুলে গেলেন খোদ ডাক্তাররাই। হাসপাতাল চত্বরেই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা মাতলেন পিকনিকের আনন্দে। ডিজে বক্স বাজিয়ে মাতলেন উচ্ছ্বাসে। আবার রোগী পরিজনরা তার প্রতিবাদ করায় জুটল হুমকি! এমনই অভিযোগ ধূপগুড়ি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
হাসপাতাল চত্বরে উচ্চস্বরে বাজছে ডিজে বক্স। কী ব্যাপার? বড়দিনে পিকনিক করছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। এদিকে শব্দ-তাণ্ডবে তখন অসুস্থ বোধ করছেন রোগীরা। চিন্তিত রোগীদের পরিজনরা। অভিযোগ, এ নিয়ে বিএমওএইচ-কে জানাতে গেলে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে জোটে হুমকি। এ নিয়ে চরম বিতর্কে ধূপগুড়ি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে, বড়দিন উপলক্ষে শনিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে হাসপাতাল চত্বরের মধ্যেই পিকনিকের আয়োজন করেন চিকিৎসকদের একাংশ। ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও। অভিযোগ, এ নিয়ে বারবার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কে বলা সত্ত্বেও তিনি তা বন্ধ করেননি। অভিযোগ, পাল্টা রোগী পরিজনদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘কী করার আছে করুন’। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
হাসপাতালে নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব যাঁদের উপরে, তাঁরাই যদি এই ধরনের কাজ করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কী করবেন, প্রশ্ন উঠছে। যেখানে নিস্তব্ধতা বজায় রাখার কথা বারবার বিভিন্ন জায়গায় বোর্ড লাগিয়ে বলা হয় হাসপাতালগুলিতে, সেখানে কী ভাবে হাসপাতাল চত্বরে মধ্যে এই ধরনের ঘটনা ঘটল তা নিয়ে বিস্মিত ওয়াকিবহাল মহল। যদিও এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে মাইক বাজিয়ে রাখিবন্ধন উৎসব উদযাপন করা এবং সেখানে চিকিৎসক-বিধায়ক তথা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি নির্মল মাজির উপস্থিতি নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। সেবার ‘দর্শকের’ সংখ্যাও নেহাত কম ছিল না। অথচ অনুষ্ঠানের ‘মধ্যমণি’ নির্মল মাজি-সহ চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদেরও একাংশের মুখে ছিল না মাস্ক। স্বাস্থ্যবিধিও শিকেয় ওঠে নাচে-গানে জমজমাট রাজ্যের প্রথম সারির সরকারি কোভিড হাসপাতাল চত্বরে। অতিমারির আবহে এই ধরনের কাণ্ড স্বভাবতই বিতর্ক হয়।
অন্যদিকে কিছুদিন আগে ডিজে বক্স চালিয়ে উদ্দাম নাচ করে বিতর্কে জড়িয়েছিল উত্তর দিনাজপুর জেলার পুলিশও। সাধারণ মানুষ কোভিড বিধি পালন করছে কিনা তা দেখভালের দায়িত্ব এখন পুলিশের উপর। তার উপর রাজ্যে ঢুকে পড়েছে করোনার নয়া স্ট্রেন ওমিক্রন। কিন্তু ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং আইন রক্ষার দায়িত্ব যাঁদের ঘাড়ে, তাঁরা নাচছেন ডিজে বাজিয়ে! পুলিশ কর্মীদেরই এমন ডিজে বাজিয়ে কোভিড বিধি উলঙ্ঘন করে উদ্দাম নাচের ভাইরাল ভিডিয়ো নিয়ে শুরু হয় চাঞ্চল্য। প্রশাসন, স্বাস্থ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা যাঁরা সামলান, তাঁদের এহেন কাজে প্রশ্ন উঠছে নাগরিক সমাজে।