জলপাইগুড়ি: এক সময় তৃণমূলে ছিলেন। তারপর বিজেপিতে যোগদান। কিন্তু নতুন দলে থাকা বেশি দিন স্থায়ী হল না। ‘ঘর ওয়াপসি’ হল বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সহ-সভাপতি ধরতিমোহন রায়ের। কাকতালীয়ভাবে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতিদের নাম ঘোষণার পরদিনই দল ছাড়লেন ধরতিমোহন রায়।
বিজেপির অন্দরের খবর, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট না পেয়ে একপ্রকার নিষ্ক্রিয় হয়ে বসেছিলেন বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সহ সভাপতি ধরতিমোহন রায়। গত কয়েকমাস ধরে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন বলেই সূত্রের খবর।
এরপর রবিবার বিকেলে তৃণমূল জেলা সভাপতি মহুয়া গোপের উপস্থিতিতে জলপাইগুড়ি তৃণমূল ভবনে তৃণমূলে ফেরেন তিনি। জলপাইগুড়ি জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান খগেশ্বর রায়ের হাত থেকে ফের দলের পতাকা হাতে তুলে নেন এক সময় ঘাসফুলে থাকা জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ধরতিমোহন রায়।
এদিন তৃণমূলে যোগ দিয়ে ধরতিমোহন রায় বলেন, “আমি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পিছনে অবশ্যই কিছু কারণ ছিল। কিন্তু বিজেপিতে থাকাকালীন আমাকে একপ্রকার নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছিল। আমি একেবারেই গুরুত্বহীন ছিলাম। এ ছাড়া তৃণমূল ছাড়ার পর থেকে আমার সঙ্গে তৃণমূলের পক্ষ থেকে যোগাযোগও রাখা হচ্ছিল। তাই আমি বিজেপি ছেড়ে ফের তৃণমূলে যোগ দিলাম।”
ঘটনায় বিজেপি জলপাইগুড়ি জেলা সহ সভাপতি অলোক চক্রবর্তী জানান, “ধরতিমোহনবাবু তৃণমূলে গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। তাই তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর আমরা তাঁকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে জেলার সহ সভাপতি পদে নিয়েছিলাম। কিন্তু ওনার ধারণা ছিল তাঁকে বিজেপি বিধানসভার প্রার্থী হিসাবে টিকিট দেবে। কিন্তু বিজেপি দলে এইভাবে টিকিট দেওয়া হয় না। এরপর টিকিট না পেয়ে একপ্রকার নিষ্ক্রিয় হয়ে বসে গিয়েছিলেন। রবিবার শুনলাম উনি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তবে তিনি দল ছেড়ে চলে যাওয়ায় দলের কোনও ক্ষতি হবে না।”
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে ধরতিমোহন রায় জলপাইগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে লড়াই করেন। সেই সময় তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস প্রার্থী ছিলেন সুখবিলাস বর্মা। ধরতিমোহন রায় সুখবিলাস বর্মার কাছে পরাজিত হন। সেইসময় তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন, তৃণমূলের একাংশ কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাঁকে হারিয়েছে। এরপরই তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
সম্প্রতি নতুন রাজ্য কমিটি, নতুন জেলা সভাপতিদের নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। যা নিয়ে একটা ক্ষোভের আঁচ ইতিমধ্যেই বিজেপির অন্দরে দেখা যাচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা থেকে ‘বিদ্রোহ’-এর সুরও শোনা যাচ্ছে। এরইমধ্যে ধরতিমোহন রায়ের এই সিদ্ধান্ত ঘিরেও নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: শুধু খাঁচা নয়, এবার তৈরি মাচাও! কুলতলির ‘পাঁকাল’ বাঘ ধরতে জোর ব্যবস্থা বনদফতরের
আরও পড়ুন: Bengal BJP: আবারও বিজেপির অন্দরে ‘বিদ্রোহ’! এবার গ্রুপ ‘লেফট’ বাঁকুড়ার চার বিধায়কের