জলপাইগুড়ি: এবার অজানা প্রাণীর কান্নার শব্দে নতুন করে ভালুকের আতঙ্ক ছড়িয়েছে জলপাইগুড়িতে। ঘটনাটি ঘটেছে পাতকাটা গ্রামপঞ্চায়েতের ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগান সংলগ্ন দাঁড়িয়াপাড়া এলাকায়। আতঙ্ক কাটাতে বুধবার রাতে পরিবেশ কর্মী ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপস্থিতিতে হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এলাকায় তল্লাশি চালালেন গ্রামবাসীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার সন্ধ্যায় ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে একটি কালো লোমশ প্রাণীকে দেখে চা বাগানের চারজন চৌকিদার। এরপর থেকে ভালুকের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চা বাগান সংলগ্ন এলাকায়। খবর পেয়ে আসে বনদফতর ও পুলিশ। আসেন পরিবেশ কর্মীরাও। এরপর ড্রোন দিয়ে তল্লাশি করেও কিছু পাওয়া যায়নি।
এরপর গত মঙ্গলবার থেকে বুধবার রাত পর্যন্ত বেশ কয়েক দফায় ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগান সংলগ্ন দাঁড়িয়াপাড়া এলাকায় একটি অজানা প্রাণীর কান্নার শব্দ শুনতে পান গ্রামবাসীরা। আর এতেই নতুন করে ভালুকের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গ্রামে।
বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীরা স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশান্ত রায়ের কাছে বিষয়টি জানালে, তিনি বুধবার রাতে স্থানীয় গ্রামবাসীদের নিয়ে পরিবেশ কর্মী স্বরূপ মন্ডলের সহযোগিতায় এলাকায় তল্লাশিতে চালান। কিন্তু অনেক খোঁজাখুজি করেও কিছু পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা রঞ্জন দাস বলেন, “আমি বেশ কয়েকবার কান্নার শব্দ পেয়েছি। আমরা খুব আতঙ্কিত। যখন ওই আওয়াজটা আসছে, বুক কেঁপে উঠছে। শীতের রাতে আওয়াজটা আরও বেশি প্রকট।”
ঘটনায় স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশান্ত রায় বলেন, “কান্নার শব্দ শুনে ভালুকের আতঙ্কে এলাকার মানুষ ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। আমাকে বেশ কয়েকটি পরিবারের থেকে কান্নার আওয়াজের বিষয়টি জানাই। তাই এলাকায় তল্লাশি শুরু করলাম।”
ঘটনায় পরিবেশ কর্মী স্বরূপ মন্ডল বলেন, “লোকালয়ে ভালুক চলে এসেছে। আমরা চাই ভালুকের হানায় কারোও যাতে ক্ষতি না হয়। একই সঙ্গে ভালুকটি যাতে কোনও ক্ষতি না হয় সেটাও চাই। তাই আমরা এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছি। পাশাপাশি মানুষকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ায় অনুরোধ রাখছি।”
শেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে এলাকাবাসীদের আতঙ্ক কাটাতে দাড়িয়া পাড়া গ্রাম ও সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশী শুরু করেছে বনদপ্তরের বেলাকোবা রেঞ্জের বনকর্মীরা। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমি পৌনে ছটার সময়ে এদিকে আসছিলাম। এখানে একটা কালো মতো কিছু একটা জঙ্গলের মধ্যে চলে যেতে দেখা গেল। আমরা দূর থেকে ওতটা বুঝতে পারিনি। আবার ঘুরে জন্তুটা এদিকেই চলে এল। দেখে আমার ভালুকই মনে হয়েছে। আমরাই সাইকেল ঘুরিয়ে অন্য দিকে চলে গেল।”
বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “খবর আছে চার জন কর্মী এখানে ভালুক দেখেছেন। যেহেতু চার জন শ্রমিক দেখেছেন, তাই ব্যাপারটা উড়িয়ে দেওয়ার নয়। তাই আমরা তল্লাশি চালাচ্ছি। তবে একটাই অনুরোধ কোনও শ্রমিক যেন বন্য প্রাণীর কোনওরকম ক্ষতি না করেন।”