Jadavpur University: ‘ড্রাগ নিতে বলত, না নিলেই শারীরিক নির্যাতন চালাত’, যাদবপুরের ছাত্রীর রহস্যমৃত্যুতে চাঞ্চল্যকর তথ্য
Jadavpur University: পরিবারের দাবি, আত্মঘাতী হওয়ার আগে তাঁর ওপর হওয়া নির্যাতনের ঘটনা তিনি বাড়ির লোককে জানিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের লোকেরা তাঁর কথাতে তেমনভাবে গুরুত্ব দেননি। ভেবেছিলেন সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
মালবাজার: দৃষ্টিহীন বিশেষ ভাবে সক্ষম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে ফের বিতর্কে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। মালবাজারের ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে থাকতেন। পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। তারপর বাড়ি থেকেই ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পরিবারের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই বিস্ফোরক অভিযোগ তোলা হয়েছে। অভিযোগ, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্র ও এক গবেষক (তাঁরাও দৃষ্টিহীন) ছাত্রীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়েছিলেন। আর তার জেরেই আত্মহত্যা করেছেন ছাত্রী। পরিবারের বক্তব্য, থানায় অভিযোগ জানিয়েও হয়নি কোনও লাভ। পুলিশি তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ মৃত ছাত্রীর পরিবারের ।
মালবাজার পৌরসভার বাসিন্দা ছিলেন। পরিবারে বাবা, মা ও ভাই রয়েছেন। বাবা শিলিগুড়িতে এক কোম্পানিতে কর্মরত। পরিবারের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হত তাঁকে। মালবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের। ১৬ জানুয়ারি পরীক্ষা দিয়ে মালবাজার ফিরে আসেন, তারপর মামা বাড়িতে উঠেন।
১৮ই জানুয়ারি মামাবাড়ির বারান্দার গিড়িলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন ছাত্রী।এ বিষয়ে মালবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ জানায় পরিবার। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশের তরফে সেভাবে তদন্ত করা হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। পরিবারের দাবি পুলিশের তরফ থেকে শুধু বলা হয়েছে, ‘ডাকা হবে, জবানবন্দি নেওয়া হবে।’ কিন্তু কোনটি এখনও পর্যন্ত করেনি পুলিশ।
এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরেও তাঁদের তরফেও পরিবারের সঙ্গে আর কথা বলা হয়নি এমনটাই দাবি তাঁদের। পরিবারের দাবি, যাতে অভিযুক্ত ছাত্র এবং শিক্ষকের বিরুদ্ধে করা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তাঁদের জন্যই মৃত্যু হয়েছে ছাত্রীর।
পরিবারের দাবি, আত্মঘাতী হওয়ার আগে তাঁর ওপর হওয়া নির্যাতনের ঘটনা তিনি বাড়ির লোককে জানিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের লোকেরা তাঁর কথাতে তেমনভাবে গুরুত্ব দেননি। ভেবেছিলেন সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। কিন্তু আসলে তা হয়নি আর তার জন্যই চরম পরিণতি হল।
মৃত ছাত্রীর মা জানান, মূল অভিযুক্তর সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল মেয়ের। যেমন বিশ্ববিদ্যালয় একটা ছেলে আর মেয়ের মধ্যে সম্পর্ক থাকে তেমনি। তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই মেয়েকে ব্ল্যাকমেল শুরু করেন অভিযুক্ত। টাকা দাবি করতে থাকেন। অভিযোগ, শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি মানসিক নির্যাতন করতেন বলেও অভিযোগ। তাঁকে ড্রাগ দেওয়ারও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। যার কারণে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যা পথ বেছে নিয়েছেন বলে দাবি ছাত্রীর। থানায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে দাবি ছাত্রীর মা।
এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী সপ্তাহেই বৈঠক ডাকা হবে। এই নিয়ে আলোচনা করা হবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুর বক্তব্য, “আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তবে এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কতটা কী করার আছে, তা বলতে পারব না। যেহেতু যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা ছাত্রীর বাড়িতেই ঘটেছে। ”