মানবতাই শ্রেষ্ঠ ধর্ম, এই অতিমারিতেও লাগাতার সংক্রমিত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে সে পাঠই পড়াচ্ছেন ‘পদ্মশ্রী’ করিমুল
ডুয়ার্সের ক্রান্তি এলাকায় একটি পরিবারের তিন সদস্য করোনায় (COVID-19) আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত সবাইকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
জলপাইগুড়ি: একই পরিবারে তিন সদস্যের করোনা (COVID-19)। আক্রান্তরা হাসপাতালে। শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে রয়েছেন একা গৃহবধূ। খবর পেয়ে নিজেই গিয়ে আক্রান্তদের বাড়ি স্যানিটাইজ করলেন পদ্মশ্রী করিমুল হক। দিলেন পাশে থাকার আশ্বাসও।
ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসায় দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গও উত্তপ্ত। কী ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায় তা নিয়ে বৃহস্পতিবার ধূপগুড়িতে একটি বৈঠক ছিল। সেখানে জেলার গুণীজনদের ডাকা হয়। আমন্ত্রিত ছিলেন পদ্মশ্রী করিমুল হকও। সেখানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরইমধ্যে খবর আসে ডুয়ার্সের ক্রান্তি এলাকায় একটি পরিবারের তিন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত সবাইকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই বাড়িতে একটি ছোট বাচ্চা রয়েছে। তাঁকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় গৃহবধূর। তিনিও সম্প্রতি করোনা জয়ী হয়েছেন।
এই খবর শুনে তৎক্ষনাৎ সিদ্ধান্ত বদল করেন এলাকার ‘বাইক অ্যাম্বুলেন্স দাদা’ করিমুল। বৈঠকে যেতে না পারায় একটি ভিডিয়ো বার্তা দিয়ে পিপিই কিট পরে পিঠে স্যানিটাইজারের জ্যারিক্যান নিয়ে ছুটে যান ক্রান্তিতে। আক্রান্তদের বাড়ি স্যানিটাইজ করার পাশাপাশি বাড়ির ওই বধূর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন। সবরকম মানসিক চাপকে দূরে ঠেলে যাতে পরিস্থিতি সামালান, সে পরামর্শও দেন।
এরপরই সেখান থেকে চলে যান ক্রান্তি পুলিশ ফাঁড়িতে। যেহেতু পুলিশ কর্মীরা করোনা পরিস্থিতিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন, তাই তিনি নিজের উদ্যোগে গোটা পুলিশ ফাঁড়িও স্যানিটাইজ করে দেন। এদিকে আচমকা এ দৃশ্য দেখে তো থতমত খেয়ে যান পুলিশ কর্মীরা।
পদ্মশ্রী করিমুল হক বলেন, “দেশ এখন মহামারীতে আক্রান্ত। আর এই সময় একদল মানুষ রাজনৈতিক হানাহানি করে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাই আমি করজোড়ে অনুরোধ করছি হানাহানি ভুলে সবাই মিলে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামুন। আসুন আমরা আমাদের সমাজকে সুস্থ করে তুলি।”